এক ভারতীয় প্রায়-প্রৌঢ় প্রফেসর আমেরিকায় এক কনফারেন্সে গেছেন বউ নিয়ে। বেশ ভাল হোটেলে ঘর দিয়েছে উদ্যোক্তারা, চেক-ইন করার সময় সুন্দরী রিসেপশনিস্ট মিষ্টি হেসে বলল, “প্রিয় অতিথি, আমরা আপনার সব রকম সেবায়’ই সচেষ্ট – এমনকি যদি মাঝরাত্রেও যদি আপনার বিশেষ কিছু দরকার হয় তাহলে আমাদের ফোন করে জানাবেন অবশ্যই।”
আমাদের ডকিন্সখুড়ো একটা মাথাপাগলা লোক, সেটা সবাই জানে। ট্যাঙস ট্যাঙস কথা বলে। ধম্মকম্মের নাম শুনলেই তোপ দিয়ে উড়িয়ে যেতে চায়। এইসব বেয়াক্কেলে কাজের জন্য তার কপালে যে অনন্তকাল রৌরব নরক রয়েছে সে তো বলাই বাহুল্য। কিন্তু সেসব বাদ্দিয়েও খুড়ো কয়েকটা বড় বড় বদবুদ্ধি প্রচার করে গেছেন। সেলফিশ জিন, এক্সটেন্ডেড ফিনোটাইপ এসব বইতে সেসব ফলাও করে লিখেওছেন। সেদিন আমার এক দোস্ত কইল, ‘ভাইরে, খুড়োর ভিডিও দেখি, কড়া কড়া কথা মজাই লাগে, কিন্তু কোনো বই তো পড়ি নাই! Am I missing something?’ তাই ভাবলেম, ডকিন্সখুড়োর প্রধান বৈজ্ঞানিক দুষ্টুবুদ্ধিগুলোর একটা ছোট আলোচনা করা যাক, হাজার হোক খুড়ো তো আসলে একজন জীববিজ্ঞানী!
ডিস্ক্লেইমার: প্রথমেই বলে নেই যে আমি কোন ভূতত্ত্ববিদ নই, ভূ-পদার্থবিদতো নয়ই। কিন্তু এই আর্টিকেলটা হঠাৎ করেই চোখে পড়ে গিয়েছিল সেদিন। আগ্রহী হয়ে পড়তেও শুরু করলাম। পড়া শেষে মনে হল, এটা বেশ ইন্টারেস্টিং, শেয়ার করা যায়। আর্টিকেলটা বাংলায় অনুবাদ করতে গিয়ে আবারো বাংলায় বিজ্ঞান শিক্ষার অভাব বোধ করলাম কেননা অনেক শব্দের বাংলা আমি জানিই না। তো এটা পড়ার সময় অনেক শব্দ দেখতে পারেন যা একটু জটিল, বৈজ্ঞানিক। আর আমি ভালো অনুবাদ করতে পারি না, তাই অনুবাদ কাঠখোট্টা লাগতে পারে, নিজগুনে ক্ষমা করে দিয়েন।
অধ্যায় ১ (প্রথম অংশ, দ্বিতীয় অংশ)
ক্যালটেকের প্রয়াত পদার্থবিদ রিচার্ড ফাইনম্যান একবার বলেছিলেন, দুনিয়ার সকল জ্ঞান ধ্বংস হলেও যে বৈজ্ঞানিক বিবরণটি শেষ পর্যন্ত রক্ষা করতে চাইবো সেটি হচ্ছে, “সকল পদার্থ পরমাণু দিয়ে তৈরি। পরমাণুরা কোনো জ্বালানি ছাড়াই নিয়ত ঘূর্ণনশীল এক একটি অতিক্ষুদ্র কণা। সামান্য দূরত্বের পরমাণুরা একে অপরকে আকর্ষণ করে, কিন্তু খুব কাছে নিয়ে আসলে তারা আবার একে অপরকে বিকর্ষণ করে।” মৃতপ্রায় নক্ষত্রদের একেবারে বাইরের দিকে, যেখানে সবকিছু অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা, সেইখানে নিউক্লিরা ইলেকট্রন জোগাড় করে পরমাণুতে পরিণত হয়। যখন পরমাণুগুলির মধ্যে বিদ্যমান আকর্ষণ ও বিকর্ষণ বলের ভারসাম্য তৈরি হয়, তখন তারা জোড়া লেগে লেগে অণু সৃষ্টি করে।
কার্বনের প্রাগৈতিহাসিক গল্পের মতন একটি চমৎকার গোছানো বৈজ্ঞানিক আখ্যানের পূর্ণতা পেতে দশকের পর দশক সময় লাগে। এই সময়ে প্রস্তাবিত নানান প্রকল্পের (hypothesis) মধ্যে কোনটি বেশি গ্রহনযোগ্য তাই নিয়ে চলে তুমুল প্রতিযোগিতা। বিজ্ঞানিরা হন্যে হয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের পক্ষে বিপক্ষে উপযুক্ত প্রমাণ খুঁজে বেড়ান। বিজ্ঞানিরাও মানুষ, তাদের জীবিকার চিন্তা করতে হয়, তারাও ভুল করেন, প্রভাবিত হন। কিন্তু আশার কথা হচ্ছে, বিশ্বজুড়ে শত শত বছর ধরে আমরা এমন এক বিজ্ঞানের চর্চা করছি যার লক্ষ্য হচ্ছে সমস্ত ব্যক্তিপ্রবণতা আর ভুলত্রুটি দূর করে কেবল বাস্তব প্রমাণ আর অকাট্য যুক্তিতর্কের উপর ভিত্তি করে একটি ক্রমবর্ধমান জ্ঞানের সমষ্টি গড়ে তোলা। পেশাদার বিজ্ঞানির দল শুধুমাত্র সম্ভাবনাময় চিন্তাধারাকে গ্রহন করেন। বাস্তবপ্রমাণহীন ধারণাগুলি সময়ের ভাগারে নিক্ষিপ্ত হয়।
কাগজের মতো এরকম চমৎকার একটা জিনিস খাওয়া যায় না কেন? অথবা পলিশ করা কাঠ? নারকেলের ছিবড়ে? পাটের শলা খাওয়া যায় না কেন?
ইট-লোহা খেতে না পারার স্পষ্ট কারণ আছে। ওতে শরীরের প্রয়াজনীয় পুষ্টি উপাদান নেই। কিন্তু কাগজ তো গাছ থেকে তৈরি। নারকেলের ছোবড়াও তো গাছেরই অংশ। এমন কি কাঠও! এই তিনটে জিনিসই শর্করায় একেবারে ঠাসা! তাহলে?
ব্যাপারটা বুঝতে গেলে আগে বুঝতে হবে রেলগাড়ি।
কয়েক মাস আগে এক সদ্য পরিচিতের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। যেচে পড়ে ব্যক্তিগত বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করায় তার উপর যথেষ্ট বিরক্ত ছিলাম! "কী হে! কী অবস্থা! এখন তো একটু ব্যস্ত আছি, পরে কথা হবে..." টাইপ কথা বলে কেটে পড়ার তাল করছি, আচমকা লোকটি একেবারে আমার হৃদয়ের দুর্বলতম কোনে ঘাই মেরে বসল!
আমার পরে দেশ রসাতলে যাক। ফ্রঁসোয়া মিতেরা সৎ লোক ছিলেন বলেই সত্য কথাটা বলে গেছেন। বাকী সবাই এই সংকল্প গোপন রেখে, মুখে ভবিষতের সুন্দর পৃথিবীর স্বপ্ন দেখান আমাদেরকে। পৃথিবীতে ভূমি বা দেশ দখল এখন আর জনপ্রিয় দশুতা নয়। খনিজ কাঁচামালের উৎস দখলের প্রতিযোগীতাও কারিশমা হারাচ্ছে। গ্লোবালাইজেশনের ফলে শুভ মিউনিখের বাংলা-মনোহারী দোকানে পেয়ে যায় ফ্রোজেন পরোটা। কাঠালের বীঁচি, কচুর লতা ফ্রজেন সব্জী প্যাকেটে সব মসলার সাথে গুড়ো চিংড়িও থাকে। সব কিছুই এখন হাতের নাগালে।
[justify]১
আমাদের সূর্য এখন প্রায় মাঝবয়েসী নারীর মতন, মনিকা বেলুচ্চির মতন সূর্য আমাদের এই প্রপঞ্চ শীতে আন্তরিক রোদ নিয়ে আসে, আমরা সেই রোদের পানে সাইকেলআরোহী বালকদের মতন উষ্ণ কাতরতা নিয়ে চেয়ে থাকি। আমাদের সূর্যের বয়েস এখন প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন, তাকে পাড়ি দিয়ে হবে কম বেশি আরো এতগুলো বছর, অর্থাৎ সূর্যের বয়েসকাল আনুমানিক দশ বিলিয়ন বছর। কিন্তু বয়েসের শেষসীমায় পৌঁছে সূর্য আর মাঝবয়েসী নারীর মতন আকাঙ্ক্ষার হবে না, সে বদমেজাজি অত্যাচারি প্রাচীন জমিদারদের মতো লাল হয়ে যাবে, লাল দানবে পরিণত হবে।
[justify]চতুর্থ অধ্যায়: বিকল্প ইতিহাসসমূহ (Alternative Histories)