দুপুর বেলা গরুর গোস্তো দিয়ে ভরপেট খেয়ে একটা ভাত ঘুম দিয়েছিলাম। দিনে দুপুরে মশার অত্যাচারে ঘুম ভেঙ্গে গেল। ডেঙ্গু মশা নিয়ে ক'দিন চিল্লাপাল্লা করেই সেই আন্দুলন থেমে গেছে বলে একটু মেজাজ খারাপ হচ্ছিল। রাগ কমাতে রওনা দিলাম বইমেলার পথে। একটু আয়েশ করে যাওয়ার আশায় সিএঞ্জি দাম দর করতে যেয়ে আরেক দফা মেজাজ খারাপ। শেষমেষ ভাঙ্গা হাত নিয়ে ধাক্কাধাক্কি করে বিহঙ্গতে উঠলাম। শাহবাগে নেমে ভাবলাম টিএসসি পর্যন্ত এই দীঈঈর্ঘ পথ হেঁটে যাওয়া ঠিক হবে না। বহু কাকুতি মিনতি করার পর এক ব্যাক্তি আমাকে তার রিক্সায় ওঠার অনুমতি দিলেন। বার দশেক প্যাডেল চাপার জন্য তাকে দশটি টাকা গুনে গুনে দিতে হলো।
সচলের লেখক/পাঠকরা তো ঘোরাঘুরি কম করেন না। আমাদের নেতা তারেক অণুর সুযোগ্য নেতৃত্বে ভূ-পর্যটক ও জল-পর্যটক সচলদের সাথে আমরা ঘুরে এসেছি আলাস্কা থেকে দক্ষিণ আমেরিকা, খেয়েছি গরুর ১নং চাপ, ইউরোপের গ্রামের পথ চষে বেড়িয়েছি, বরাফাচ্ছাদিত পর্বতশৃঙ্গ জয় করেছি, দেখেছি সোনালি ইলিশ। এককথায় দেখা বাকি আছে, করা বাকি আছে এরকম জিনিসের সংখ্যা এখন অনেক কমে এসেছে। আর যেগুলো বাকি আছে সেগুলো করাটাও তো সহজ সাধ্য না। যেমন, ধরুন এখন পর্যন্ত কোন সচলের কেউ মহাশূণ্যে ঘুরতে যেতে পারিনি। (উড়োজাহাজে চড়ে মহাশূণ্যের কাছাকাছি গিয়েছি অবশ্য সবাই।)
বেলা তিনটায় 'লাঞ্চো' সেরে অফিসে বসে একটু ঝিমাচ্ছিলাম। তারিক আজিজ এসে প্রস্তাব দিল চলেন বইমেলায় যাই। তার কুপ্ররোচনায় অফিস ফাঁকি দিয়ে বইমেলায় চলে গেলাম। ২০১৪'র মেলায় আজকেই প্রথম যাওয়া। সেই আনন্দে দু'শ টাকা দিয়ে একটি সিএঞ্জি চালিত অটোরিক্সা ভাড়া করে ফেললাম। এবারের মেলা দুই অংশে বিভক্ত। শিশুতোষ বইয়ের প্রকাশনী এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানের স্টল বাংলা একাডেমির ভেতরে আর বাকিরা সবাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। একাডেমি চত্তরে আজকে যাইনি। উদ্যান বেশ ফাঁকা ফাঁকা, প্রশস্ত। হারেরেরে রেরে করে "গ্রন্থ মেলা গ্রন্থ মেলা অমর একুশে গ্রন্থ মেলা" টাইপের থিম সং এর উৎপাত নাই এবার।
সপ্তাহটা খুব খারাপই গেল। ছ্যাঁক খেতে খেতেই কিভাবে যেন কাটিয়ে দিলাম। (দুষ্টু লোকেরা তফাত যাও, ছ্যাঁক আগুনেও খাওয়া যায়, হুঁহ)। প্রথমটা খেলাম গত শনিবার বিকেল ঠিক ৫টায়। বিস্তারিত বলা যাবেনা, শরমের কথা। আর শেষটা গতকাল বিকালে, তাও উপর্যুপরি। সাইড এফেক্ট হিসাবে আপাতত বিজ্ঞানের খেতা পুড়ি। বিজ্ঞানের কাঠখোট্টা গল্পের চাইতে মানুষের গল্প অনেক মজার। আর সে গল্প যারা বানায় তারা থাকে অনেক অনেক দূরে, আফসোস।
২৭ ডিসেম্বর, ২০১৩, শুক্রবার
ল্যাটিচিউড ২১ ডিগ্রী ০১ মিনিট নর্থ, লংগিচিউড ৯১ ডিগ্রী ২০ মিনিট ইস্ট
আরো একটা বছরের শেষ দিন আজ।
দিনগুলো হয়তো একই রকম, কিন্তু ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টানোর নিরিখে পেছন ফিরে তাকাই কেমন গেলো এ বছর, কিংবা কী চাই আগামী বছরে।
এ বছরের প্রথম সপ্তাহে এক পোস্টে লিখেছিলাম, “মর্ণিং শো'স দ্য ডে যদি সত্য হয় – ২০১৩ সালের ঢাকামেট্রো লাইফ রাজনৈতিক সহিংসতা আর হরতালে ভরপুর হবে। নির্মানাধীন ফ্লাইওভারগুলো চালু হলে যানজটের মাত্রা কমবে এটাই আশা।“
বাস্তবে খুব ব্যতিক্রম হয়নি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে হরতাল অবরোধ ছিল প্রায় সারা বছর।
মাত্র পাঁচ মিনিটের জন্য বাসটা মিস্ করলাম। পরের বাস আরো ঘন্টাখানিক পর। অলরেডি অফিসের জন্য লেইট হয়ে গেছি। এই দেশে বাসের কঠিন সময়ানুবর্তীতার উপর সঙ্গত কারণেই মেজাজ খারাপ হলো। ‘ইশ্, আর মাত্র পাঁচটা মিনিট দেরি করে এলে বাসের কি এমন ক্ষতিটা হতো’ ভাবতে ভাবতে বাস স্টপে বসলাম। স্টপে আমার পাশেই আরো একজন বৃদ্ধ ভদ্রমহিলা বসে আছেন। রুপ দেখলেই বোঝা যায়, এক সময় ডাকসাইটে সুন্দরী ছিলেন তিনি। দুইজনই পাশাপাশি চুপচ
প্রথমেই একটা ঘোষণা দিয়ে রাখি। আমি বিদেশি নই, ১০০% খাঁটি বাংলাদেশি। বছর তিনেক দেশ থেকে দূরে থাকার পর আবার এসেছি দেশে। দেশে আসার পর অনেক কিছু পরিবর্তন চোখে পড়েছে, সেটাকেই ৯৫% অভ্যস্ত, ৫% অনভ্যস্ত চোখে ধরার চেষ্টা করেছি। আজকে মূলত: ঢাকার সীমার মধ্যেই থাকব।এটা ব্লগর ব্লগর আর দিনপঞ্জি ক্যাটেগরির লেখা, সেভাবেই এটা ট্যাগান্বিত। সিরিয়াস বা গঠনমূলক কিছু এখানে পাবেন না।
আর, এখানে যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে সেটা আজকের ঢাকার সাথে নাও মিলতে পারে, এটা কয়েকদিনের অভিজ্ঞতার সারাংশ।
১। দেশের বাইরে কতদিন ছিলাম, অনুভূতির ওপর যে সেটার একটা প্রভাব আছে, তা এবারই প্রথম টের পেলাম। দেশ থেকে দূরে ছিলাম প্রায় সাড়ে তিন বছর। এর আগে অবশ্য বার কয়েক বিদেশ গিয়েছিলাম কয়েক দিনের জন্য। সেসব স্বল্প সময়ের বিচ্ছেদ আর ৩ বছরের বিচ্ছেদের পর ফিরে আসার মাঝে কতটা পার্থক্য সেটা প্লেন ঢাকার মাটি স্পর্শ করা মাত্রই স্পষ্ট ভাবে ধরা পড়ল, আগেরবার ফিরে এসে খুশি লাগছিল যে- যাক পরিচিত পরিবেশে ফিরে এলাম।। এবার ল্যান্ড করার পর প্রথমেই মনে হল জানালা দিয়ে আমি একটু মাটি দেখব, আমার বাংলাদেশের মাটি!
সুশীলের ত্যানাসমগ্র
আনু-আল হক
------------
১. “যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই” বললেই বিষয়টা ‘রাজনৈতিক’, আর থামায়া দেয়াটা খুব অ-রাজনৈতিক!
০০১।
অগ্রজ মাহবুব আজাদ সচলের অবস্থান-তখতে স্বগতোক্তি ঝুলাইয়া রাখিয়াছেনঃ “কসাই কাদের মরিয়া প্রমাণ করিল যে সে কত্তবড় কেপিটেস্ট”। পীরবাবা আবার সত্যের ডালি উজাড় করিয়া বেশরমের ন্যায় বঙ্গালমুলুকে মুত্রবিসর্জন করিয়া অলৌকিকভাবে পাকমুলুকের সবুজ তৃণ নাপাক করিবার উপক্রম করিয়াছেন। এই প্রেক্ষিতে আরেক ব্যাঘ্রশাবক, সহাচল সুমন ভ্রাতঃ ফরমাইয়েছেন, উহাদিগকে (Dark lords, They who must not be named) ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপের সুনিপুণ পাঁচালী। এক্ষণে বলিয়া রাখি, পরের মতখানার সঙ্গে আমি কিঞ্চিৎ দ্বিমত প্রকাশ করিতেছি। আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপের আগে তাহাদিগের প্রয়োজনীয় উপাদানসমুহ আমাদিগের ভবিষ্যতের নিমিত্তে দ্রাক্ষারসের ন্যায় শুষিয়া নেওয়াই উত্তম- ইহাই আমার মত। স-মাংস অস্থি কেউ কখনও কি সারমেয় ভক্ষণের নিমিত্তে সম্প্রদান কারকে চতুর্থী বিভক্তি সহযোগে ব্যাবহার করে? কিংবা স-মৎস্য কণ্টক কি পোষ্য মার্জারটিকে স্বত্ত ত্যাগ করিয়া দান করা হয়? মোটেই তাহা নহে। উহা আদতে সমীচীনও নহে। কিরুপে? উহাই আলোচনা করিব, বোকাবাক্সের বিজ্ঞাপনপূর্ববর্তী লাস্যময়ী উপস্থাপিকা কিংবা অতিউত্তেজনায় গাঁজন অপচয়কারী (গ্রন্থ মোতাবেক- শয়তানের ভ্রাতঃ) উপস্থাপকের ন্যায় বলিতেছি- “সঙ্গেই অবস্থান করুন”।