আবারো ফেব্রুয়ারি মাস, আবারো বইবই গন্ধ। বইপাগলদের তীর্থস্থান বইমেলার মৌসুম। বইমেলা শব্দটি শুনলেই মনের ভিতর কেমন একটা শিহরণ বয়ে যায়। নতুন বইয়ের গন্ধ, স্বাদ পাওয়ার জন্য মন উৎসুক হয়ে উঠে। কাগজের বই পড়ার যে আনন্দ, যে গন্ধ তা কি আইপ্যাড-কিন্ডল-নুকে হয়? হয় না।
পুরান ঢাকা নিয়ে লেখার ইচ্ছা বহু দিনের। পত্রিকায় কাজ করার সুবাদে অনেক ভাবেই তা লিখেছি। কিন্তু ব্লগে লেখার আলাদা একটা ব্যক্তিসত্ত্বা কাজ করে। যা পত্রিকাতে বলা বা লেখা যায়না। তাই সচলায়তনে আসা।
লিখতে আমার কখনোই তেমন ভাল্লাগে না। কিছু পড়া এর চেয়ে অনেক বেশি আরামদায়ক। এ ব্যাপারে আমি পাক্কা ভোক্তা। অর্থাৎ কিছু উৎপাদন করি না, কেবল গিলি। তবে প্রিয় ঢাকা শহরকে নিয়ে লিখতে বসে বেশ অনেক কথা মনে চলে আসছে। লিখতেও খারাপ লাগছে না। ঢাকা ছেড়ে আছি প্রায় দুই বছর হতে চললো। পরিবারের লোকজন, আব্বু, আম্মু, বোন, বিচ্ছু ভাগ্নেটা, বন্ধু-বান্ধব; এদের চেয়েও ইট-কাঠ-ধূলা-বালির ঢাকাকে দেখতে ইচ্ছা হয় বেশি। নিউ মার্কেটের বইয়ের দোকানের চিপায় লেবু চা, সন্ধ্যাবেলায় ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে হাটাহাটি, শাহবাগের মোগলাই, ফুলার রোডের ফুটপাথ, বুয়েট ক্যাম্পাস, ইএমই ভবনের ছয়তলার বারান্দা – এইসব ‘তুচ্ছ’ জিনিষের স্বপ্ন দেখে প্রতিদিন ভোরবেলায় ঘুম ভাঙ্গে, আর দিন গুনতে থাকি। শালার পড়াশোনা, রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্পের থেকেও ভয়ংকর জিনিষ – শ্যাষ হয় না!
স্মৃতিকথাকে গল্প বলাটা কতোটুকু যৌক্তিক? গল্প মানে তো বানানো কথা। আবার ছোট থাকতে, আব্বু বা দাদু তাদের ‘ছেলেবেলার গল্প’ শোনাতো আমাকে। সেগুলো কি তবে সত্যি কথা, নাকি বানানো গল্প, নাকি সত্যি কথার সাথে বানানো কথার মিশেল? আমার বাচ্চাকালের একটা স্মৃতি আছে, এক মেঘলা বিকালে আমি আমাদের ঢাকার বাসার বারান্দায় লাল সুয়েটার আর হাফ-প্যান্ট পড়ে আব্বুর পাশে বসে বাদাম খাচ্ছি আর কথা বলছি, বাইরে তুষারপাত হচ্ছে! হাসবেন না, কিন্তু অন্ততঃ ১০ বৎসর বয়স পর্যন্ত আমি এটাকে সত্য স্মৃতি (বা সত্য ঘটনা) বলেই ভাবতাম। যাই হোক, ঢাকা আমার অত্যান্ত প্রিয় একটা শহর। ‘বড়’ হবার পর থেকে বন্ধু, বান্ধবী, প্রেমিকার সাথে এই শহরের আনাচে-কানাচে ঘুরে-ফিরে, খেয়ে-দেয়ে বেড়িয়েছি। তাই ভাবলাম এই শহরটাকে নিয়ে নিতান্তই সাদা-মাটা কিছু স্মৃতিকথা লিখে ফেলি। সেই স্মৃতিকথায় কতটুকু সত্য আর কতটুকু কল্পনার খাঁদ আছে, সেটা পাঠকের উপরেই ছেড়ে দিলাম।
ইংরেজ জোসি কন্ডের১ সাহেব ঘুরতে ঘুরতে আমাদের ঢাকা শহর আসেন ১৮২৪ সালে। তাঁর ১৮২৮ সালে প্রকাশিত বই The modern traveller: a popular description, geographical, historical, and topographical of the various countries of the globe, Volume 3 এর ১৩৪ পৃষ্ঠা হতে আমাদের প্রিয় ঢাকা শহরের বর্ণনার ভাবানুবাদ।
"কত টাকা হলে চলে?"-- প্রশ্নটা কি অবান্তর?
কারো কাছে হয়তো অবান্তর, কারো কাছে নয়। জীবন ধারণ করতে কত টাকা দরকার তার কোন সঠিক উত্তর সম্ভবত দেয়া সম্ভব নয়। টাকার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। কোন এক সময় পণ্যদ্রব্য বিনিময়ের মাধ্যমেই জীবন-জীবিকা চালানো সম্ভব হলেও এখন কুলোটা দিয়ে মুলোটা নেয়ার দিন শেষ। বিনিময় এখন কাগজের নোটে। চাহিবা মাত্র ইহার বাহককে ক-টাকা দিতে বাধ্য থাকিবে।
আজ সকালে একটা আর্টিকেল পড়লাম, যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধঃগমনের স্বরুপ তুলে ধরা হয়েছে। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড এক সময়ের উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ থেকে আজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামে কলঙ্কে পরিণত হয়েছে। কোনো র্যাঙ্কিংয়েই এই বিশ্ববিদ্যালয়কে ৫০০-র ভেতরেও খুঁজে পাওয়া যায় না। শিক্ষকদের লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি, ছাত্রদের চাঁদাবাজিসহ সব কিছুই হয় এ বিশ্ববিদ্যালয়ে, শুধুমাত্র পড়ালেখা ছাড়া। যখন আমাদের উচিত এ থেকে পরিত্রাণের উপায় খোঁজা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আবার তার পুরনো অবস্থান ফিরিয়ে দেয়ায় সচেষ্ট হওয়া, তখন আমাদের একাংশ ওই নোংরা রাজনীতিতে হাত মেলাচ্ছে আর বাকিরা বালিতে মুখ গুঁজে আকাশপানে পশ্চাৎ তুলে দিয়ে অদৃষ্টকে দুষছে।
যানজট বা যাতায়ত ব্যবস্থাপনায় বাস সবসময়ই প্রাইভেট কারের চেয়ে বেশি আদরনীয় কারণ, একই সংখ্যাক যাত্রী বহন করার জন্য যতগুলো বাস লাগে সেগুলোর বদলে কার ব্যবহার করলে তা অনেক বেশি রাস্তা দখল করে যানজট বাড়ায়। যেমন: ১২০ জন যাত্রী বহন করতে ৩০টা কার কিংবা ৩টা বাস লাগবে। ৩০টা প্রাইভেট কারের চেয়ে ৩টা বাস রাস্তায় এবং পার্কিংএ অনেক কম জায়গা নেয়। এছাড়া জ্বালানী খরচের কথা চিন্তা করলেও ৩০টা কারের চেয়ে ৩টা
সপ্তাহখানেক আগে শিক্ষাসফরে মাওয়া যেতে হয়েছিলো। পথের মধ্যে নির্মানাধীন যাত্রাবাড়ি গুলিস্থান উড়াল রাস্তার অংশটুকু পার হতে হয়েছিল। ঐ এলাকায় বাতাস ধূলাবালি দিয়ে ভর্তি - এক অসহ্য অসভ্য অবস্থা; অথচ আমি প্রায় নিশ্চিত যে ঐ প্রকল্প অনুমোদন দেয়ার সময়ে নির্মানকালে এই ধরণের বায়ু দূষণ রোধ করার জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার বিষয়ে অঙ্গীকারনামা দেয়া হয়েছিল - এই ধরণের অঙ্গীকারনামা ছাড়া কোন প্রক