১ম পর্বের গল্পটা শেষ হয়েছিল সিলিকনের বিকল্প কি আসলেই সম্ভব-সেই প্রশ্ন রেখে
আমরা জেনেছিলাম, কোন বস্তু বৈদ্যুতিকভাবে পরিবাহি, উপ-পরিবাহি বা কুপরিবাহি হতে পারে। পরিবাহি বস্তুগুলোর দুমাথায় ভোল্টেজ পার্থক্য তৈরী করে দিলেই ইলেকট্রনগুলো প্রবাহিত হতে থাকে, যতক্ষণ পর্যন্ত ঐ ভোল্টেজ পার্থক্য বজায় রাখা হয় ততক্ষণ এই প্রবাহ চলে। আর কুপরিবাহি বস্তুগুলো থেকে এমনি করে কোন ধরনের পরিবাহিতা পাওয়া যায় না। উপ-পরিবাহিগুলো থেকে কিছু পরিবাহিতা পাওয়া যায় ঠিকই, তবে এর চেয়ে পরিবাহি বস্তুগুলো অনেক বেশি কাজের। কিন্তু পরিবাহিতা নিয়ন্ত্রণ করার প্রশ্ন যখন আসে তখন এই পরিবাহি বস্তুগুলো তেমন কোন কাজে আসে না। কেন? কেননা, পরিবাহিতা তাদের সহজাত আর তাই সেই পরিবাহিতা নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। আমরা জেনেছিলাম, ডোপিং নামে এক ধরনের পদ্ধতি, যেটা আসলে 'খাঁটি বস্তুর সাথে ভেজাল মিশ্রণের পদ্ধতি', সেই পদ্ধতিতে উপ-পরিবাহি, যেমন সিলিকনের পরিবাহিতা চমৎকার ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় আর উপ-পরিবাহির পরিবাহিতাও বাড়ানো যায় পরিবাহি বস্তুগুলোর মত।
মাঠে মাঠে ঘোরা আমার ছেলেবেলার অভ্যাস। আমাদের একটা বাগান ছিল। একপাশে বাঁশবন আরেক পাশে দেশি আমের সারি। ঠিক দুপুরের বাগানে বসে আপন মনে খেলতে ভালবাসি। ঠিক খেলা নয়, ছেলেমানুষী। বুনো লতা পাতার গায়ে হাত বোলানো, কোন গাছে কটা ফল ধরেছে তা গুণে দেখা, শুভ্রপালক শাহ বুলবুল পাখির পেছনে বাগানময় ঘোরা--ছেলে মানুষী ছাড়া কী! নিরিবিলি খেলতে ভালবাসতাম, তেমনি ভয়ও পেতাম খুব। বেঁশেভূতের ভয়। মধ্যদুপুরেই তাদের যত বাহাদুরি।
খুব সামান্য সংক্রমণ আর সাধারণ রোগেও এখন মানুষ মরে যাবে। যেমন হতো ৫০ বছর আগে। যেসব সাধারণ রোগকে আমরা পাত্তা দিতে শিখিনি, খুব অবাক হয়ে এখন আবিষ্কার করব সেইসব রোগেই আমাদের প্রিয়জনেরা মরে যাচ্ছে!
গত পর্ব শেষ করেছিলাম সিলিকনের বিকল্প কি করে সম্ভব-সেই প্রশ্ন রেখে ----
তাহলে তারপর থেকেই শুরু করা যাক।
[আইজ্যাক আসিমভ আমার অন্যতম প্রিয় লেখক। তার 'হাঊ ডিড উই ফাইন্ড আউট' সিরিজের 'যেভাবে আমরা জানলাম পৃথিবী গোলাকার' বইটি অনুবাদের একটি প্রচেষ্টা নিলাম। আজ শেষ পর্ব]
যেভাবে আমরা জানলাম পৃথিবী গোলাকার- আইজ্যাক আসিমভ (দ্বিতীয় পর্ব)
ডিসক্লেইমারঃ মলিকিউল-এটম এর বাংলা 'অনু-তারেকানু' লিখবো কিনা কিংবা এমরফাস শব্দটির সঠিক বংগানুবাদ 'জগাখিচুরি' আর ক্রিস্টালাইন শব্দটির বংগানুবাদ 'লাইনে-আসা-সুশীল' হবে কিনা এসব নিয়ে বিস্তর ভেবেছি, কোন কুলকিনারা করতে পারি নি। তাই অনেক শব্দের বংগানুবাদ করিনি, যেগুলো যেভাবে করেছি সেগুলো ভাল নাও হতে পারে। সেজন্যে দুঃখিত। পরামর্শের দুয়ার খোলাই রইলো।
সকাল ৬টা পঁচিশ, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর, ২০৩৬।
প্রথম পর্বঃ যেভাবে আমরা জানলাম পৃথিবী গোলাকার- আইজ্যাক আসিমভ
[আমার অন্যতম প্রিয় লেখক আইজ্যাক আসিমভ। তার 'হাঊ ডিড উই ফাইন্ড আউট' সিরিজের 'যেভাবে আমরা জানলাম পৃথিবী গোলাকার' বইটি অনুবাদের একটি প্রচেষ্টা নিলাম।তিন পর্বে সমাপ্ত করার আশা রাখি।]
দূরে বিলীন হওয়া জাহাজের গল্প
বৈশাখ মানেই সূর্যের বাহাদুরী। ধানকাটা সারা। খালি মাঠে খাঁ খাঁ রৌদ্রের দোর্দণ্ড প্রতাপ। কৃষকের ব্যস্ততা নাইকো আর। বাগানজুড়ে শুকনো পাতার আস্তর। তপ্ত মরুর নির্জনতা ভর করে মাঠজুড়ে। বাঁশঝাড়ের কঞ্চি-পাতার জটলা থেকে নেমে আসা শ্যামা পাখির সন্তর্পণ পদচারণা। প্রাণহীন দুপরে খসখসে মৃদু ভৌতিক আওয়াজ। নির্জনতার বুক চিরে হঠাৎ ছাতারে দলের তীক্ষ্ণ চিৎকার। শিমুল গাছের মগডালে বাজপাখির জাজ্বল্যমান শ্যেন দৃষ্টি। হঠাৎ রকেটের গতি ভর করে তার ডানায়। ছাতারে দলের পাখায় পিস্টনের উল্লাস। ভীত প্রস্থান। জেট বিমানের মত ডাইভ দেয় বাজপাখি, ছোঁ মারে। বাজের নখরে আটকে থাকা ইঁদুর পুর্ণ আত্মসমর্পণে পৃথিবীকে বিদায় জানায় বৈশাখী হাওয়ায় ভেসে। সেকি জানে এই মৃত্যুই তাঁকে আকাশজয়ী করেছে। করেছে অনন্য। দোপেয়ের লাঠির আঘাতে, গর্তে ধুঁকে ধুঁকে, ড্রেনে পচে কিংবা শ্বাপদের নখরে ছিন্নভিন্ন হওয়ার চেয়ে আকাশজয়ী হয়ে মরা কি শ্রেয় নয়? বাজপাখি উড়ে যায় গ্রীষ্মের লেলিহান শিখার দিকে। বৈশাখের টকটকে বহ্নিশিখা যেন দাউ দাউ করে জ্বলছে কৃষ্ণচূড়ার ডালে ডালে। বাজপাখি সেই আগুনে আত্মাহুতি দেয়; মরণের জন্য নয়, রাজসিক ভোজন পর্বটা মহিমান্বিত করতে।
হেনরিয়েটা অসাধারণ কিছু করে বসে অমর হননি। ওনার কেবল একটা রোগ হয়েছিল। ক্যান্সার। জরায়ু মুখে। জরায়ুর মুখকে যদি একটা দেয়াল ঘড়ির সঙ্গে তুলনা করা যায় তাহলে হেনরিয়েটার প্রাথমিক টিউমারটি ছিল চারের কাঁটার কাছাকাছি।
[জিএম এবং বিটি নিয়ে পাঠকদের মধ্যে কিছু অনিশ্চয়তা লক্ষ্য করলাম আগের পর্বে। সে জন্য এই আলোচনার আগে বিষয়টা একটু বলে নেই। আমার তথ্যসূত্র জার্মান ভাষা থেকে নেয়া, কাজেই ইংরেজী উচ্চারণ এবং বানানে হেরফের হতে পারে।