জাফর স্যারের আজকের লেখা পড়ে মনে হল খসড়া আর আনুষ্ঠানিক শিক্ষানীতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলনা করে দেখি।
মোবাইলটা তখনও হাতে ধরাই থাকে। শুধু মনে হয়, আমার জগৎ সংসার চেনা পৃথিবী সব উল্টে গেছে। আমি শেষ হয়ে গেছি! আমার আর কিছু নাই! ভেতরের এমন হু হু করা শূন্যতা আমাকে জড়িয়ে ধরে, ভরহীনতায় টলে উঠি। তারপরও, কী এক জেদে সঙ্গাহীন হই না বা আছড়ে পড়ে যাই না। নিজের চোখের তারায় একটি মুখ জ্বলজল করে। আমি প্রবল ভাবে সে মুখকে নিজের অনুভুতিতে আনতে চাই।
টুকটুক করে লাগেজ গুছাই। নাহ, উইন্টার ব্রেক না, স্টেট বদলাচ্ছি। পড়াশোনার পাট চুকলো, এবার ডর্ম থেকে তো খেদিয়ে দেবেই।
দু'বছর আগে এরকম একটা সময়ে লাগেজ গুছিয়েছিলাম দেশ ছাড়ব বলে। ২৬ বছরের একটা জীবনকে দুটো স্যুটকেসে তুলে আনার গল্পটা খুব সহজ ছিলো না। দিশেহারার মতো বারবার তাকাচ্ছিলাম বুকশেলফগুলোর দিকে। এদের ছেড়ে থাকবো কী করে? কতো অসংখ্য প্রিয় বই, গান্ধর্বী কী আবোল তাবোল...বেছে নেবো কাকে, সঙ্গী করে? শেষমেশ নেওয়া হয়নি কাউকেই, ওজনবাহুল্যের গেরোয় পড়ে।
ভেবেছিলাম, থাকগে। মানুষ ছেড়ে যেতে পারছি, জড়বস্তুতে আর কী এসে যায়!
সেলিনা পারভীন যাবার আগে ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছিলেন, সুমন তুমি মামার সাথে খেয়ে নিও। আমি যাব আর চলে আসব। গিয়েছিলেন কিন্তু আর ফিরে আসেন নি। পায়ের সাদা মোজা দেখে চেনা গিয়েছিল তাকে। এমনিতে চেনার উপায় নেই। চোখ বাঁধা, নাক মুখের কোন আকৃতি নেই, স্তনের অংশ কাটা। তাঁকে যখন বেয়োনেট দিয়ে খোঁচানো হচ্ছিল তিনি তখন বারবার তার শিশু সন্তানের কথাই বলছিলেন।
১৭ ডিসেম্বর ১৯৭১, শুক্রবার
আজ ভোরে বাসায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা তোলা হল। মঞ্জুর এসেছিলেন, বাড়িতে যারা আছেন, তারাও সবাই ছাদে উঠলেন। ২৫ মার্চ থেকে ফ্ল্যাগপোলটায় বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে আবার নামিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছিলাম, সেই ফ্ল্যাগপোলটাতেই আজ আবার সেদিনের পতাকাটাই তুললাম।
যে শহরে আমার শৈশব কেটেছে সন্ধ্যে বেলায় শিয়ালের হুক্কাহুয়া শুনে, ছুটির দিনে ঘুম ভেঙ্গেছে লেসফিতাওয়ালার দরাজ কণ্ঠে তা বিশ্বায়নের মোড়কে কতটুকু ঢেকেছে তা হয়ত প্রতিনিয়তই অনুভূত হবে। তবুও ভাবি নিশ্চিত দেখতে পাবো আমগাছের ডালে বানানো কাকের বাসা, সিঁড়িকোঠার দেয়ালের খাঁজে চড়ুইয়ের বাসা। শুনতে পাবো আবার কাঁচা বাজারের কোলাহল, বন্ধু পরিবেষ্টিত হয়ে হাতে তুলে নিতে পারবো আবার টং ঘরের চায়ের পেয়ালা।
একরাশ গল্প নিয়ে আমি ফিরে আসবো বর্তমানে। হৃদয়ের বায়োস্কোপ খুলে দেখব আমি আমার আবাল্য প্রিয় ঢাকা, অসম্ভব ভালবাসার নগরী। কিছু সময়ের জন্য ভুলে যাবো শেকড়বিহীন প্রবাস জীবনের বেদনা।
প্রথম চাকমা ভাষার চলচ্চিত্র 'মর ঠ্যাংগারি' সেন্সর বোর্ডে আটকে যাওয়ার খবর শুনে আমার মনে কৌতুহল জেগেছে সেন্সর বোর্ডে সাধারণত কি কি কারণে কাটাকুটি করা হয় সেটি জানার জন্য। তারপর তাদের ওয়েবসাইটে গিয়ে এ বছরের কাটাকুটির তালিকা পেয়ে ভাবলাম সবাইকে দেখাই। বেশ ইন্টারেসটিং!