আমাদের সমাজে নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের অভাব নাই। এই ধরনের আচরণের প্রবক্তা পুরুষেরা হলেও কম বেশি পুরুষ নারী সবাই এটাকে চালু রাখতে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের প্রতি নিজ নিজ কর্তব্য পালন করে নিষ্ঠার সাথে। খুব প্রচলিত একটা কথা, ধারনা যেটা আমার জীবদ্দশায় বোধকরি সবচেয়ে বেশিরভাগ শুনা প্রবচনগুলোর একটা তা হল “নারীরাই নারীর শত্রু” আমার কাছে এই প্রবচনটাকেও ভয়াবহ রকমের পুরুষতান্ত্রিক স্টেরিওটাইপিং মনে হয়। এই এক
যোগ্যতা...
==============
রেজা সাহেব আজ খুব খুশি।
একটি প্রথম সারির কর্পোরেট অফিসের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার। মানুষ হিসাবে তিনি বেশ হাসিখুশি- অধীনস্থদের মাঝে খুবই জনপ্রিয়। সবাই জানে মধ্যবয়স পার হয়ে যাওয়া এই লোকটি কাজপাগল- নিজের হাতে গড়ে তুলেছেন এই শাখাটা। অনেক উত্থান পতনের মধ্য দিয়ে এই শাখাটি গিয়েছে। কিন্তু গত এক বছরে এই শাখাটি যেভাবে পারফর্ম করেছে সেটা অবিশ্বাস্য। এর পেছনে যেমন সবার পরিশ্রম আছে তেমনি আছে একটি মেয়ের অসাধারণ ডেডিকেশন, অক্লান্ত খাটুনি, আর বুদ্ধিদীপ্ত কিছু ডিসিশন।
প্রথম ঘটনাটা বেশ কয়েক বছর আগের। ২০০৮/৯ এর দিকে হবে। বাসে করে ক্লাসে যাচ্ছিলাম সকাল সকাল। পুরো বাস অফিসগামী মানুষ আর ক্লাসগামী ছাত্র দিয়ে বোঝাই। কোনমতে সামনের দিকে একটু জায়গা করে দাঁড়িয়ে খেয়াল করলাম মহিলা সিটে দুইজন ছেলে বসা। বাসে কোন মহিলা দাঁড়িয়ে নেই দেখে ভাবলাম থাকুক বসে। কেউ উঠলে নিশ্চয়ই সিট ছেড়ে দিবে।
ভুল ছিলাম আসলে।
একটা কথা খুব জানতে ইচ্ছে করে। একটা মেয়ে রেপড হলে আমরা খুব চেঁচামেচি করি, কেন করি? মেয়েটির সামাজিক মর্যাদা নষ্ট হয় বলে নাকি তার দেহ ও মন ক্ষতবিক্ষত হয় বলে? যদি মনে করি সামাজিক মর্যাদা নষ্ট হয়, তবে আরও একটা প্রশ্ন এসে যায় যে অন্যায় মেয়েটি করে নাই, তার জন্য সে কেন মর্যাদা হারাবে? কেন সে লজ্জিত হবে? আর যদি মনে করি তার তার দেহ-মন ক্ষতবিক্ষত হয় বলে প্রতিবাদ করি, তবে এই আমরাই কী করে ১২/১৩ বতসরের মেয়েদেরকে বিয়ে দেই? তাও আবার সমাজকে সাক্ষী রেখে? একজন রেপিস্ট তো চুপিসারে কাজ সারে, আর একজন লাইসেন্সধারী রেপিস্ট তো সমাজের অনুমতি নিয়ে দিনের পর দিন অতটুকুন শরীরের ওপর নির্যাতন চালায়! তখন কেন সবাই মুখ টিপে মজা দেখে? কেন মেয়েটির ক্ষতবিক্ষত দেহ আমাদের মনকে নাড়া দেয় না?
মেয়েদের মধ্যে এলাকাভিত্তিক ঐক্যের অভাব চোখে পড়ার মতো। আমাদের বন্ধুত্ব বা আড্ডা হয় শুধুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক। ছেলেদের প্রায় সবারই এলাকায় বন্ধু বান্ধব থাকে, এবং অন্য এলাকায় গেলেও তারা পরিচিত বন্ধুদের কাছ থেকে হেল্প নিতে পারে। একই এলাকার বাসিন্দা মেয়েদের মধ্যে একই রকম নেটওয়ার্কিং গড়ে তুলতেই আমাদের শক্তি আইডিয়ার জন্ম।
শক্তি গ্রুপ এবং নেটওয়ার্ক কারও একার নয়, প্রত্যেক শক্তি এখানে সমান, সবাই সবার বন্ধু। শক্তিকে কর্মক্ষম এবং সুন্দর রাখতে শক্তির সকলের মতামত, ইচ্ছে, পরামর্শ অথবা অভিযোগকে সমান গুরুত্ব দেয়া হয়।
আমাদের সমাজে এই নারী হয়ে ওঠার প্রক্রিয়াটি কি রকম? "ভালো" মেয়ে প্রশ্ন করে না, জোরে হাসে না, জোরে কথা বলে না, তর্ক করে না, প্রতিবাদ করে না, নিজের চাহিদার কথা মুখ ফুটে বলে না। সে জটিলতা বোঝে না, রাজনীতি তো নয়ই। তার শরীর তার লজ্জার বস্তু তাই নিজেকে আবৃত রাখে সে। পা ঢাকে, মাথা ঢাকে, তাতেও যখন হয় না তখন মুখ ঢাকে। একসময় নিজের মনুষ্যত্বটুকুও ঢাকে প্রাণপণে। হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান এণ্ডারসনের "লিটল মারমেইড" গল্পটির কথা মনে আছে কারো? সেই যে ছোট্ট জলপরী, রাজপুত্রের কাছে এবং তার সমাজের কাছে গ্রহনীয় হওয়ার জন্য ধীরে ধীরে একটি একটি করে স্বকীয়তা হারায় সে? সবশেষে হারায় তার কণ্ঠস্বর।
(আগের পর্ব- লিংক)
কিন্তু আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার ফলে সবচেয়ে অসাধারন যে বিষয়টি ঘটেছিল সেটি হলো- রান্নার উদ্ভাবন।
অফিস থেকে বের হলাম তাড়াতাড়ি ডাক্তারের কাছে যাব বলে। ডার্লিং হারবার ব্রিজের উপর হাটতে হাটতে মাথায় অনেক কিছু ঘুরপাক খাচ্ছিল, নববর্ষের ঘটনা নিয়ে। এক বান্ধবী কে দেখলাম রাগ সম্বরণ করতে না পেরে ফেসবুকে অচেনা লোকজন (পড়ুন জানোয়ার) কে সমানে গালি দিয়ে যাচ্ছে। তাও যদি রাগ কমে। যে অবস্থা, যুক্তি তর্ক দিয়ে বুঝানোর মত ধৈর্য না আসলে দোষ দেয়া যায়না।
ইউভাল নোয়া হারারি ইতিহাস পড়ান হিব্রু ইউভার্সিটি অব জেরুজালেমে। তাঁর রচিত বেস্টসেলার Sapiens: A Brief History of Humankind সম্প্রতি বেশ আলোড়ন তুলেছে। এরই মধ্যে এই বইটি প্রায় ৩০টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। বইটিতে লেখক মানব জাতির বিবর্তন থেকে শুরু করে আধুনিক যুগের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিপ্লবের নানা বিষয় অত্যন্ত দারুণভাবে বর্ণনা করেছেন। সবচেয়ে আগ্রহোদ্দীপক ব্যাপার হলো, বিভিন্ন বিশ্লেষণে তিনি ব্যবহার করেছেন বিবর্তনীয় জীববিদ্যার নানা সিদ্ধান্ত। বইটির বাংলা অনুবাদ শুরু করার দুঃসাহস দেখিয়েছি। অনুবাদ নিয়ে সকলের মতামত কামনা করছি। যে কোনো ধরনের ভুলত্রুটি শুধরে দিলে কৃতজ্ঞ থাকব।
সবাইকে পহেলা বৈশাখে ১৪২২ নববর্ষের শুভেচ্ছা। আরও একবার বৈশাখ আমাদেরকে বাঙালির সবচেয়ে বড় ও প্রাচীন সামাজিক অনুষ্ঠানে একত্রিত হওয়ার সু্যোগ দিয়েছে। এই শুভ ক্ষণেও মৌলবাদীদের একদল পহেলা বৈশাখকে অমুসলিম বা হিন্দুদের বা বিধর্মীদের উৎসব সুতরাং ‘নাজায়েজ’ বলে বন্ধ করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। যার প্রমাণ আমরা বোমা হামলা থেকে শুরু করে আরো অনেক লেখালেখি বা অনলাইন প্রচারণায় প্রতিনিয়ত দেখছি। মৌলবাদীদের অ