দুপুর বেলা গরুর গোস্তো দিয়ে ভরপেট খেয়ে একটা ভাত ঘুম দিয়েছিলাম। দিনে দুপুরে মশার অত্যাচারে ঘুম ভেঙ্গে গেল। ডেঙ্গু মশা নিয়ে ক'দিন চিল্লাপাল্লা করেই সেই আন্দুলন থেমে গেছে বলে একটু মেজাজ খারাপ হচ্ছিল। রাগ কমাতে রওনা দিলাম বইমেলার পথে। একটু আয়েশ করে যাওয়ার আশায় সিএঞ্জি দাম দর করতে যেয়ে আরেক দফা মেজাজ খারাপ। শেষমেষ ভাঙ্গা হাত নিয়ে ধাক্কাধাক্কি করে বিহঙ্গতে উঠলাম। শাহবাগে নেমে ভাবলাম টিএসসি পর্যন্ত এই দীঈঈর্ঘ পথ হেঁটে যাওয়া ঠিক হবে না। বহু কাকুতি মিনতি করার পর এক ব্যাক্তি আমাকে তার রিক্সায় ওঠার অনুমতি দিলেন। বার দশেক প্যাডেল চাপার জন্য তাকে দশটি টাকা গুনে গুনে দিতে হলো।
ইয়ার ফাইনালের ক'দিন আগে একদম টিপিক্যাল বাংলা সিনেমা কায়দায় টেলিগ্রাম এলো, ফাদার ইল, কাম শার্প। নিচের ঠিকানাটা উত্তরের এক জায়গার। খোঁজ নিয়ে জানা গেলো কদিন আগে বাবা বদলি হয়ে ওখানে গেছেন আর গিয়েই অফিসের বদলে হাসপাতালে। সেই ধ্যাদ্ধেড়ে গোবিন্দপুরে চব্বিশ ঘণ্টায় বাস যায় একখানা, তাও কেবল রাতের। উপায় নেই বলে বিরস মুখে তাতেই চাপতে হল। টিকেটে লেখা আছে আরামদায়ক সুপার সেলুন কোচ। একটু পরেই দেখি সুপার সেলুন কোচ
"One small fact: you are going to die. Despite every effort, no one lives forever. Sorry to be such a spoiler.
My advice is when the time comes, don't panic. It doesn't seem to help!"
অফিসে বসেই শুনলাম খবরটি। তখনও লাঞ্চ করিনি। অনেকক্ষন 'হা' করে বসে থাকলাম। বুঝে উঠতে পারছিলাম না, ঠিক কি হলো বা কি হতে যাচ্ছে। অফিসের জামাতপ্রেমীদের মুখে ফিঁচেল হাসি, কেউ অবশ্য আমার সামনে পড়ছে না ভয়ে। আর লীগ-বিরোধীদের একরাশ উচ্ছাস নিয়ে জিজ্ঞাসা - ' স্যার, আপনি যে বলতেন জামাতের অনেক টাকা, আসলেই সত্যি। দেখলেন কেমন করে হাসিনাকেও কিনে নিলো!' এই বলে শুরু হলো তাদের ঘটনা ব্যাবচ্ছেদ। আমি কোনো কথা না বলে বোঝার চেষ্টা করছি, অনেকটা বোবার মতো - শুধু এদিক ওদিক তাকিয়ে। পুরোপুরি 'পাজলড' যাকে বলে, আমার অবস্থা সেই রকম!
আজ সরস্বতী পূজা, বাণী বন্দনার সাথে কিশোর প্রেমের মেলামেশার দিন । এখন দেখি অনেকে বলছে বাঙালির ভ্যালেন্টাইন দিবস। কিন্তু ভ্যালেন্টাইন দিবস হল শুধুই প্রেমের দিন। জোর গলায়, গোলাপ আর উপহারের নৈবেদ্য সাজিয়ে প্রেমের দাম্ভিক ঘোষনা , আমি শুধু আমি-ই আছি। বসন্ত পঞ্চমীর কিশোর প্রেম হল তাদের জন্য যাদের "জয় করে তবু ভয় " যায় না।
বেলা তিনটায় 'লাঞ্চো' সেরে অফিসে বসে একটু ঝিমাচ্ছিলাম। তারিক আজিজ এসে প্রস্তাব দিল চলেন বইমেলায় যাই। তার কুপ্ররোচনায় অফিস ফাঁকি দিয়ে বইমেলায় চলে গেলাম। ২০১৪'র মেলায় আজকেই প্রথম যাওয়া। সেই আনন্দে দু'শ টাকা দিয়ে একটি সিএঞ্জি চালিত অটোরিক্সা ভাড়া করে ফেললাম। এবারের মেলা দুই অংশে বিভক্ত। শিশুতোষ বইয়ের প্রকাশনী এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানের স্টল বাংলা একাডেমির ভেতরে আর বাকিরা সবাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। একাডেমি চত্তরে আজকে যাইনি। উদ্যান বেশ ফাঁকা ফাঁকা, প্রশস্ত। হারেরেরে রেরে করে "গ্রন্থ মেলা গ্রন্থ মেলা অমর একুশে গ্রন্থ মেলা" টাইপের থিম সং এর উৎপাত নাই এবার।
সপ্তাহটা খুব খারাপই গেল। ছ্যাঁক খেতে খেতেই কিভাবে যেন কাটিয়ে দিলাম। (দুষ্টু লোকেরা তফাত যাও, ছ্যাঁক আগুনেও খাওয়া যায়, হুঁহ)। প্রথমটা খেলাম গত শনিবার বিকেল ঠিক ৫টায়। বিস্তারিত বলা যাবেনা, শরমের কথা। আর শেষটা গতকাল বিকালে, তাও উপর্যুপরি। সাইড এফেক্ট হিসাবে আপাতত বিজ্ঞানের খেতা পুড়ি। বিজ্ঞানের কাঠখোট্টা গল্পের চাইতে মানুষের গল্প অনেক মজার। আর সে গল্প যারা বানায় তারা থাকে অনেক অনেক দূরে, আফসোস।
একটা কাটা দাগের চিহ্ন মুছে যেতে কতদিন সময় লাগে? কিংবা আদৌ কি মুছে যায়?
[justify]প্রহর শেষের আলোয় রাঙা সেদিন চৈত্র মাস ছিল কিনা আজ আর মনে নেই—কিন্তু সেই দ্বি চক্রের সাথে আমার চার চক্ষুর মিলন ঠিকই হয়েছিল কোন এক গোধূলি লগনে। ফলাফল দুম করে প্রেমে পড়েছিলাম তার সুদর্শন দুই চাকার। আসলে বলছিলাম সাইকেলের কথা...
তখন আমি মাত্র ফাইভে পড়ি। সারাক্ষণ পাড়ার মাঠে দাপিয়ে বেড়াই, এমন সময় একদিন পাড়াত এক বন্ধু নীল রঙের ছোট এক সাইকেল নিয়ে হাজির হল মাঠে। ছোট্ট সেই সাইকেলের মালিকের কি গর্বিত চলাফেরা, আলতো করে হাতে হ্যান্ডেল ধরে রেখে সারা মাঠ ঘুরে বেড়াচ্ছে। দেখে ঈর্ষায় আমিও বেগুনি হয়ে গেলাম।