সর্বশেষ ইমনের করা কাজ দেখেছিলাম আমাদের বসার ঘরের টিভিতে, সেটা ছিল আরএময়াইটি-র ফিল্ম কোর্সের জন্যে ওর বানানো একটা শর্ট ফিল্ম। ইমন আর তন্বীর মেলবোর্নে থাকাকালীন একটা বছর আমাদের জন্যে উল্লেখযোগ্য একটা সময় হয়ে থাকবে আজীবন, সেটা নিয়ে লিখেছি আগে এখানেই, নাম ছিল ‘গগন আজ দেশে ফিরছে”। সে দিন সকাল বেলা আমাদের বাসায় বসে দুইজনে ব্যাগ গোছাচ্ছে, আর পাশের ঘরে বসে আমি ভীষণ মন খারাপ করে লিখে চলেছি সেই ব্লগ, অতঃপর রাতে যখন ওদের প্লেনে তুলে দিয়ে আসলাম, মনে আছে তারপরের অনেকগুলো দিন আমার আর তিথি-র চারপাশ জুড়ে ছিল একটা অদ্ভুত শূন্যতা।
সেই প্লেন উড়ে চলে যাবার বছর চারেক বাদেই যে আমি আবু শাহেদ ইমনের পরিচালিত সিনেমা বড় পর্দায় দেখার জন্যে এই মেলবোর্নেরই এক সিনেমা হলের টিকেটের লাইনে দাঁড়াবো, সত্যি বলছি, এই কথা সেদিন ঘুর্নাক্ষরেও ভাবিনি!
নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে যখন আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তখন একদিন টেলিভিশনেই দেখিয়েছিল এই তথ্যচিত্রটি। আমার দেখা হয়নি সেদিন, কিন্তু দেখলাম আমার ডিপার্টমেন্টের এক বন্ধু মেজর খালেদ’স ওয়ার দেখে উচ্ছ্বাস আর উত্তেজনায় চঞ্চল হয়ে উঠেছে। তথ্যচিত্রটির বর্ণনা দিয়ে আমাকে সে বললো, রুমিকে দেখা যায় এই ছবিতে, তার কথাও শোনা যায়। “একাত্তরের দিনগুলি”র রুমিকে দেখতে পাবো, তার কন্ঠও শোনা যাবে এই কথা চিন
জাপানের অ্যানিমেশন বিশ্ববিখ্যাত। তাদের উদ্ভাবিত স্টাইলটি সারা পৃথিবীতে অ্যানিমে নামে পরিচিত। অ্যানিমেগুলো দেখতে হাতে আঁকা ছবির মতই। চরিত্রগুলোর শরীর বাস্তব অনুপাত মেনেই আঁকা হয়, মুখের অভিব্যক্তি কিছু কম থাকে, চোখের আকার বড় এবং চুলের স্টাইল বেশ অদ্ভুত হয়। ডিজনীর মত গতির বিষয়গুলোতে জোর না দিয়ে অ্যানিমে ডিজাইনাররা পুরো ফ্রেমের ডিটেইলে বেশি মনযোগ দেয় এবং ছবির মধ্যে ত্রিমাত্রিক অনুভূতি আনার চেষ্টা করে।
চাষী নজরুল ইসলাম মারা গিয়েছেন। তাঁর জাতীয়তাবাদী দৃষ্টিভংগি আর রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে তিনি অনেকের সমালোচনার যোগ্য হলেও তবে বাংলাদেশের সিনেমা শিল্পের পুরোধা ব্যক্তিদের একজন হিসেবে তিনি অবশ্যই শ্রদ্ধার পাত্র। আবেগের বশে অথবা হুজুগে মাতাল হয়ে অনেকেই চাষী নজরুল ইসলামের 'ওরা ১১ জন' সিনেমাটিকে বাংলাদেশের প্রথম সিনেমা, 'প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সিনেমা' ইত্যাদি বলেছেন দেখলাম। কথাগুলো পুরোপুরি সঠিক মনে কর
৬ বছর বয়সী কেইতা বসে আছে স্কুলে ভর্তি-পরীক্ষার ইন্টারভিউ বোর্ডের সামনে।
প্রশ্ন: তোমার প্রিয় ঋতু কোনটি? কেইতা: গ্রীষ্মকাল প্রশ্ন: গ্রীষ্মের ছুটিতে কি করেছ তুমি? কেইতা: আমি বাবার সাথে ক্যাম্পিংয়ে গিয়ে ঘুড়ি উড়িয়েছি। প্রশ্ন: তোমার বাবা কি ভাল ঘুড়ি উড়াতে জানে? কেইতা: আমার বাবা সবার সেরা।
পাশে বসে থাকা গর্বিত বাবার মুখে ফুটে উঠে আনন্দের হাসি।(ভর্তি পরীক্ষার কোচিংয়ে ভালই মিথ্যে বলতে শিখেছে কেইতা)
টোকিওর বাসিন্দা সফল স্থপতি রিয়োতা(Ryota) পিতা হিসেবে কিন্তু অতটা খারাপ মানুষ না। পরিবারের সব অধিগম্য চাহিদাই তো মিটিয়ে এসেছে সবসময়। ক্যাম্পিংয়ে গিয়ে ছেলের সাথে ঘুড়ি উড়ানোর মত সময় তাঁর নেই কিন্তু ক্যারিয়ারের এই সুবর্ণ সময়ে সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে তরতর করে উঠতে হলে অন্য বিষয়াদিতে এক-আধটু ছাড় তো দিতেই হবে। আজকের সিনেমা সেই রিয়োতার একটি বিশেষ ‘ছাড়’ দেবার গল্প যেখানে পিতৃত্বের দাবি আর রক্তের সম্পর্কের দোটানায় একজন সফল পিতা কি সে হতে পারবে?
[justify]একটি সামান্য পর্যবেক্ষণঃ
ভারতীয় বাংলা সিনেমার মধ্যে একটা নতুনত্বের ছোঁয়া লেগেছে, এটা হয়তো অনেকেই লক্ষ্য করেছেন। কিন্তু কাল একটা বিশেষ জিনিস লক্ষ্য করলাম - ওরা ওদের কিংবদন্তীদেরকে সম্মান জানাতে আরম্ভ করেছে।
অনেকেই আমাকে জিজ্ঞেস করে “একটা ভাল মুভির নাম বলতো, উইকেন্ডে দেখব”। জবাবটা ভেবেচিন্তে দিতে হয়, সব মুভি সবার জন্য নয়। আজকের মুভিটা অনেক বছর ধরেই আমার পছন্দের তালিকার শীর্ষে থাকা সত্ত্বেও কারও সাথে শেয়ার করি না। দেখার পর কেউ যদি নীরস বদনে শুধু বলে “হ্যাঁ, ভালই তো….” এতেই আমার মন খারাপ হয়ে যাবে। কারণ এই সিনেমার প্রতিটি সংলাপ, প্রতিটি দৃশ্যের চিত্রায়ন আর অভিনয় শিল্পীদের পারদর্শিতা এককথায় অতুলনীয়। অনেকদিন বিরতির পর যখন আবার সিরিজটা শুরুই করলাম তো ভাল কিছু দিয়েই সূচনা হোক। নানান দেশের হরেক টাইপের আরও অনেক ভাল ফিল্ম দেখেছি গত পাঁচ বছরে কিন্তু শীর্ষস্থান অটুট রেখেছে আজকের আয়োজনের এই ইসরায়েলি সিনেমা ‘লেমন ট্রি’।
‘শুনতে কি পাও’ দেখলাম। একেবারেই আমাদের কাদামাটির চলচ্চিত্র। আমাদের কতশত সমস্যা আছে। দুর্যোগ এসে বারবার হানা দেয় তবুও জীবন থেকে প্রাণশক্তি টলাতে পারেনা। বিপত্তি আসে, বিচিত্রতা আসে ঘুরে দাঁড়াবার প্রত্যয় আর রসবোধ অমলিন থেকে যায়। ‘Beasts of the Southern Wild’ এর মতো সিনেমার কালে পৃথিবীর এই অংশের মানুষের জীবনসংগ্রামকে প্রতিনিধিত্ব করবার জন্যে এই প্রামাণ্যচিত্রের চেয়ে যোগ্যতর উপস্থাপন আর কী হতে পারতো!