একটা স্বপ্ন দেখে মনটা সকাল থেকে খারাপ হয়ে আছে। বুয়েটের প্রথম দিন ক্লাসে যাচ্ছি এই দৃশ্যটা দেখলাম। সেই ঝলমলে রোদ্দুরের দিন, যে কোনো মেয়ের সাথে প্রেমে পড়ে যাবার একটা বিপুল সম্ভাবনা, ক্যাফের আড্ডা - এসব কিছু আমাকে এলোমেলো করে দিলো। ঘুম থেকে উঠে শেলের মতো বুকে বিঁধে গ্যালো যে আমি চাইলেও আর সেসব দিনগুলো ফিরে পাবো না।
আমরা যাইনি মরে আজও - তবু কেবলই দৃশ্যের জন্ম হয়:
লেখাটির শিরোনাম কি দিব তা নিয়ে প্রথমে একটু দ্বিধায় পড়ে গিয়েছিলাম। প্রথমে ভেবেছিলাম নাম দিব 'নজরুল কথন'। কিন্তু তারপরে মনে হল এটা আসলে নজরুল কথন না, এটা 'হাসনাত কাহন'-আমার জীবনে কীভাবে নজরুল আছেন। 'হাসনাত কাহন' নাম দিলে শিরোনাম অন্য অর্থের দিকে ইঙ্গিত করবে বলে নাম হয়ে গেছে 'আমার নজরুল কাহন- অর্থাৎ আমার ও নজরুলের কাহিনী।
১।
মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লে মানুষ অনেক কিছু করে। আমি ঠান্ডা মাথায় ব্রাউজার খুলে মোশন প্ল্যানিং এর টিচার রনকে ইমেইল করে বললাম, “তোমার কোর্সের ফাইনাল প্রজেক্ট আগামী চার দিনে আমি কমপ্লিট করতে পারব না, ইনকমপ্লিট দিয়ে দাও”। সেটা গত ফল সেমিস্টারের কোথা। সেই ইনকমপ্লিট প্রজেক্টকে কমপ্লিট করার নিমিত্তে রনের সাথে প্রায় পনেরো-ষোলটা ইমেইল চালাচালি করে গতকাল দ্বিতীয়বারের মত দেখা করা গেলো।
স্মৃতি খুব ফাউল একটা পাবলিক, ছয়-সাত বছর আগের সহপাঠীকে ভুলিয়ে দিতে পারলেও নানা আজব জিনিস সে মনে রেখে দেয় যুগের পর যুগ। ছোট বেলার প্রায় সব কিছু ইতিমধ্যে ভুলে গেলেও বিশেষ কিছু জিনিস একেবারে আজীবনের জন্য মস্তিষ্কে পোঁতা হয়ে গেছে। লিটল জুয়েলস স্কুলে যখন নার্সারিতে পড়ি তখনকার এক স্মৃতি এখনও পুরো স্পষ্ট। অভিনেতা শহীদুজ্জামান সেলিমের প্রথম বউ তখন বেঁচে নেই। তার দুটো মেয়ে আমাদের স্কুলে পড়তো। শহীদুজ্জামান সেলিম তখনও বিখ্যাত। সেই সময় আমি তাকে একবার দেখেছিলাম। দেখেছিলাম, সেলিম তার দুটো মেয়েকে দুই কোলে উঠিয়ে আমার পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। শহীদ জিয়ার মতো এই স্মৃতির যেমন কোনোদিন মৃত্যু হবেনা, তেমনি বোধহয় মৃত্যু হবেনা 'বিদেশ' শব্দ সম্পর্কিত ছোটবেলার স্মৃতিরও। এখনও বিদেশ শব্দটা শুনলে আমার মাথায় যে জিনিসটা চাড়া দিয়ে ওঠে সেটা বোধহয় ক্লাস টু তে যখন পড়ি তখনকার। চাচা অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছেন। আমি খুব করে কান্নাকাটি করছি যেনো উনি আমাকে স্যুটকেসে ভরে উনার সাথে নিয়ে যান।
আজ ক্লাস করবো না। এই বিষয়ে বাচ্চাদের বাহানার অন্ত নেই। এতোদিন পর ক্লাস শুরু হলো, আজ পড়বো না। কাল থেকে তো ছুটি শুরু, আজকে নাহয় পড়া থাক। কারেন্ট চলে গেছে, গরম খুব, পড়বো না এখন। কি সুন্দর বৃষ্টি হচ্ছে, এর মধ্যে কি পড়া যায়?
০৯ বেজে ৫৫ মিনিট। ডিনার করতে যাব এমন সময় ফোনের রিং বেজে উঠল। ফোনের ডিসপ্লে-তে মর্ম’র নাম টা দেখে কিছূক্ষনের জন্য মনটা কেমন বিশাদে ভরে গেল। সামনে ওর প্রডাক্ট লঞ্চ। লঞ্চ প্ল্যানটা ইতোমধ্যেই গোটা দশেক বার পরিবর্তন, পরিমার্জন করতে হয়েছে। আবার কোন চেঞ্জ না তো?
সচলায়তন পরা শুরু ,যখন থেকে একাকিত্বের সঙ্গী হয় আমার লেপটপ খানি . অনেক বার ভেবেছি নিবন্ধন করব , কিন্তু এত এত কঠিন নিয়মাবলী দেখে বারবার পিছ পা হই.কিন্তু পাগল মন কে আর ঠেকাতে পারলাম না . হাতে খড়ি নিলাম ( আশা করি নাকে খড়ি দিতে হবেনা ).
[justify]
প্রথম আলো কথিত আজকের সুসমাচার, হুমায়ূন আহমেদ নতুন উপন্যাস লিখছেন।
যা তা এলেবেলে নয় একেবারে ঐতিহাসিক রাজনৈতিক উপন্যাস। এর আগে ও হুমায়ূন লিখেছেন এমন, লিখেছেন মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে উপন্যাস 'জোছনা ও জননীর গল্প'। যদি ও মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত গনহত্যার অন্যতম অংশীদারদের 'কোমল' রূপে দেখানোর সচেষ্ট প্রয়াস আছে সেই উপন্যাসে তবু এটাকেই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এ যাবত কালের শ্রেষ্ঠ কাজ বলে চালিয়ে দেবার চালিয়াতি জারি আছে।
বুকে পাথর বেঁধে ছাব্বিশটা বসন্ত পার করেছি, কখনো কোন সমস্যা হয়নি। কিন্তু এবারের বসন্ত ছিলো অন্যরকম। বলছি তারই গল্প।