১.
আমি নিরপেক্ষ মানুষ না। আওয়ামী লীগ দুর্নীতি বাটপারি করেছে বলে বিএনপিকে ভোট দিয়ে জামাতকে ক্ষমতায় আনবো না। বরং ভোটদানে বিরত থাকবো। কিন্তু জব্বার সাহেব দোদুল্যমান (তাঁর ভাষায় নিরপেক্ষ মানুষ)। গতবার নৌকায় ভোট দিলেও তিনি এবার বিএনপিকে ভোট দেবার নিয়ত করেছেন। টেক্সিতে যাচ্ছিলেন দোকানে। দোকানের কাছের মোড়ে এসে অবরোধের কবলে পড়ে হঠাৎ ছুঁড়ে দেয়া বোমায় টেক্সিসহ আপাদমস্তক ঝলসে যান তিনি। ঝলসানো শরীরে জব্বার সাহেব বুঝতে পারলেন যারা গণতন্ত্রের নামে আন্দোলন করছে, যারা তাঁর কাছে ভোট ভিক্ষা করবে কয়েকদিন পর, তারা আসলে তাঁর কথা ভাবছে না। তাদের চোখে অন্য স্বপ্ন, অন্য জিঘাংসা। তিনি বাধ্য হলেন তার ভোট দেবার নিয়ত বদলে ফেলতে।
সংবিধানে মহান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃস্থাপন ও মহানবী হজরত মুহাম্মদ সা:-এর শানে কটূক্তিকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রেখে আইন পাসসহ ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। গতকাল ২৪শে নভেম্বর সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদরাসায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মঈনুদ্দিন রুহী। সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি আদায়ের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেন হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব হাফেজ আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।
এই কর্মসূচী দিতে গিয়ে হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে এর প্রেক্ষাপট বা কারণ ব্যাখ্যা করা হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে কতোটা সত্য, কতোটা মিথ্যা এবং কতোটাই বা অতিরঞ্জন?
প্রথম আলো অদ্ভুদ। আরো অদ্ভুদ তাদের পাকিরাও ভালো প্রজেক্ট।
আনপড় পাঠকেরা এই প্রজেক্ট সম্পর্কে না জানতে পারেন। তাদের জন্য একটা ছোট্ট সূচনা।
পাকিরাও ভালো প্রজেক্ট প্রথম আলো ঘোষিত অফিসিয়াল কোন প্রজেক্ট নয়। সবকিছু নিয়ে প্রশ্ন তোলা ব্লগজগত থেকে এইরকম প্রজেক্ট বাস্তবে আছে এরকম অনুমানের সূচনা। প্রথমআলো গ্রুপ নিয়মিত বিরতিতে পাকিস্তান থেকে বুদ্ধিজীবী ভাড়া করে আনে। এরা হাবিজাবি মিশিয়ে পাকিস্তানের হাতেগোনা কিছু লোকের বাংলাদেশ সম্পর্কে ভালোমন্দ কথা বলে এরকম লোকেদের হাজির করে। নিয়মিত এরকম পাকিস্তানি ভালো লোক মিডিয়াতে হাজির হলে, এবং সেইসাথে সেখানকার লোকেদের একাত্তর প্রশ্নে অবস্থান চেপে গেলে জনমানসে সব পাকিস্তানি আসলে খারাপ না এরকম একটা ধারণা প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য হয়। পুনর্মিত্রতার এই প্রজেক্ট বেশ কিছুদিন ধরে চলছে।
অথচ ব্লগিংটাই করতে চেয়েছিলাম।
“রাজনীতিবিদদের জন্য জটিল করে যাব রাজনীতি” বলে ছিলেন মেজর জিয়া। কিন্তু তা পূর্ন বাস্তবে পরিণত করে দেখিয়েছে এরশাদ। “মুক্তিযোদ্ধারা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান”। নীচে লেখা ছিল হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ। এই ধরণের ব্যানারে সাজানো ছিল রাজধানী ঢাকার পথ-ঘাট। ঠিক একই সময়ে অনেক সময় এরশাদের ব্যানারের নীচেই ঝুলত; মেজর ফারুক- রশিদের ফ্রিডম পার্টির বক্তব্য; “ শেখ মুজিবকে হত্যা করে দেশ স্বাধীন করেছি ১৫ই আগস্ট ১৯৭৫।
জামাতি বুদ্ধিজীবি ফরহাদ মজহার সম্প্রতি এক টকশোতে মিডিয়ার ওপর এক হাত নিয়েছেন। এক হাত নেবার পর সেটা আবার পরে রেটোরিক ইত্যাদির চাপানউতোর দেবারও চেষ্টা করেছেন। স্বাভাবিকভাবেই ফরহাদ মজহারের বক্তব্যের প্রতিবাদ হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। বিপরীতে ফরহাদ মজহারকে সমর্থন দেবার জন্য জামাত/বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবিরা একাট্টা হয়েছেন। সাথে আছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এক উপদেষ্টা। চলুন দেখা যাক কারা কোন পক্ষে কাজ করছেন।
আকারে ছোট অর্থনীতি ও তুলনামূলকভাবে প্রভাবহীন দেশগুলোর একটা সমস্যা হলো এদের সবসময় প্রতিবেশী দেশ ও বিশ্বরাজনীতির মোড়লদের কথা হাসিমুখে শুনতে হয় হয়। বাংলাদেশও এরকম একটা একটা দেশ। আমরা বহুকিছুর জন্য বাইরের শক্তির কাছে নির্ভরশীল। বাংলাদেশে প্রভাব রাখে এরকম প্রতিবেশি দেশ হলো ভারত। ভারত পার হয়ে পাকিস্তান বীর্যসূত্রে দেশি কিছু দালালের ওপর প্রভাব রাখে। পাকিস্তানের ভাইবেরাদর মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েত সৌদি আরব বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভূমিকা রাখে। এদের বাইরে আছে স্যামকাগু অর্থাৎ বিশ্বমোড়ল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
বাংলাদেশে একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন। ২০০৮ সালে নির্বাচিত সরকারের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছর ২৪ শে জানুয়ারীতে। নির্বাচন কালীন সরকার ব্যাবস্থা কেমন হবে তা এখনও নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে নির্বাচন কালীন সরকার কেমন হওয়া উচিৎ সে ব্যাপারে মতভেদ আছে। বাংলাদেশের বর্তমান সরকার বলছে তারা সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিচালনা করবে এবং নির্বাচনের সময় দেশ পরিচালনার জন্য একটি সর্ব দলীয় সরকারের রূপ্রেখা প্রস্তাব করেছে। অন্যদিকে প্রধান বিরোধীদল বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ জোট বলছে আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনের প্রশ্নই আসে না, এমনকি সর্বদোলীয় সরকারের অধীনেও তারা নির্বাচনে যাবে না কারণ ৯৫ থেকে ৯৯ ভাগ জনগন মনে করে বর্তমান সরকারের লোক জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী পদ মর্যাদায় থাকলে ভোট চুরি করবে আর তাই এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তার ফলাফল যে শুধু জনগন মেনে নিবে না তা নয়, নির্বাচনই প্রত্যাখ্যান করবে। সরকার বা বিরোধীদল তাদের দৃষ্টি কোন থেকে নানান কিছু বলতেই পারে। কিন্তু আসলে জনগন কি বলছে বা ভাবছে?
গত দুই দিন ধরে বাজার গরম দুই নেত্রীর ফোনালাপ নিয়ে। এক সময় পাশে বসে ছবি তুলেছেন, রাজপথে এক সাথে আন্দোলন করেছেন, কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে মিলিটারির ধমক কিংবা বিদেশি শক্তির দাওয়াত ছাড়া কোথাও তাঁদের আলাপ হয়নি। যেটুকু মিথষ্ক্রিয়া হয়েছে, সেটাও হয়েছে মেঠো ভাষণ কিংবা সাংবাদিক সম্মেলনে পূর্বলিখিত বক্তৃতার মাধ্যমে। এই প্রেক্ষাপট বিচারে দীর্ঘ ৩৭ মিনিট ধরে তাঁদের সরাসরি আলাপ তাক লাগানোর মতো ব্যাপার।
তার চাইতেও তাক লাগানোর মতো ব্যাপার হলো দেশবাসীর সেই বক্তব্য শুনতে পাওয়ার সৌভাগ্য হওয়া। যারা এই সুযোগ (?) থেকে বঞ্চিত আছেন, তাদের জন্য রইলো রেকর্ডিং-এর লিংক। জীবন থেকে ৩৭ মিনিট অহেতুক ঝড়ে গেলে আমি দায়ী নই।