গত কয়দিনের বৃষ্টিতে মনে হচ্ছে বাংলাদেশে আছি, যেন বর্ষাকাল। আজ দুপুরে জুমআর নামাজের জন্য ডিপার্টমেন্ট থেকে বের হয়ে দশ তলা থেকে নিচে নামতে নামতে ঝুম বৃষ্টি। এরকম বৃষ্টি আগেও এসেছে আবার মিনিট দশের পরে থেমেও গেছে। কিন্তু আজ আধা ঘন্টা হয়ে গেলেও থামার নাম নেই। অগত্যা একটু কমে এলে বৃষ্টির মধ্যেই দৌড় দিলাম।
বৃষ্টির জন্য নয়, কেমন যেন সময়টা অন্যরকম যাচ্ছে। ব্যস্ততার কারণে কোন অবসর নাই ...
বুয়েটে ফোর্থ ইয়ারের কথা। একমাস হল এক স্যারের ক্লাসে যাইনা। স্যার একদিন ডেকে পাঠালেন, তার জিজ্ঞাস্য হচ্ছে, আমি তার ক্লাসে যাইনা কেন? নিরীহ মুখ করে বললাম, “স্যার, আপনি তো আটটার পরে ক্লাসে আসলে ঢুকতে দেননা”। আসলেই ঘুম থেকে ৮.১৫ তে উঠে, দাঁত ব্রাশ না করেই তো আর ক্লাসে চলে যেতে পারিনা। এর চেয়ে পরের একঘন্টার ব্রেক সহ ৯ টা পর্যন্ত ঘুমানোই ভাল। সেই আমি, এখন অনেক তোড়জোর করেও সাতটা পর্যন্ত ঘু ...
প্রেমের ঋতু হিসেবে বসন্ত নাকি বর্ষা, কোনটা বেশি উপযোগী, এ নিয়ে ধুন্ধুমার তর্ক চলছে। স্থান--শাটল ট্রেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালযে পৌঁছতে ওটাই প্রধান ভরসা। প্রেমের ঋতু বর্ষা,এই ঘোষণা দিয়ে তর্কের সূচনা করে দিলেও, শেষ করার দায়িত্বটা অন্যদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে ট্রেনে জানালার পাশের সিটে বসে আমি বৃষ্টি উপভোগ করছি।
ট্রেন চলছে ঢুলে ঢুলে--কী জানি কিসের মাদকতায়! রেল লাইনের দুধারে বিস্তীর্ণ ধানক্ষেত। তাতে অবিরাম বর্ষণ। কী অপূর্ব! জানালা গলে বৃষ্টির ছাঁট আমাকে ভিজিয়ে দিচ্ছে। আহা বহুদিন পর বৃষ্টি নেমেছে এমন! তীব্র গরমে ঝিমিয়ে থাকা প্রকৃতিতে নেমেছে প্রাণের জোয়ার। বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে ট্রেনটা যখন পৌঁছালো তখন বৃষ্টির ছোঁয়ায় ঝকঝক করছে সবুজ সজীব ক্যাম্পাস। পাহাড়গুলো স্নিগ্ধতা মেলে ধরেছে। কদমের সারি সারি গাছ ফুলে ছেয়ে গেছে। এতদিন তো লক্ষই করিনি, কখন কুঁড়ি আসলো, পাঁপড়ি মেললো!
সাড়ে পাঁচটা পার হয়ে গেলেই মনে হয়, সব শেষ।
মিরপুরে এসেছিলাম আজ থেকে ষোল বছর আগে। তখন পীরজঙ্গী মাজারের আইডিয়াল স্কুলে আসতাম যেতাম বিআরটিসির দোতলা বাসে। ভাঙ্গাচুরা বাসগুলোতে চড়লেই মনে হতো এই বুঝি সব খসে পড়লো। ষোল বছর পর সেই একই বাস আবার আমার বাসায় ফেরার ভরসা। ষোল বছরে তাকে যৌবনদানের জন্য লালের উপর সাদা রং করা হয়েছে, নেইমপ্লেটে লাগানো হয়েছে চৈতালী, বৈশাখী কিংবা ক্ষণিকা নাম। বাস চ ...
ভয়াবহ মাথা ধরেছে সেই বিকাল থেকে। দাঁত ব্যথার সাথে এর একটা যোগ থাকতে পারে, ঠিক বুঝছি না। যেই কাজটা হাতে নিয়েছিলাম , কিছুতেই সেটায় আর মন বসানো যাচ্ছে না। অনেক ভাবে চেষ্টা করে এখন হাল ছেড়ে দিয়েছি। একদম অন্য কিছু ভাবতে হবে। প্রিয় কিছু। তাহলে যদি এই অদ্ভূত ব্যাথাটা একটু কমে।
আমার জানালা দিয়ে অনেক পাখি দেখা যায়। গুনে দেখেছি প্রায় দশ এগারো রকমের পাখি থাকে সামনের বিশাল গাছটা ...
আমার নতুন বন্ধুর নাম ডোডো পাখী। সে নাকি খুব বোকা। কাউকে বিশ্বাস করে না, তবু শুধু শুধু কষ্ট পায়। আমার তাকে নিয়ে লিখতে মজা লাগে। গোপন গোলাপে, রান্নাঘরের বেসিনে, এসো চমকাই, এসো ভন্ড হই, ষন্ড হই, পাষন্ড হই। সে বলে তার জীবনের মেয়েদের কথা। আর আমার আগ্রহ হবার রোগটা সেরে যায়। আমাদের মধ্যে আসলে তেমন কিছুরই মিল নেই। কেবল আমরা দুজনই বখাটে কথাবাজ- এটুকু ছাড়া। আমার ধারনা সে অনেক ভালো লেখে। কিন্ত ...
বেতন পেয়ে সোজা পলাশী।
গত মাসখানেক ধরে এই হোটেলে আমার নিত্য রাত-ভোগ, আহারের পরিমাণ একই-মূল্যমান ১৪ টাকা।
মোর্শেদ (ডাকি মুর্শেদ) আর এক পিছ ছেঁকা নান দিয়ে গেল।
রুটিটাকে দেখতে ঠিক চাঁদের মত লাগছে, মূলত ফুটোগুলোর কারণে। একদিক একটু পোড়া। মাগনা তো আর সুকান্ত বলে নাই, " পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি।"
পকেট ভারী, তবুও আমি ১৪ টাকাই খাব। তিন নান এক ভাজি। ভাজি আবার এক সেটিং-এ তিনবার দিবে।
পাশ ...
পোকাভাষণ
ধুরো! পড়তে ফড়তে ইচ্ছে করছে না। চারপাশে নানা জাতের পোকামাকড় মহাসুখে উড়ে বেড়াচ্ছে। ভাংভাং পাংপাং শব্দে কান ঝালাপালা। ইস, এক চড়ে পোকাব্যাটাদের দাঁত ফেলে দিতে পারতাম!
পোকাগুলির উদ্দেশ্যে একটা জ্বালাময়ী ভাষণ দিলে কেমন হয়? প্রধানমন্ত্রী যদি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে পারেন, তবে এই আমি কেন পোকাভাইদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে পারব না?
সমগ্র পোকাজাতির উদ্দেশ্যে মানন ...
৯ মার্চ, ২০০০
বৃহস্পতিবার
প্রমিজ করছি এখন থেকে প্রতিদিন ডাইরী লিখবই লিখব। যদি না লিখি, তাহলে কান কেটে পাড়ার নেড়িটার গলায় ঝুলিয়ে দেব। কিন্তু লিখতে গেলেই যে সব গুলিয়ে যায়। কোনটা ছেড়ে কোনটা লিখব বুঝে উঠতে পারি না। আজকে একটা চেষ্টা নিয়ে দেখা যেতে পারে। একেবারে সকাল থেকে শুরু করি।
হলুদ বর্ডার দেয়া জাপানী কোয়ার্টজ টেবিল ঘড়িটা সবসময় আমার বিছানায় থাকে। সে হিসেবে তার ন ...
কার ওয়াশ
এর আগে একবার সন্ধ্যার একটু পরে বের হয়েছি। হঠাৎ ঠ্যাস করে একটা শব্দ হলো। মনে হল গাড়ির উপর কী যেন পড়েছে। গাড়ী থামিয়ে নেমে আসলাম। আশেপাশে কেউ নাই। পেছনে গিয়ে দেখি গাড়ির ট্রাংক-এর উপর কে বা কারা ডিম ছুঁড়ে মেরেছে। কুসুম ছড়িয়ে একাকার অবস্থা। কিন্তু কাউকে না দেখে সন্দেহ বেড়ে গেল। ভালো করে খোলসের আকৃতি দেখে মোটামুটি নিশ্চিত হলাম পাখির ডিম। ছবিও তুলে রাখলাম। কিন্তু গাড়ির উপর ...