বাংলাদেশে কর্মক্ষেত্রে হাতে গোনা একটি বা দুটি শিল্প বাদে নারীদের অংশগ্রহণ খুব কম। নারীদের কাজের পরিবেশ নারীবান্ধব নয় এবং সেইসাথে কর্মক্ষেত্রে নিয়োগ পাবার ক্ষেত্রেও নারী কর্মীরা নানাধরণের স্টেরিওটাইপিং ও বাধার সম্মুখিন হন। সাধারণ্যে এরকম একটা ধারণা প্রচলিত আছে যে কর্মক্ষেত্রে নারীদের জন্যই কোটা রয়েছে। বাস্তবে এই কোটা শুধুমাত্র হাতে গোনা কিছু সরকারি চাকুরিতে পাওয়া যায়। বেসরকারি খাতে নিয়োগদাতারা নির্লজ্জ "শুধুমাত্র পুরুষরাই আবেদন করতে পারবে" সংস্কৃতি চালু রাখেন। বিডিজবসে প্রকাশিত চাকুরির বিজ্ঞাপন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে বেসকরকারি খাতে পুরুষদের বরাদ্দ প্রায় ২০% যেখানে নারীরা আবেদন করতে পারেন না। অপরদিকে শুধুমাত্র নারীদের জন্য কাজের সংখ্যা সংখ্যা ৩-৪%।
খুব বেশিদিন আগের কথা নয় যখন যৌনকর্মীরা স্যান্ডেল পড়ে চলাচল করতে পারতেন না।
যৌনপল্লীর কোন যৌনকর্মীর সাধারণ কবরস্থানে কবর হয়না। তাদের জন্য পল্লীতে আলাদা কবরস্থান থাকে। অন্য ধর্মাবলম্বীরাও একইরকম পার্থক্যের স্বীকার হন।
সম্ভবত গত বছর ফরিদপুরে যৌনকর্মীদের নিয়মিত কবরের ব্যবস্থা করেছে দ্য প্রস্টিটিঊট এসোসিয়েশন ফরিদপুর।
বাংলাদেশের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর আওতায় যৌনকর্মীরাও পড়েন। কিন্তু কোনরকম অভিযোগ নিয়ে থানায় গেলে ৯৯.৯৯ ভাগ ক্ষেত্রেই তাদের অভিযোগ আমলে নেয়া হয়না উল্টো সামাজিক এক্সপোজারের ভীতি দেখানো হয়।
এই খবর জানানোর পরে আশে-পাশে মানুষ বিশেষ করে কিছু কিছু বন্ধু-বান্ধবদের কথায় মনে হলো শতাব্দীর সবচেয়ে খারাপ কাজটা আমি করেছি। এত বছরের পড়াশুনা সব জলাঞ্জলী দিয়ে একি কাণ্ড বাধিয়েছি! প্রথমে আমি ঠিক বুঝি নাই সমস্যাটা কোন-খানে। কয়েকজন অতি উৎসাহী হয়ে জানালেন আমার বয়েস যাচ্ছে বেড়ে, আরো একবার বিয়ে করা উচিত জলদি; মা হবার বয়েস পার হয়ে গেলে আমাকে নাকি আর পার করা যাবেনা।
একজন আরো এক কাঠি সরেস, ঠারেঠোরে বলেই ফেললেন আমার এমনিতে যা শরীরের গঠন তাতে করে বিয়ে হওয়া মুশকিল, এমন অবস্থায় চাকরিটা ছেড়ে দিয়ে নিজের পায়ে নাকি কুড়ালই মেরেছি।
তারপর আরো কিছু টুকটাক আলাপ। আমরা এই ডিপার্টমেন্ট এ আসার আগে বলি বয়ফ্রেন্ড থাকলেও ছেড়ে আসতে, আপনার তো হাসবেন্ড আছে। আমি কি শপিং করি? এই ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হলে শপিং ভুলে যেতে হবে। পিজি তে রাত বিরাতে কাজ করতে হবে। বাসায় কী বলবে? হাসবেন্ড কী করে? ভবিষৎ এ বিদেশে যাওয়ার ইচ্ছা আছে কিনা কারন আজকাল সবাই বিদেশে যেতে চায়। বাংলা মিডিয়াম দিয়ে পড়ে ইংলিশ ভার্সন কাভার করতে পারব কি? ইত্যাদি।
বলা বাহুল্য আমার সেই সেই ভাইবায় পাশ করা হয়নি। সম্ভবত বিবাহিত হওয়াই ছিল আমার অপরাধ।
লাঞ্ছনা আর বঞ্চনার গল্প
মৌটুসী বুয়েট থেকে মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে বেরিয়েছে কিছুদিন হলো। তার পরীক্ষার ফলাফল খুব ভালো। আমেরিকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ হয়ে গেলেও ভিসা সংক্রান্ত জটিলতায় পরের সেমিস্টারে যেতে হচ্ছে তাকে। প্রায় ছয় মাসের এই সময়টুকুতে একটা চাকুরী করতে চাচ্ছিল সে।
তিন বৎসর পর ওদের ভর্তির টাকা জমা হলো। ওরা ভর্তি পরিক্ষায় উৎরে গেল। শুরু হলো নতুন যুদ্ধ। আমার বাসায় কখনো গৃহ শিক্ষক রাখা হয়নি, কখনো ওদেরকে কোচিং করাই নি। তবুও ওরা মেধা স্থান দখল করতো, বৃত্তি পেতো। আমি রাত জেগে ওদের জন্য নোট করতাম, তার পর যখন নোটে চোখ বুলাতাম সব ক্লান্তি দূর হয়ে যেত। পাবলিক পরীক্ষায়ও ওরা সব চেয়ে ভাল রেজাল্ট করেছে। আমি আপনাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, ওদেরকে আনন্দময় শৈশব দিতে পারি নি। একটা গল্পের বই বা খেলনা পাবার জন্য ওদেরকে মেধা স্থান দখল করতে হতো। পছন্দের টিফিন খাবার জন্য এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হতো। কারন সপ্তাহে একবারই ওরা টিফিনে টাকা পেতো।
সেদিন বিকাল ৫টা হবে অথবা এর একটু পর। এখন আর মনে পড়ছে না ঠিক ঠাক সময় বা মুহূর্ত। আমি পান্থপথে, ওই যে আসবাবের দোকানগুলো ছিল না, সে পাশ দিয়ে হেঁটে মোড়ের দিকে আসছিলাম অফিসে সেরে রিকশা নেব বলে। দুপুরের কিছু পরে বৃষ্টি হয়েছিল তাই এক পাশে পানি জমেছিল বলে রাস্তার কিছুটা মাঝে দিয়ে হাটছিলাম। একটু পরে উলটো দিক থেকে এক মোটর সাইকেল আসছিল। তো, মোটর সাইকেল পুরো গাঁ ঘেষে গেল, আমি সরতে গিয়ে সরতে পারিনি। সরে কোথায়
আমাদের দেশে একটি আইন রয়েছে, যেই আইন কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়াকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে। আর তার শাস্তি কম করে হলেও ৭ বছরের কারাদণ্ড।
[ সচলের নারী সপ্তাহের প্রথমার্ধে প্রচণ্ড পেশাগত ব্যাস্ততার পাহাড়ে চাপা পড়ে ছিলাম। আর শেষার্ধে নিতান্তই নারীঘটিত কারনে মানসিকভাবে কিঞ্চিৎ টালমাটাল সময় কাটাচ্ছিলাম। উদভ্রান্ত সেই সময়ের ফাঁক-ফোকরে সচলে ঢুঁ মেরে একেকটা লেখা পড়ে মানসিক স্থিরতার তলানী যাওবা থাকত সেটুকুও কর্পূরের মত উবে যেত। এই অবস্থার মাঝেই ম্যাটল্যাবে এটি লিখে ফেলা। একটি ছিমছাম গোছানো পোস্টের আকাঙ্ক্ষী পাঠকেরা দূরে থাকুন। ]
আদিতে নারী-পুরুষ ছিলনা, ছিল মানুষ। পরবর্তীতে সেই অখণ্ড মানবসত্তা নারী-পুরুষে বিভাজিত হয়।
'হোয়েন গড ওয়াজ এ্য ওমেন' :
আমেরিকান গ্রন্থকার ও ভাস্কর শিল্পী মারলিন স্টোন রচিত গ্রন্থ, 'হোয়েন গড ওয়াজ এ্য ওমেন'।