মিডিয়া জিনিসটা স্রেফ একটা বাজার। চাহিদা আর যোগানের সামঞ্জস্য বিধান করা ছাড়া এখানে আর কোনও কথা নাই। আমরা যেসব খবর জানতে চাই, সেসব খবর দিয়ে মিডিয়া আমাদের ভাসিয়ে দেয়। আর যেসব জিনিস আমরা ভুলে গিয়েই ভালো থাকি, সেগুলোকে ভুলিয়ে রেখেই আমাদের সাধের মিডিয়া তৃপ্ত।
"Everything originates in water
Everything sustained by water"
- Johann Wolfgang von Goethe (1749-1832)
রাজনীতি এবং প্রশাসন একদম বিপরীতধর্মী দুইটি আর্ট।
একটির মূলে আছে গণসংযোগ, আরেকটির জননিয়ন্ত্রণ। একটিতে ক্ষমতাহীন অনেক মানুষ মিলে, অনেক শ্রমের বিনিময়ে, সমাজকে অনেক জোরে নাড়া দিয়ে ছোট্ট একটু পরিবর্তন ঘটায়। অন্যটিতে খুব সীমিত কিছু মানুষের সিদ্ধান্তে, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে, স্বল্পতম প্রয়াসে অনেক বড় পরিবর্তন ঘটানো হয়। একটি মেঘের মতো বিশাল ও গম্ভীর, অন্যটি বজ্রপাতের মতো তীব্র ও ধারালো।
[justify]
একটা বিশেষ দিনের ঘটনা দিয়ে শুরু করি-
৭ই জুন, ২০১২
আমার এক ফেসবুক ফ্রেন্ড আমাকে জানালো ১২ জুন সন্ধায় দৃক গ্যালারিতে ফরেনসিক স্টাডি শীর্ষক প্রদর্শনী (কল্পনা চাকমার সন্ধানে একটি আলোকচিত্র) হবে । মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম যাবো । যাওয়ার জন্য তৈর হচ্ছি আমারে ৫ বছর বয়সি মেয়ে ( সঞ্চারী ) কোথায় যাচ্ছি জানতে চাইল, বললাম দৃকে , শুনেই বায়না ধরলো সে যাবে ।গায়ে জ্বর বলে আমি নিতে চাইলাম না , কিন্তু সে যাবেই । বাধ্য হয়েই নিয়ে গেলাম । পুরোটা সময়
অনেকদিন ধরে বুয়েটে মৌলবাদী রাজনীতিরে আগ্রাসনের উপর একটা তথ্যনিষ্ঠ লেখা লিখবো বলে ভাবছিলাম। কিন্তু দেশের বাইরে থেকে বুয়েটের তথ্য জোগাড় করা প্রায় অসম্ভব। কিন্তু আজকের এই সংবাদটা দেখে একটা ছোট আকারের সাধারণ অবজারভেশন না লিখে পারলাম না।
সময়টা ২০০৮ সাল নাগাদ হবে। গুগলের স্বয়ংক্রিয় গাড়ি নিয়ে গবেষণার কথা আগেই শুনেছিলাম। কিন্তু সত্যি ভিডিওতে দেখা চালক-বিহীন গাড়ির অভিজ্ঞতাই আলাদা। লেসার-রাডারে নিজের মত করে গাড়ি চারপাশের সব কিছু “দেখে” সেইমত চলছে। নিউস রিপোর্টটা দেখে এত চমৎকৃত হয়েছিলাম যে মনে হয় এই গাড়ি বাজারে এলে আমি প্রথম যুগের খরিদ্দার হবার জন্য ঝাঁপাবো। আমার এমনিতেই ড্রাইভিং খুব একটা ভাল লাগে না। আমার হয়ে মেশিন গাড়ি চালিয়ে দিলে আমি মেশিনদের কাছে চির-কৃতজ্ঞ হয়ে থাকব।
[justify]লেখার শিরোনামের যে কথাটা সেটা কিন্তু আমাদের অনেকেরই মনে অনেক বার করেই আসে। দেশটা চালায় কে?
প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মৃত্যু দিবসে ৭১ টিভির একাত্তর মঞ্চের আলোচনা অনুষ্ঠানে মেজর জিয়াউদ্দিন (কর্নেল তাহেরের সাথে যার ফাঁসির আদেশ হয়েছিল কিন্তু পরে অবস্থার প্রেক্ষিতে তাঁর ফাঁসি রদ করা হয়) নামে একজন প্রাক্তন সেনা সদস্য এসেছিলেন। উনি বলছিলেন যে "শেখ মুজিব কে সেনাবাহিনীর কিছু সদস্য মেরেছে তাঁর ব্যর্থতার জন্যে না, তাঁকে পছন্দ করত না সে জন্যে। সেনা বাহিনী স্যান্ডেল পড়া রাজনীতিবিদ দের কে অবজ্ঞার চোখে দেখত। রাজনীতিবিদরা এলাকার ছাপড়া চায়ের স্টলে চা খান...স্যান্ডেল পায়ে ধুলা মাখা পায়ে হেটে হেটে পাড়ার সবার সাথে হাত মেলান...এদেরকে সেনাবাহিনী তাচ্ছিল্যের চোখে দেখত।" কথা গুলো ভুলতে পারলাম না...কেমন যেন মনে গেঁথে গেল...মাথায় ঘুরতে থাকল। আবার ভারত পাকিস্তানের ইতিহাস টা মনে করার চেষ্টা করলাম............যা ভেবেছিলাম তাই। খাপে খাপে মিলে গেল। ৭১ পরবর্তী সময়ে সেনাবাহিনীতে যারা ছিল তারা কখনই সিভিল গভর্নমেন্টের অধীণে ছিল না। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান খমতা দখলের পর থেকে ৭১ পর্যন্ত পুরটা সময়েই ছিল সামরিক শাসন। আর্মিরা উর্দি আর ভারী বুট পরা রাষ্ট্রপ্রধান দেখে ও তার অধীনতায় থেকে অভ্যস্ত। সাধারন সুতী কাপড়ের পাঞ্জাবী আর স্যান্ডেল পরা আটপৌড়ে এক নেতাকে সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়কের উপর ওইসব তরুন আর্মি অফিসারদের নাখোশ থাকাটা তাই অস্বাভাবিক না। পাকিস্তান ফেরত একদল সেনাবাহিনী তাই শুরু থেকেই শেখ মুজিব সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত ছিল। সেই ক্ষোভ কে কাজে লাগিয়ে ফায়দা লুটেছে কয়েকজন আর্মি অফিসার এবং নিজেদের আক্রোশ থেকে করা মুজিব পরিবার নিধন কে শেখ মুজিবের ব্যর্থতার ফলাফল বলে চালিয়েছে দিয়েছে। আসলে তারা আবার আর্মি শাসনই বহাল করতে চেয়েছিল।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
এই লেখাটি যে খুব ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা করবে অতোটা আস্থা রাখতে পারছি না। কিন্তু ভবিষ্যতের কাছে আমাদের যে দায় রয়েছে সেই দায় খানিকটা হলেও পূরণের চেষ্টা করতে এই লেখাটি লিখছি। বলতে ভালো লাগছে, দারুণ স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে এই লেখাটি আপনাকে লিখতে পারছি। স্বাচ্ছন্দ্যের কারণ আপনি একজন শিক্ষিত মানুষ। সেজন্য এই লেখাটিতে শিক্ষা কী, তা আপনাকে আলাদা করে বুঝিয়ে বলতে হবে না। আমি যে দেশের নাগরিক, যে দেশে আমি বেড়ে উঠেছি, কোনো অশিক্ষিত সামরিক শাসক অথবা অন্য কোনো অশিক্ষিত ব্যক্তি সেই দেশটির নেতৃত্ব দিচ্ছে না, সেটা নিঃসন্দেহে দারুণ একটা অনুভূতি।