এক. আবদুইয়ার মাথাটা সারাবছরই নড়বড়ে থাকে। আর শীতকাল আসলে তো একদম চরমে। তার মুখ দিয়ে যেসব শব্দ বের হয় সে তুলনায় রাস্তাঘাটে শুনতে পাওয়া দৈনিক খিস্তিগুলি নিতান্তই নিরীহ। আবদুইয়ার চোখে চোখে তাকালেই সে ধরে নেবে আপনি তার গালির খদ্দের এবং খদ্দের সন্তুষ্টির জন্য তেড়িয়া হয়ে উঠবে সে...... সুতরাং তার চোখে চোখে কেউ তাকায় না। নিরাপত্তার খাতিরে আবদুইয়াকে রাস্তার যেপাশে দেখি আমি তার বিপরীত দিকে চলে যাই।
…
(১)
খেয়াল ছিলো না যে আজ ৩১ জানুয়ারি। ঘুমের সময় কেটে রাতজাগা আঙডাঙ সেরে যথারীতি শেষ রাতে ঘুমোতে যাবার কল্যাণে সকালে দেরি করে ঘুম থেকে উঠা। ওপেন হওয়া মস্তিষ্কের মেমোরি চিপ স্বাভাবিক রিলোড সম্পন্ন হবার আগেই একটা বাঁশির করুণ সুর যান্ত্রিক শব্দে বেজে ওঠলো। মোবাইলের রিং টোন। মনিটরে সেভ করা অক্ষরগুলো জ্বলছে নিভছে, আনোয়ার সাদাত শিমুল।
হ্যালো…
‘শুভ জন্মদিন!’
স্কুল জীবন থেকে রেডিও শোনার ব্যাপক শখ আমার। রেডিও’র নানান অনুষ্ঠানে চিঠি লিখতাম, নাম শোনার অপেক্ষা করতাম। এসব স্মৃতি নিয়ে লেখার ইচ্ছেটা এখনো আছে, লিখবো আগামীতে। কৈশোরের সে সময়ে রেডিও বাংলাদেশ ঢাকা-খ চ্যানেলে দুপুর একটার ইংরেজী সংবাদের পরে থাকতো ‘নিখোঁজ সংবাদ’। হারিয়ে যাওয়া মানুষের সন্ধান বিজ্ঞপ্তি। ধীর উচ্চারণে জানানো হতো – কে কখন হারিয়ে গেছে, বয়স কতো, হারিয়ে যাওয়ার সময় গায়ে কী রকম পোশাক ছিল, কোন ভাষায় কথা বলে; এসব। বেশিরভাগের বয়স ছিল দশের নিচে। আম্মা আমাদের বলতেন, এদেরকে ছেলে-ধরা নিয়ে গেছে।
হয়তো ভয় দেখাতে বলতেন, যাতে খেলতে গেলে সাবধানে থাকি, চকলেট দেখিয়ে ডাকলে কারো সঙ্গে কোথাও না যাই...।
১
ক্লাস এইট অথবা নাইনে পড়তাম তখন,জেমসের একটা গান বাজারে আসল।স্কুলে যাবার পথে দোকানে, পাশের বাড়ির বড় ভাই,সহপাঠী সবার মুখে একই গান শুনি। “লিখতে পারিনা কোনো গান,আজ তুমি ছাড়া”।সুপার ডুপার হিট গান।বলাবাহুল্য গানটা আমারও ব্যাপক পছন্দের একটা গান ছিল।ছিল বললাম, কারণ আগে ছিল।এখন গানটা শুনলে আগের মতো সে অনুভূতি আর পাইনা। শুধু এই গানটাই না। আইয়ুব বাচ্চুর “নীলাঞ্জনা” গানটাও আমার খুবই পছন্দের একটা গান। স্কুলে পড়ার সময় তখনো সিডি বা ডিভিডি প্লেয়ার হাতে আসেনি। ভরসা ছিল একটা সিঙ্গার টুইনওয়ান।
সাড়ে পাঁচটার দিকে শুনলাম আশেপাশের কিউব থেকে লোকে বলতেছে, সারছে রে সারছে, গ্রিডলক। বাইরে তাকায় দেখি ফাটায়ে স্নো পড়তেছে। আকাশ দেবী মনে হয় পুরা কাপড় খুইল্যা ছাড়তেছে।
সকালে বিরাট দেরী হইছিল অফিস যাইতে। এমনিতেও তাই ৭টার আগে বাইর হওয়া যাবে না। সুতরাং গ্রিডলক ছুটুক। তারপর বাড়ি যাবো। এই লক্ষ্যে কাম করতে করতে খিয়াল কইরা দেখলাম লোকে গ্রিডলকের তোয়াক্কা না কইরা ছুটছে। আর কিছুক্ষণ থাকলে আমি পার্কিংলট থেইকা বাইর হইতে পারুম কিনা কেডা জানে?
একটা সময় ছিল, দুনিয়ার সব কিছু নিউটনের কথা মেনে চলতো, গাছের আপেল থেকে শুরু করে দূরের গ্যালাক্সি পর্যন্ত। তারপর মানুষের চোখ শকুনের চেয়েও প্রখর হয়ে এলো, তার অশ্লীল নজর সবার একেবারে ভিতরে আনাগোনা করতে থাকলো। আর তখন দেখা গেলো, কিছু খুদে শয়তান আর নিউটনের কথা মানছে না, তারা ম্যাক্স প্ল্যাংক নামে নতুন এক পীরের মুরিদ হয়ে খেয়াল খুশী মত ঘুরে বেড়াচ্ছে। ঘটনাক্রমে এই পীরের বয়ানের সাথে আমার পরিচয় হয় গত সেমিস্টারে।
ঘুম ভাঙতেই ঘড়ির দিকে চোখ চলে গেল। বিকাল ৫টা। বাসার কাঠাল গাছটায় চড়ুইয়ের দল কিচির-মিচির করছে? শব্দ নাই কেন? আর আমার ঘরটাও তো এতো অন্ধকার থাকে না এই সময়। ফায়ার-ইঞ্জিনের সাইরেনের শব্দে ঘোর কাটে আমার। “আপনি আর স্বর্গে থাকেন না হাসান সাহেব”, বলি নিজেকেই। গতকাল ঘুমাতে পারি নাই। দুপুরে তাই বাসায় ফিরেই ঘুম। প্রফেসর দেশের বাইরে থাকায়, এই বিনোদনের সুযোগ পাওয়া গেল। কিছু লিখতে বসলামই যখন, প্রথম থেকেই শুরু করি।
(আমার সচলায়তন পাতা ঘাঁটলে এটা বুঝতে বেশি সময় লাগবে না যে ব্রাজিলের লেখক পাউলো কোয়েলো আমার খুবই প্রিয় লেখক। তার ব্লগেও প্রায়ই পাতা উল্টাই। গত বছরের শেষ দিনে এই লেখাটা সেখানে দেখে মনে ধরলো, নিজের ২০১০ এর অনেক কিছুর সাথেই মিল খুঁজে পেলাম লেখাটির মূল ভাবের সাথে। তাই অনুবাদ করে সবার সাথে শেয়ার করতে ইচ্ছে করলো। ভাষাগত ত্রুটিবিচ্যুতি ধরিয়ে দেবার জন্যে সুরঞ্জনা হক ও অতন্দ্র প্রহরীকে ...
একটি ফেসবুক থ্রেড
দিন পনের আগের কথা। ফেসবুক খুলে দেখি, মুকুল ভাইয়ের থ্রেড। আর মুকুল ভাইয়ের থ্রেড মানেই জরুরী জনগুরুত্বপূর্ণ কিছু। এই থ্রেডেও তার ব্যতিক্রম হল না। মুকুল ভাই আমাদের সবাইকে নিয়ে বিশ্বকাপের খেলা দেখতে চায়। সেই জন্যেই এই মহৎ উদ্যোগ। শুরুতেই থ্রেডের সবাইকে একবার শুধিয়ে নেয়া হল, কার কার স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখার ইচ্ছা আছে? বলা বাহুল্য, ভারত-পাকিস্তান, ব্রাজিল-আর্জ ...
ও আমার ময়নাপাখি,
বলি তুই গেলি কই! ঠাট্টা মশকরা না, আসলেই সত্যি করে বল তুই থাকিস কই। আমি আমার আত্মীয়-স্বজন সবাইকে জিজ্ঞেস করলাম তোর ব্যাপারে, সবাই একলগে বলল তারা তোকে দেখেনি। বন্ধু বান্ধব, পাড়া-প্রতিবেশী, তাদেরকেও জিজ্ঞেস করলে তারা বলে যে তোর সাথে এতোদিন ধরে দেখা নাই যে, তুই এই দুনিয়াতে আছিস কিনা সেই নিয়েই তাদের মাঝে মধ্যে সন্দেহ হয়। আমি পিজা হাট, বাস্কিন র ...