[বিশ্রামরত সিংহ। ছবিসূত্র]
আমার অনেকগুলো বন্ধু আছে যাদের বয়স ধরতে পারেন ১০-এর নিচে। বন্ধু হিসেবে ওরা অত্যন্ত চমৎকার, কিন্তু সমস্যা হয় বন্ধুত্ব শুরু করা নিয়ে। লাজিমার কথাই যদি বলি- তার সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে হয়েছে অনেক কষ্টে। তখন তার বয়স মাত্র চার। উত্তরার একটি রেস্টুরেন্টে বসে কথা বলতে বলতে তাকে বন্ধুত্বের প্রস্তাব দেয়ার পর সে কিছুক্ষণ চিন্তা করে উত্তর দিল- “তুমি আমাকে রাতে ফোন দিও। আমি তখন জানাবো”। রাতে তার মার মোবাইলে ফোন দেয়ার পর বললো, “উফ্, আমি তো এটা এখনো ভাবি নি। তুমি আমাকে কালকে ফোন দিও”। কী আর করা! পরেরদিন সকালে ফোন দেয়ার পর সে আরেকটু চিন্তা করে বললো, “ঠিক আছে, তুমি যখন বলছ, তখন আর কী করা!” সেই থেকে লাজিমা আর আমি বন্ধু। বন্ধুত্বের খাতিরে আমি তাকে মাঝেমাঝে ফোন করলেও তার দায়িত্ব শুধু ফোনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। সেই তখন থেকেই সে মাঝেমধ্যে কার্ড পাঠায়। ফেসবুকেও যোগাযোগ আছে তার সাথে। আমার ফেসবুক প্রোফাইলে একজনই আছে আত্মীয় হিসেবে- সে আমার ভাগনী- লাজিমা।
[justify]
------------------------------------------------------
[justify]
।।১।।
এক সময়ে ডায়েরি লিখতাম। সে অনেক অনেক দিন আগের কথা। ঢাকা শহরে তখন আকাশ ছোঁয়া বাড়িঘর ছিল না। মানুষজন দোতালার ছাদে উঠেই আকাশ স্পর্শ করতে পারতো। ডিজুস ছিল না, হিন্দি মেগাসিরিয়াল ছিল না, শপিং মল ছিল না, টি-২০ ছিল না, ইন্টারনেট ছিল না – বলা যায় আমরা তখন সর্বহারা ছিলাম। সেই সময়ে রাতে ঘরে ফিরে একটা সিগারেট ধরিয়ে মুখের উপর গল্পের বই নিয়ে শুয়ে থাকা ছাড়া আর তেমন কোনো বিনোদন আমরা আবিষ্কার করতে পারিনি।
প্রতিবার প্লেনে উঠতে গেলেই মুখোশটা খুলে ফেলি আমি,
তখন আর মনে মনেও বলিনা, ' মৃত্যুরে ডেকেছি আমি প্রিয়ের নাম ধরে '
ভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবার পর হঠাৎ করে আমি বুঝে ফেলি
স্বর্গ খুব একটা আহামরি জায়গা নয়, শীতল এবং নিঃসঙ্গ
তার চেয়ে ঢের ভাল আমাদের গ্রামের খেলার মাঠ এবং শহরের অলি-গলি
গ্রামে কিংবা শহরে মানুষের গল্প আছে, আছে কোলাহলের উষ্ণতা।
আমার আগের লেখাটি অনেকেই বোঝেননি। এ থেকে দুটো অনুসিদ্ধান্ত পেতে পারি। এক, লেখাটি বিরাট হাই থটের; দুই লেখাটি একেবারেই লো-থটের। প্রথম বক্তব্য সত্য হওয়া কঠিন, কেননা আমার বয়স হয়েছে। বয়স্ক রমণীর ক্ষেত্রে হাই-হিল যেমন হাস্যকর না হলেও কৌতুহল-উদ্দীপক, বয়স্ক পুরুষের বেলাতেও হাই-থট সন্দেহজনক। তবে দ্বিতীয়টি সত্য। কেননা, কেউ কেউ একটু একটু বুঝেছেন বলে মনে হলো, মানে বল এতোটাই লো-তে এসেছে যে- এটা ক্যাচ না ড্রপ ক্যাচ তা নিয়ে আম্পায়্যার বেশ চিন্তিত। যাই হোক- পুরোনো দিনের গান গেয়ে লাভ নেই; শখ করে আঙ্গুরীবালা কিনলেও শোনা হয় আসলে লেডি গাগা। তাই আলোচনা সামনে বাড়ুক।
আমি যে বহুতল ভবনে থাকি তার পাঁচটা লিফটের একটায় উঠতে গেলে বীজগণিত জানা লাগে। সূত্র y= (x+1)। Y হল যে তলায় পৌঁছাবেন, আর x হল যে তলার বাটনে চাপ দেবেন। আপনি ভাবছেন এ আবার কি হেঁয়ালি, যে তলা চাপব সেই তলাতেই তো লিফট থামবে। এতো সহজ নয়, এই লিফটের সূত্র আলাদা। দুই এ টিপলে তিনতলায় থামবে, বিশ এ টিপলে একুশ। সুতরাং মনে করি আপনি যাবেন ২৩ তলায়, অর্থাৎ y = 23। কিন্তু সূত্র অনুযায়ী আমরা জানি y = (x+1), সুতরাং (x+1) =23 বা x = 22। অর্থাৎ লিফটে চাপতে হবে বাইশ। হুঁ হুঁ, অংক জানতে হয়।