[justify]ঘড়িতে প্রায় সন্ধ্যা ছয়টা। বিয়ারে চুমুক দিতে দিতে সুইমিং পুলের ধারে আয়েস করে বসে সন্ধ্যা নামা দেখার আদর্শ সময়।
সারাদিন হোটেল রুমে বসে থাকতে থাকতে বিরক্ত হয়ে গেছিলাম, বার থেকে এক ক্যান বিয়ার হাতে নিয়ে বাগানে প্রবেশ করতেই সন্ধ্যার গোধুলি আলোতে পাম গাছের সারি এলোমেলো করে বয়ে যাওয়া মিষ্টি বাতাসে মনটা জুড়িয়ে গেল।
বাগানটা দারুন, দুই ধারের লন জুড়ে সার বেধে ফুলের বাগান আর মাঝ দিয়ে দিয়ে বড় বড় নারিকেল গাছ আর পাম গাছের সারি, পিছনে আকাশ তখন শেষ সূর্যের আলোতে রক্তিম বর্ণ ধারন করেছে, সমুদ্রের তীর থেকে ধেয়ে আসা বাতাসে এমনভাবে নারিকেল আর পামের সারি দুলছে মনে হচ্ছে যেন আকাশে আগুন দেখে গাছগুলো পালানোর চেষ্টায় হুটোপুটি লাগিয়েছে।
ঢাকা থেকে ছাড়া সকাল দশটার একতা এক্সপ্রেস পথে পাক্কা আড়াই ঘণ্টা দেরি করায় পার্বতীপুর স্টেশনে পৌঁছাতে আকাশের রাত প্রায় ন’টা বাজলো। স্টেশনের উল্টোদিকের বাড়িগুলোর উপরে তখন রাতের তারাভরা স্বচ্ছ আকাশে চাঁদটা কেবল উঁকি মারছে। কুয়াশা না থাকলেও হিম হাওয়া বরফের ব্লেডের মতোন গাল চিরে যাচ্ছিলো।
“আচ্ছা, কাছেপিঠে কোন সুলভ হোটেল হবে কিনা জানেন নাকি ভাই?”, কুলিকে জিজ্ঞেস করে আকাশ।
“নিদ্রাকুসুম ইন-এ দেখতে পারেন।” রাস্তার মাথার দিকে ইঙিত করে লোকটা, “এই এক কিলোমিটার সামনে গিয়ে ডাইনে।“
ধন্যবাদ দিয়ে নিজের ট্রাভেল ব্যাগটা নিয়ে হাঁটা দেয় আকাশ। আগে এদিকে আসেনি কখনো, এখানে কাওকে চেনেও না। হেড অফিসের মজিবর সাহেব বলেছিলেন শহরটা দারুণ। “নিজের থাকার ব্যবস্থা নিজে করে নিবা বুঝলা? তারপর সোজা গিয়ে ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের সাথে দেখা করবা।“
তোমাদেরকে একটা মজার ঘটনার কথা বলবো আজকে। কালকে সন্ধ্যায় আমার আর মায়ের সাথে কী হয়েছিল সেই গল্প। আমার বয়স বারো, আর আমি মেয়ে। আমার মায়ের বয়স চৌত্রিশ হলেও আমি কিন্তু এখনই প্রায় মায়ের সমান লম্বা।
কালকে বিকেলে মা আমাকে লন্ডনে নিয়ে গিয়েছিল ডেন্টিস্টের কাছে। ডেন্টিস্ট আমার পেছনের দাঁতে ফুটো খুঁজে বের করলো, বেশি ব্যথা না দিয়ে ফুটো ফিল-আপও করে দিলো। তারপর আমি আর মা গেলাম একটা ক্যাফেতে, আমি নিলাম একটা বানানা-স্প্লিট, আর মা নিলো কফি। আমরা যখন যাবার জন্যে উঠলাম তখন প্রায় ছ’টা বাজে, এদিকে ক্যাফে থেকে বেরুতেই শুরু হলো বৃষ্টি।