২০১০ সালের সূচনাতে, চট্টগ্রাম গেলাম সায়ীদ স্যারের সঙ্গে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে। ভ্রমণের আরেক সঙ্গী অভিনেতা খায়রুল আলম সবুজ(আমাদের পাড়াতো বোনকে বিয়ে করার সুবাদে আমি যার শ্যালক হই!)।
তিন পুরুষ ধরে শহুরে মার্জিত, কেতাদুরস্ত ডাক্তার প্রসঙ্গক্রমে বলছেন- ' নারী স্বাধীনতা ফালতু কথা, সংসার একটা যুদ্ধেক্ষেত্র, এখানে পুরুষের একক কর্তৃত্ব থাকতে হবে; তা না হলে বিপদ অনিবার্য। আর একটা কথা মনে রাখবেন, সংসার ঠিক রাখতে হলে কর্তার রোজগার কর্ত্রীর চেয়ে একটু বেশি থাকা উচিত।'
[justify]
আজ সারাদিনই টিপটিপ বৃষ্টি। ঝড়ের লক্ষণ ছিল না মোটেও। রাত সারে ৯ টায় কোথা থেকে যেন ঝড়ো বাতাস এসে হামলে পড়লো! সে কি বাতাস!! আছি পাঁচ তলায় এবং বাসার দক্ষিণ ও পশ্চিম দিকটা ফাঁকা,কাছাকাছি বিল্ডিং নেই। শোঁ শোঁ আওয়াজ এসে যেন আছড়ে পড়ছে! কত যে ক্ষোভ তার!!
গতকাল রাতে ঘুমাতে যাবো, এমন সময় ফেসবুক চ্যাটে নক করে আমার বোন জানালো, ঋতুপর্ণ আর নেই!
আজকাল মাঝে মাঝেই নিজেকে খুব অসহায় লাগে। জাপটে ধরে নিরাপত্তাহীনতা। মনে হয় দিন দিন যেন বেঁচে থাকাটা আরও কঠিন হয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন শুনতে হয় এদিক-ওদিক, খুচরো-বড়, চেনা-অল্প চেনা- অচেনা মৃত্যুর অথবা জীবনের বিপন্নতার খবর। ছোটবেলায় গাছপালা, পশুপাখি, দাদু-দিদা মিলিয়ে মিশিয়ে প্রাণের যে বি-শা-ল বৃত্ত ছিল, তা যেন ছোট হতে হতে আমাকে ফাঁস হয়ে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেলছে। কি জানি হয়তো তখনও চারপাশটা এরকমই ছিল, শুধু আমার চোখে ছিল রঙ-চশমা।
আমাদের সময়ে পরীক্ষায় এ, বি, সি, ডি না দিয়ে নাম্বার দেবার নিয়ম ছিলো। বোর্ডের পরীক্ষায় প্রাপ্ত বিভিন্ন বিষয়ের এসব নাম্বার যোগ করে একটা মেধাতালিকা করা হতো। সেই তালিকার প্রথম ২০ জনকে বলা হতো, ওরা স্ট্যান্ড করেছে। তো তেমনই এক ফলাফল ঘোষণার দিনে আমার এক বন্ধুর বাড়ীতে থম থমে অবস্থা। চুলায় হাঁড়ি চড়ছে না। বেচারা নাকি কয়েক মার্ক্সের জন্য প্রথম হতে পারেনি। শুধু বাড়ির লোকই না, এলাকাবাসীও হতাশ। ওদিক
আমার গোল্ডফিশ মেমরি। মানুষের নাম চেহারা মনে থাকে না। দেখা যায় চেহারা দেখে চিনেছি কিন্তু কিছুতেই নাম মনে আসছেনা। কার সাথে কোথায় পরিচয় সেটাও মনে করতে পারিনা। দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে টাইপ কিছু হলে লজ্জায় পড়ে যাই, ডাকবো কিভাবে, নামই তো মনে নাই! আর যেখানে যার সাথে পরিচয় তার বাইরে অন্য কোনও পরিস্থিতিতে দেখা হলে আপনি নিশ্চিত থাকেন আপনাকে আমি চিনতে পারবো না। কখনও পারিনাই, দুই একজন স্পেশাল কেইস ছাড়া মনে হয় কখনই পারবো না।
জানিনা কী লিখবো; ভয়ানক কষ্ট হচ্ছে আসলে। একজন দীর্ঘদেহী প্রানবন্ত মানুষের হাসপাতালে জীবন্মৃত্যর সন্ধিক্ষণে শুয়ে থাকার দৃশ্যটা চোখের সামনে সব ঝাপসা করে দিচ্ছে বার বার!
সচলদের মধ্যে আমার ব্যক্তিগত আলাপ সবার আগে সিমনের সাথে। ফেইসবুকে এড করেছিল। ২০০৯ এর দিকে প্রথম ব্লগ চিনি আমি।
সিমন একদিন অফিস ফাঁকী দিয়ে শাহবাগে মিছিল করছিলো, যতদূর মনে পড়ে টিভি ফুটেজে সেটা দেখে তার অফিস তাকে তিনদিনের একটা শাস্তি দিয়েছিলো। তিনদিন তার অফিসে যাইতে হয় নাই। সেই তিনদিন সে প্রায় পুরোটা সময় শাহবাগ আন্দোলনে ছিলো। (তখন তার অফিসকে গালি দিলেও সিমনের সড়ক দুর্ঘটনার পর তার অফিস যেভাবে তার পাশে দাঁড়িয়েছে... তা অকল্পনীয়। সিমনের অফিস কর্তৃপক্ষকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি)