জনতার সংগ্রাম চলবে--
রাজাকারের দিন এইবার শেষ
শাহবাগের সাথে একাত্মতা ঘোষনা করেছে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা আপামর বাঙালী ভাই-বোন।
সেই একাত্মতার সাথে আমার নিজের সামান্য কিছু যোগ দিতে নিয়ে এলাম
আমাদের আকতার ভাই আর মৃদুল ভাইয়ের কিছু অগ্নিঝরা ছড়া আবৃত্তির চেষ্টা করেছি এইখানে।
আপনাদের ভাল লাগলে এইগুলো ছড়িয়ে দিন সকলের কাছে, সকলের মাঝে
ভোরের আর বেশি দেরী নেই---
জয় বাংলা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে একাত্তরে ভয়াবহ নির্যাতন চলে, অসংখ্য তাজা প্রান ঝরে যায়, জোহা হলকে বানানো হয় টর্চার সেল, অনেক নারী সম্ভ্রম হারান, এতই নির্যাতন চলে যে অনেকের লাশ খুঁজে পাওয়া যায়নি কিংবা লাশ পেলেও চিনে নেয়া সম্ভব হয়নি, জোহা হলের পেছনে পাওয়া গেছে দেশের অন্যতম সর্ববৃহৎ বধ্যভূমি। সেই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক পিশাচ শিক্ষক এই নির্যাতনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। অনেক স্বাধীনতাকামী, প্রগতি
ভুলে গিয়ে ভয় যত পরাজয় জীবনের ঢালা ছাঁচে,
বাঙালির দিন বদলে গিয়েছে ফেব্রুয়ারির পাঁচে!
ক্রুদ্ধ মানুষে ক্ষুব্ধ স্লোগানে শাহবাগ জুড়ে ঝড়...
আমাকে নতুন জন্ম দিয়েছে প্রজন্ম চত্বর!
বাঁধতে পারে নি সাধের চাকরি, ঘরে বিছানার সুখ,
আমাকে টেনেছে অচেনা অদেখা রোদে পোড়া কিছু মুখ!
বিদ্রোহী আমি, ছিলাম কদিন আগেও স্বার্থপর...
আমাকে নতুন জন্ম দিয়েছে প্রজন্ম চত্বর!
শিল্পী ফেলেছে রঙতুলি আর গায়ক ভুলেছে গান,
এক এককে এক—
রাজাকারের বাচ্চাগুলার কাঁপছে হাঁটু,দ্যাখ!
দুই এককে দুই—
পার পাবিনা হারামজাদা কসাই কাদের তুই!
গতকাল শাহবাগ থেকে আসার পর সবগুলো পেপার পড়লাম। আর সাথে মিডিয়াতে খবরগুলো দেখলাম। শাহবাগের গণজাগরন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর টানা হেচরা ছিল চোখে পড়ার মতন।
মির্জা ফখরুল সাহেব জেল থেকে বের হয়ে বললেন এটা নাকি "তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলন", বিএনপি পন্থি কিছু ব্যারিস্টার বললেন ট্রাইবুনাল ভেঙ্গে দিতে আর খালেদা জিয়া ম্যাডাম তো পুরাই চুপ।
সময় এসেছে গণআন্দোলনকে Twitter-এ নিয়ে যাওয়ার। আগ্রহীদের জন্য কিছু প্রাথমিক তথ্য লিপিবদ্ধ করছি এখানে। এটি খুব, খুব সহজ একটি মাধ্যম। কয়েক মিনিটের বেশি লাগবে না বুঝে নিতে।
লক্ষ জনতা কণ্ঠ মেলায় এই মেয়েটির সাথে
অর্গল ভাঙা বুকের আগুন মহাগর্জনে মাতে
অকৃতী জীবনে গৌরব কিছু এ কথা বলেই হোক
কান পেতে শোনো বিশ্ব, আমিও লাকির দেশের লোক।
(এই পোস্টারটি প্রিন্ট করার জন্যে অনেক বড় আকারেও দেওয়া যাবে, যদি কেউ চান)
সাথে রাজাকার ফাসির দাবীতে সোচ্চার শাহবাগ সহ দেশ বিদেশের বিভিন্ন জায়গার চলমান আন্দোলনের খবর শুনছিলাম অপেক্ষা করছিলাম লন্ডনেও এমন কিছু হয় কিনা। অবশেষে গতকাল রাতে হঠাৎ করেই ফেসবুকে একটি ইভেন্ট থেকে জানতে পারি শাহবাগের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করতে শুক্রবার আলতাব আলী পার্কে থাকার ডাক দেয়া হয়েছে। সাথে সাথেই টেক্সট মেসেজে বন্ধু বান্ধবকে ব্যাপারটা জানিয়ে দেই। সবাই তখন চরম উৎসাহ দেখালেও শেষ পর্যন্ত একজন আমার দাওয়াত কবুল করেছে সে যাইহোক একজনই বা কম কিসে?
দুপুর ২টা থেকে শুরুর হওয়ার কথা থাকলেও আমার সেখানে পৌছতে একটু দেরি হয়ে যায়। ততক্ষনে দাবী আদায়ের স্লোগান পুরো দমে শুরু হয়ে গেছে। এত মানুষ দেখে মন ভরে উঠল। বেশ কয়েক জায়গা থেকে স্লোগান দেয়া হচ্ছিল।
শাহবাগে সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ অবস্থান নিতে শুরু করার পর থেকেই অস্থির হয়ে উঠছিলাম। একেতো হরতাল, ঘর থেকে বের হওয়া হয়নি, ফেসবুক বা বন্ধুবান্ধব পরিচিতজনদিয়ে রাজশাহীতে সাধারণ মানুষের প্রতিবাদ সমাবেশের কোন আওয়াজই যেন ছিলো না অন্তত প্রথম দিনটা।
এটা ঠিক রাজশাহীতে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর নড়াচড়াও যেন ঢাকার হাইকমান্ড না পাওয়া পর্যন্ত ঠিক শুরু হয়ে ওঠে না তা আজ বছর তিরিশেক ধরেই। বাবা-মাদের তরুণ যুগের রাজশাহী আর এখনকার শহরে অনেক ফারাক। তা সেই ফারাকটা মনে হয় জেনেরেশন গ্যাপ-ই হবে, শুধু আমার শহর না, পুরো দেশ জুড়েই। সবখানেই যেন আমরা আমাদের প্রজন্ম 'ধরি মাছ, না ছুঁই পানি' করে পাশ কাটিয়ে যেতে চাই সব ইস্যুকেই।
যখন বেশ ভালো রকমের বিরক্তি নিয়ে নিজেদের দম ফেলার ছোট্ট পরিসর ‘আমাদের রাজশাহী’ গ্রুপে জিজ্ঞেস করছি, “ঘটনা কী, জাগো বাহে, কুন্ঠে সবাই? “ হুট করেই চোখে পড়লো রাজশাহীর সাধারণ শিক্ষার্থীদের তৈরি করা দু’টো ছোট্ট ইভেন্ট। আলুপট্টির মোড়ে কসাই কাদের মোল্লাসহ সকল রাজাকারের ফাঁসির দাবিতে সমবেত হতে ৭ তারিখ দুপুর আর ৮ তারিখ বিকেলে আহ্বান জানানো হচ্ছে রাজশাহীবাসীকে।
এক এক-এ এক
রাজাকারের মুখোশ খুলে একটু খুঁজে দেখ!
দুই এক-এ দুই
জানলে পরেই বলবে তুমি- ‘তুই রাজাকার’ তুই!
তিন এক-এ তিন
রাজাকারের ফাঁসির দাবী দেশমাতৃকায় ঋণ!
চার এক-এ চার
ঘাপটি মারা দালালেরা আর পাবেনা পার!
পাঁচ এক-এ পাঁচ
সমাজে নয়; বনের পশু চিড়িয়াখানায়, পারলে বনে বাঁচ!
ছয় এক-এ ছয়
একটা বুকভরা শ্বাস টানলে পরে দূর হবে সব ভয়!
সাত এক-এ সাত
যুদ্ধ মানে তোমার হাতে আমার হাতে হাত!