বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতি এবং বিভিন্ন রকম প্রোপাগান্ডার পেছনে যে অপশক্তি অনলাইনে তৎপর, বিশেষ করে ধর্মের ছদ্মাবেশে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে যে বিশেষ গোষ্ঠী তৎপর – সেসব দাতাল শুওরদের কাজ কর্মের কিছু উদাহরণ দেখেছি আমরা এ লেখার গত পর্বে। আজ আমরা জানবো এসব শুওরছানাদের নিয়োগ, বিকাশ এবং অনলাইন প্রোপাগান্ডার কিছু নমুনা।
১।
২৩ বছরের একজন যুবক কেমন হওয়া উচিত? বুকভরা দেশপ্রেম থাকবে, মানুষের প্রতি ভালবাসা থাকবে, নম্র হতে পারে কিংবা উদ্ধত। যেমনই হোক না কেন, ২৩ বছরের যুবক শুনলে আমরা কল্পনা করি দু’চোখ জোড়া বিশাল বিশাল স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে থাকা প্রাণপ্রাচুযর্ময় একজন মানুষকে। আসুন আমরা দু’জন ২৩ বছরের যুবকের সাথে পরিচিত হই।
[left]একটি গল্প দিয়ে শুরু করি...
বছর পনের আগের কথা। তখনও অনেক ছোট আমি, ক্লাস সেভেন কি এইট এ পড়ি। সেই সময়ে প্রতিদিন গভীর আগ্রহে সন্ধ্যার জন্য অপেক্ষা করে বসে থাকতাম, কখন আব্বা অফিস শেষে বাসায় ফিরবে। প্রতি রাতে খাবার পরে আব্বা আমাদের তিন ভাই বোন কে নিয়ে গোল হয়ে বসতেন, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতেন, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ,কখনো বা নিছক রুপকথা,গল্প বলার ফাঁকে ফাঁকে নানান রকম দুষ্টুমি ও করতেন, আবার মাঝে মাঝে নিজ থেকেই যুদ্ধের দিনগুলোর গল্প বলতে থাকতেন...সেই সময় আমার ছোট ভাই আবিরের বয়স হবে বছর তিনেক/চারেক।
ভোররাতে ঘুম ভেঙ্গে গেল নাসিমার। গলা শুকিয়ে কাঠ। দুঃস্বপ্ন দেখেছেন। পাশে মেয়েটা অঘোরে ঘুমুচ্ছে। ওকে ডাকতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত ডাকলেন না। কিন্তু খুব কথা বলতে ইচ্ছে করছে তার, বুকের ভেতরের পাথরটাকে নেড়ে চেড়ে গুমোট ভাবটা কাটাতে চাইছেন তিনি। চাদরটা গায়ে জড়িয়ে নিয়ে খাট থেকে নামতেই মেয়ে বিরক্ত গলায় বলল
-এত ভোরে উঠে পড়লে কেন মা?
-ইয়ে... সুমনকে একটা ফোন করবি, তিথি?
ভয়ে ভয়ে নাসিমা মেয়েকে বললেন কথাটা।
"খুব জ্বলে, তাই না?"
এবারতো আমরা শুধু চাই শান্তিমতো নিজের ঘরের ময়লা-আবর্জনা পরিস্কার করতে। ওগুলাকে ডাস্টবিনে নিয়ে মাটি চাপা দিয়ে রেখে আসতে পারলে অনেক আরাম লাগতো; কিন্তু ঐদিকে খুব দূর্গন্ধ, একটু দুরেও, ঘরেও অনেক কাজ; তাই আবর্জনাগুলো ঘরেই মাটি চাপা দিচ্ছি। এতেও ডাস্টবিনের পিত্তি জ্বলছে; চোখের পানিতে সমগ্র ডাস্টবিনজুড়ে বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে গেছে!
চাঁদ কিংবা তারা চাইনি, চেয়েছিলাম সূর্যটাকে
যার আলোয় সারা পৃথিবীটা রঙে ভরে উঠে
প্রতিদিনই আসে যে সমস্ত আঁধারের বাধাকে তুড়িতে উড়িয়ে দিয়ে
চেয়েছিলাম সূর্যটাকেই কেননা তার আলোর ঔজ্জ্বল্যে
নিভে যায় সমস্ত চন্দ্র-তারা দিকবিদিক।
যে কোমল সবুজটা
গায়ে মেখে রাখে ঘাস, ক্ষেত, পুকুরের জল, অনিঃশেষ বনানী
তার মাঝখানেই সূর্যটা জ্বলজ্বল করুক,
চেয়েছি সবুজটা জেগে থাকুক ঊজ্জ্বল রৌদ্রে
১।
আমার জন্ম খুব সাধারণ পরিবারে। কঠোর ইসলামিক ধ্যানধারণা কিংবা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ সম্পর্কে তীব্র সচেতনতা এর কোনটাই আমার পরিবারে ছিল না। স্বাধীনতার ইতিহাসের প্রথম হাতেখড়ি হয় বাবার কাছ থেকে আর বাকিটা বই পড়ে কিংবা সিনেমা দেখে। তবে বিএনপি আর আওয়ামী লীগ দুই সরকারের সময়েই স্কুলে পড়ার কারণে স্কুলের বইয়ে মুক্তিযুদ্ধের দুই রকম ইতিহাস পড়ার দুর্ভাগ্য হয়েছে। এটা দু:খজনক একটা ব্যাপার তবে বড় একটা অংশ বাদ দেয়া ছাড়া বিএনপির মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে ভয়ংকর কোন ম্যানিপুলেশন ছিল না। যেমন, রাজাকার নামটা বাদ ছিলো, বলা হতো এদেশীয় দোসর তবে রাজাকাররা দেশ রক্ষার চেষ্টা করছিল এমন কিছু দেখেছি বলে মনে পড়ে না। অন্তত দশ এগারো বছরের কিশোর হিসেবে ওই বইগুলো থেকে এতটুকু বুঝতাম যে মুক্তিযুদ্ধ আসলে বিশাল একটা ব্যাপার।
সাজেদুল চৌধুরী রুবেল
১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস । ১৯৭১ সালের এই দিনে ৩০ লাখ প্রান ও ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল এ দেশের শোষিত মানুষের কাঙ্খিত “বিজয়” নামের লাল সূর্যটি।
সময়টা কি ১৯৮৮ নাকি ৮৯? ঠিক মনে আসছে না। তবে এই দুটো বছরের যে কোন একটা বছরে চট্টগ্রামে 'বিজয় মেলা' নামক একটা ব্যাপার চালু হয় সার্কিট হাউসের সামনের খোলা মাঠে। ওই মাঠটি তখন শিশুপার্ক হয়নি। সার্কিট হাউস তখনো জিয়া স্মৃতি যাদুঘর হয়নি। খোলা ময়দানটিতে আমার কোন কোন বিকেলে আড্ডা দিতাম। স্টেডিয়ামের উল্টোদিকের এই মাঠে কিছু কাঠের চেয়ার টেবিল বসানো থাকতো দারুল কাবাবের পক্ষ থেকে। স্টেডিয়াম মার্কেটে চট্টগ্রামের একমাত্র কাবাবের দোকান। সেখান থেকে ট্রেতে করে ধোঁয়া ওঠা কাবাব পরোটা নিয়ে আসা হতো সার্কিট হাউসের সামনের ঢালু ময়দানে। আমাদের পকেটে সেই সময়ে কাবাব খাওয়ার পয়সা হয়নি। তাই আড্ডা দিতে দিতে কেবল গন্ধ শুঁকেই অর্ধভোজন সেরে মনে মনে বলতাম, দেখিস একদিন আমরাও।
সারাদিন অফিস শেষে টেলিভিশনে চোখ রাখলেই দেখছি সারাদেশে অবরোধ আর হরতালে উৎসব করে গাড়িতে আগুন দেওয়া হচ্ছে, পেট্রোল বোমা মারছে পাপিস্থানি জারজগুলো। নিজের জীবনটাকে খুব বেশি ভালোবাসি বলেই বেঁচে থাকার লোভে ঝুঁকি মাথা নিয়ে এই উৎসবের মাঝে গত দুই মাস বাড়ি যাওয়া হয়নি। তবু গতকাল অসহ্য হয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে ট্রেনে চেপে বসলাম। এ যেনো অনন্তকালের যাত্রা, ট্রেন দশ মিনিট চলে তো ১ ঘন্টা থেমে থাকে। কুমিল্লা দাঁড়িয়ে আছে
দরজা খুলল সুচরিতা, জয়ন্তের আগেই আজ বাসায় এসে পৌঁছেছে সে। দু’জনের কাছেই দু’টো চাবি থাকে, যদিও বাড়িওয়ালা তাদের একটিই চাবি দিয়েছিল বাসা ভাড়া নেয়ার সময়। তখন অবশ্য সুচরিতার চাকরীটা হয়নি। প্রথম দিকে চাবি একটা থাকায় বেশ অসুবিধা হত সুচরিতার, জয়ন্ত’র আগেই কখনও কখনও অফিস শেষ করে তিনতলা ভেঙ্গে বাসায় এসে সিঁড়ির উপর বসে থাকতে হত ওকে। জয়ন্ত না আসা পর্যন্ত কারও বাসায় গিয়ে যে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে আসবে সে ইচ্ছেটুকু