এই বিশাল জীব-বৈচিত্র্য দেখে যখন আমরা খোদার কেরামতির উপর ভক্তিতে গদগদ হয়ে যাই, তখন আজাইরা জীববিজ্ঞানীরা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেন, বাছা! কুয়ার ব্যাঙের মতো ফাল পাইরো না। একটু শোনো। তারা শোনাতে চান, সাড়ে তিনশ কোটি বছর আগে প্রাণের উৎপত্তির সূচনা থেকে আজ অবধি প্রকৃতিতে উদ্ভব হওয়া ৯০ থেকে ৯৫ ভাগ প্রাণী পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে না পেরে বিকাশের সাথে সাথেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। টিকে আছে দশভাগেরও কম। ভিন্ন প্রজাতির কথা বাদ দেই। নির্দিষ্ট একটি প্রজাতির দিকে তাকালেও ঠিক একই ঘটনা আমাদের চোখে পড়ে। আপনার নিকটবর্তী আম গাছে লক্ষাধিক মুকুল থেকে কয়টি আম ধরে? দশভাগ বললে তো বোধ হয় বেশি হয়ে যাবে। খোদা সবকিছুতে সর্বশক্তিমান হলেও সৃষ্টিতে তাঁর হাত কাঁপে। ‘ট্রায়াল অ্যান্ড এরর' এর মাধ্যমে একটি ভালো প্রজাতির উদ্ভব ঘটানোর জন্য তিনি বিনা গ্লানিতে হত্যা করেন অসংখ্য।
গেরিলা একটি যুদ্ধ বিষয়ক বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র
গেরিলা দেখে মিশ্র প্রতিক্রিয়া হল। জানা ছিল এটি মুক্তিযুদ্ধের ছবি এবং নির্মাণ করেছেন একজন মুক্তিযোদ্ধা যিনি বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গনের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিত্ব। তাঁর সহায়তায় ছিলেন বর্তমানের কয়েকজন তরুণ নির্মাতা যাদেরকে হরদম মিডিয়ায় বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ভবিষ্যত কর্ণধার বিবেচনা করা হচ্ছে। তাই ছবিটি নিয়ে জল্পনা কল্পনা ছিল, ছিল প্রবল আগ্রহ। আরেকটি বিষয় উল্লেখ্য যে এই ছবিটি বেশ বড় বাজেটে নির্মিত; এর কলাকুশলী বেশ দক্ষ ও সৃজনশীল হিসেবে পরিচিত। এরকম বিশদ কলেবরে বাংলাদেশে এর আগে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক চলচ্চিত্র নির্মাণ হয় নাই।
শুরুতে দুটো ফেসবুক স্ট্যাটাস তুলে দিলাম, আলোচনার সঙ্গে যা প্রাসঙ্গিক। সেই সঙ্গে একটি স্ট্যাটাসের নিচে করা আমার মন্তব্য, যা অপর স্ট্যাটাসটির প্রতিক্রিয়া হিসেবে এসেছিল।
১. ফাহমিদুল হক/১৩ এপ্রিল: 'মেহেরজান'বিরোধীরা দলে দলে 'আমার বন্ধু রাশেদ' আর 'গেরিলা' দেখছেন তো?
গেরিলা দেখে এলাম।
১লা বৈশাখের দিনে এমনিতেই আমার কাজের অভাব, তার উপর সাড়া রাস্তায় ভিড়।
সকালটা টিএসসিতে চলে গেল। আসলে সকাল বলাটা ভুল, ১১ টায় আর সকাল কই?পরের কয়েক ঘন্টা মধু, হাকিম আর শ্যাডোতে চক্করে।
১.
দিনটা ছিল বোশেখের এক রৌদ্রতপ্ত দুপুর, এখনো স্পষ্ট মনে পড়ে। খাওয়ার সময় দুদন্ড জিরিয়ে নেওয়ার আগে আলগোছে হাতে তুলে নিয়েছিলাম বইটি। এরপরের ঘন্টাখানেক আমি আক্ষরিক অর্থেই বুঁদ হয়ে ছিলাম, মুহুর্তের জন্যও চোখ সরাইনি(বা বলা ভাল সরাতে পারিনি) বইয়ের পাতা থেকে । চোখের কোনায় পানি চকচক করেছিল কিনা মনে নেই, তবে পড়া শেষে ভেতরটা ভীষণরকম কুঁকড়ে গিয়েছিল, সেটা দিব্যি দিয়েই বলা যায়। রাশেদের সাথে আমার পয়লা মোলাকাত হল এভাবেই, আর প্রিয় লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবালের আমার বন্ধু রাশেদ চলে গেল প্রিয় বইগুলোর ছোট্ট তালিকার কাতারে।
যাই হোক এই লেখার আসল উদ্দেশ্যে আসি। এখানে আপনাদের একটা অসম্ভব সহজ বুদ্ধি শিখাবো। কিভাবে সহজে আপনার বন্ধুকে বোকা বানাতে পারেন এই দিনে
১।
এই মুভিটি যতো দেখি, ততোই ভালো লাগে। ছোটকালে ভাবতাম, বড় হয়ে নিই, জ্ঞানবুদ্ধি বাড়ুক, তখন নিশ্চয়ই এইসব 'বাংলা সিনেমা' আর ভাল্লাগবেনা। বড় হয়েছি। বুদ্ধিশুদ্ধি নিশ্চয়ই হয়নি। হলে কী আর প্রতি বছর ফেব্রুয়ারী-মার্চের আশেপাশে চ্যানেলগুলোতে যখন এই মুভিটি দেখি, তখন 'কী একটা' যেন চুম্বকের মত টেনে রাখে আমাকে। আগেও রাখতো। সেটা ছিলো শৈশবের নিখাদ ভালোলাগা। একটা পরিবারের গল্প কীভাবে এগিয়ে গেছে পরিণতির দিকে, দেখে ভালো লাগতো।
প্রকাশক জর্জ পাটনাম একজন বৈমানিকের আটলান্টিক অতিক্রমের অভিজ্ঞতার আলোকে লেখা বই প্রকাশ করবেন। যেহেতু সমস্ত পৃথিবীর মনোযোগ থাকবে তার দিকে, তাই তাকে হতে হবে আকর্ষনীয় একজন মহিলা, এবং অবশ্যই বৈমানিক। চ্যালেঞ্জ লুফে নেয় অ্যামেলিয়া। কিন্তু বাঁধ সাধে অতীত ইতিহাস, ইতোমধ্যে আটলান্টিক পাড়ি দিতে গিয়ে প্রান হারায় তিন জন মহিলা বৈমানিক। তাই অভিযানে সে স্বয়ং চালকের আসনটি পাবেনা, অভিযানের দায়িত্ব দক্ষ চালক বিল ও
মহাবয়ান(গ্র্যান্ডন্যারেটিভ)গুলার 'রেকর্ড' (ইনভার্টেড কমার মধ্যে দিলাম কারণ সাবঅল্টার্নরা বলে যেগুলারে আমরা রেকর্ড বলি সেগুলিতে ঝামেলা আসে- কথা সত্য) খুব খারাপ। উদাহরণগুলা দেখেন আপনেরা -
- ধর্ম (মধ্যযুগে যা একটা কাণ্ড করলো)
- মার্কসবাদ (কতযে কেমিক্যাল লোচা করসে)
- পুঁজিবাদ
মুক্তির এক সপ্তাহের মধ্যেই পরিবেশক আশীর্বাদ চলচ্চিত্র "মেহেরজান" সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহ থেকে নামিয়ে নেন। তার পর থেকেই পরিচালক এবং তার কলমবাজ বাহিনী শুরু করেছে মিথ্যা সব অপপ্রচার। শিল্পকে শ্বাসরোধ করার ফ্যাসীবাদী ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন কেউ, কেউ প্রতিবাদ করছেন মেহেরজানকে নিষিদ্ধ করার, মানববন্ধন করছেন!