গতকাল রাতে রকমারিতে বিভিন্ন লেখকদের বইয়ের তালিকা ঘাঁটছিলাম আর ঠিক করছিলাম যে কী কী বই কেনা যায় বইমেলা থেকে। কিন্তু লেখক বাছাই করতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছিলাম কারণ বাংলাদেশে আমার প্রিয় লেখকদের তালিকাটা খুব বেশী বড় না। আর তাঁদের বই আগেই কেনা হয়ে গেছে। হঠাৎ মনে এল একজনের নাম। তার একটা বই আমি বড় ভাইকে দিয়ে কিনিয়েছিলাম বইমেলা থেকে বছর ছয়েক আগে। বইয়ের নাম “বিবর্তনের পথ ধরে”। লেখিকার নাম বন্যা আহমেদ। বাং
মুক্তমনা অভিজিৎ রায়কে হত্যা করা হয়েছে। চিন্তার চর্চাকারীদের সকলেই এখন অনেকটা বিহ্বল, আমারই মতন। এটাই স্বাভাবিক। আমরা এখন বিচারের দাবি করছি, করতেই থাকবো। হুমায়ুন আজাদ স্যার, অভিজিৎ রায়, রাজিব হায়দার, অধ্যাপক ইউনুসসহ সকল হত্যার বিচার আমরা চাইবো। চাইতেই থাকবো। আমরা শোক করবো, স্মরণ করবো। কিন্তু একইসাথে আমাদের খুঁজে বের করতে হবে, এইসব হত্যাকা-ের কারণ, প্রকরণ এবং আমাদের করণীয় সম্পর্কে।
কাছের মানুষের সস্তা ধর্মানুভূতির কথা মাথায় রেখে কিংবা স্বার্থপরের মত নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে লেখালেখি করা মানুষগুলোর অধিকাংশই ছদ্মনামে বা বেনামে লেখালেখি করে । ধর্মান্ধ মৌলবাদীদের ধারালো চাপাতি তাই খুজে পায় অভিজিৎ রায়ের মত মুখচেনা মানুষগুলোকেই । কারণ ? কারণ ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে লেখালেখি করা হাজারো পরিচয়হীন ব্লগারের ভিড়ে অভিজিৎ রায়দের খুব সহজেই আলাদা করে ফেলা যায় বলেই । আমার মত মেরুদণ্ডহীন বেনামী ব্লগার চাপা চিৎকার করে যাই । গুমরে কাঁদি । মৌলবাদীদের ভয়ে ছদ্মনামের আড়ালে লুকিয়ে বৃথা আস্ফালন করে যাই । কারো টনক নড়ে না । কারণ আমাদের পরিচয় নেই । আমাদের ছদ্মনাম হালনাগাদ করা নেই ভোটার তালিকায় । আমাদের নেই কোন সংগঠন । রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আমাদের যৌক্তিক দাবীও তাই বেনামী নাস্তিক ব্লগারের প্রলাপ । অভিজিৎ রায়ের আদর্শ ( মুক্তচিন্তা এবং প্রগতিশীল চিন্তা ) বুকে নিয়ে আমরা গোপনে এক প্রগতিশীল বাংলাদেশের স্বপ্ন লালন করে যাই । অথচ আমাদের চেনা গণ্ডীর মানুষের কাছে সে আদর্শ থেকে যায় অজানা, কোন এক নাস্তিকের আদর্শ হিসেবে । অভিজিৎ রায়ের মত প্রগতিশীল মানুষ তাদের মনের কোন এক কোনে জায়গা পায় ধর্মানভূতিতে আঘাত দেয়া এক নাস্তিক ব্লগার পরিচয়ে ।
জানি, নিশ্চিত করেই জানি এখানেই থেমে যাবে সবকিছু। কিচ্ছু হবে না। কিচ্ছু হয়না এখানে। এই অন্ধকারে, বদ্ধ আবহে নিঃশ্বাস নেওয়ার মতো অবশিষ্ট থাকবে না আর কোনো বিশুদ্ধ বাতাস। প্রতিবার কিছু বোকা মানুষ তড়পাবে, কাঁদবে, মুষ্টবিদ্ধ হাত উপরে তুলে প্রতিবাদ করবে... তারপর সেই যুথবদ্ধ কণ্ঠের মাঝ থেকে সবচেয়ে তীব্র কণ্ঠটাকেই নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে।
আমার ধারনা আমাদের মধ্যে বেশির ভাগেরই জাতিস্মর শব্দটির সাথে প্রথম পরিচয় বাংলা ব্যকরণ পড়তে গিয়ে। স্কুল জীবনে এক কথায় প্রকাশ বলে একটি জিনিস ছিল এবং সেখানে "পূর্ব জন্মের কথা স্মরণ করতে পারে যে- জাতিস্মর" খুবই নিয়মিত ছিল ,পরীক্ষায় আমার অন্তত প্রায়ই "কমন" পড়ত। কিন্তু আমার আবার পড়ার বইয়ের চেয়ে গল্পের বইয়ে বেশি ঝোঁক ছিল, আমি এ শব্দের মানে প্রথম জেনেছিলাম তাই গল্পের বই থেকেই। আমার মত যারা ছোটবেলায় সত্যজিৎ
প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে রচিত ভিনদেশী এই গল্পগুলি স্থান-কালের সীমানা পেরিয়ে আজো আমাদের চেনা জগতের কথা বলে যায়।
এই যে আমাদের কথা হচ্ছে না। তুমি ভেবে নিও না, তুমি নেই!
রিকশার উপরে সরু সিটটার উপরে উঠে বসেছো কখনো? কিংবা এক কাত হয়ে অনেকক্ষন ঘুমানোর পরে অবশ হাতটা?
সচলায়তনে সুবোধ অবোধ নামের আড়ালে লেখে রাব্বি নামের ছেলেটা। সেই সাথে একটা ব্যান্ডের সাথে গিটারিস্ট হিসেবে গিটার বাজায়। গত ডিসেম্বর বাংলাদেশ যাবার পর দেখা করবে জানালো। ঢাকার বাইরের এক হাসপাতালে ফিজিওথেরাপিস্ট হিসেবে রোগী দেখে ফেরার পথে একদিন আমার বাসার কাছে চলে আসলো। একটা খাবার দোকানে বসে ওদের নতুন গান গুলো শোনালো। ওদের তিনটে গান আগেই শোনা ছিলো। আরো কিছু নতুন গান শুনলাম সেদিন। ওদের গানগুলোর ভক্ত আমি শুরু থেকেই।
প্রিয়.কমের একটি খবরে দেখলাম এ.টি.
স্কুল পাশ দেওয়ার আগেই ভাগ্যক্রমে আমার হাতে এসেছিলো বাংলাদেশের অন্যতম আলোকিত মানুষ আরজ আলী মাতুব্বরের বই। উনিই প্রথম শিখিয়েছেন কোন বিশ্বাসকে বিনা প্রশ্নে মেনে না নিতে। তারও কিছুদিন পর পরিচয় হলো হুমায়ুন আজাদ নামের এক ভাষার যাদুকরের সাথে। প্রথা আর মুখোশে ঢেকে থাকা সমাজের সব প্রাচীরকে যিনি ভেঙে দিয়েছিলেন তার লেখা অদ্ভুত সুন্দর সব শব্দমালায়, জাগিয়ে দিয়েছিলেন মনের মাঝে সততা আর সাহসের বিস্তীর্ণ এক পাহাড়।