আমাদের পীরগণ
"যাহার কোনো পীর নাই তাহার পীর শয়তান"।
সালেক খোকন
বৈশাখ মাস। প্রচন্ড রোদ। তবুও চারপাশে শীতল অনুভূতি। বড় বড় আমগাছ। সংখ্যায় দুই হাজারের মতো। অধিকাংশই শতবর্ষী। দিনময় এখানে চলে পাখিদের কোলাহল। ছায়াঘেরা পাখিডাকা আম্রকানন এটি। খরতাপও এখানে কুর্নিশ নোয়ায়। প্রচন্ড গরমে তাই আগতরা আশ্রয় নেয় আম্রকাননের শীতলতায়।
একজন মানুষের ছবি শৈশব থেকেই আমার মানসপটে খোদাই হয়ে আছে-পাতলা ধরনের মানুষটির মুখে এক চিলতে হাসি, নাকের নিচে সরু গোঁফ, মুখে বিনয়ী ভাব কিন্তু চোখ দুটো যেন আনন্দের জোয়ারে ভাসছে। মানুষটির হাত ভর্তি পুরস্কারের ট্রফি, সেগুলোর সংখ্যা এটি বেশী যে দুই হাতে আগলাতে যেন হিমসিম খাচ্ছেন তিনি। মলিন নিউজপ্রিন্টে ছাপা খবরের কাগজটি যেন প্রাণোচ্ছলতায় ভরে উঠেছে কেবল তার হাসিময় চোখ দুটোর জন্য। কে তিনি?
ঝিম ধরে হয়ে বসে আছে এক সময়ের মুক্তিযোদ্ধা খালেক। নির্মম পৃথিবীর রূঢ় বাস্তবতা তার পিঠে 'এক সময়ের মুক্তিযোদ্ধা' খেতাবটা সেঁটে দিয়েছে।
বসে আছে, কারণ তার কাজ নেই। কাজ নেই কারণ, কাজ করতে ইচ্ছে করে না। শরীর দুর্বল। শরীর দুর্বল কারণ, ভাত পায় না নিয়মিত। গাঁজার নেশাও আছে। ভাত পায় না তো গাঁজা পায় কোথায়? সেটাই তো কথা। সেটাই আমরা জানতে চাই।
- আপনি কি হাই-কমিশনার সাহেবের পিএ বলছেন? - টেলিফোনে জিজ্ঞাসা করলাম আমি।
- হ্যাঁ, বলেন।
- আমার নাম সাইফ শহীদ। আমার বাবা, মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, হাই-কমিশনার সাহেবের শিক্ষক ছিলেন। উনার সাথে একটু কথা বলতে চাই।
আমাকে লাইনে থাকতে বলল পিএ।
একটু পরে বেশ ভারী গলার আওয়াজে টেলিফোনের অপর প্রান্ত থেকে প্রশ্ন এল - "স্যার কেমন আছেন?
বুঝলাম এটা হচ্ছে হাই-কমিশনার সমর সেনের গলা।
দেখছিলাম Battle of Algiers। ১৯৬৬ সালের এই ছবিটা কেউ কেউ দেখেছেন হয়তো। ছবিটার সাথে আমাদের উপনিবেশ আমলের বেশ কিছু মিল আছে। কিন্তু ছবিটা দেখে আমার মাথায় একটা বাক্য খেলছিল - 'ব্যাট্ল্ অব বাংলাদেশ'। না, এই নামে কোন ছবি বাংলাদেশে নেই। কিন্তু এরকম একটা ছবি দেখার স্বপ্ন দেখছি আমি। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নির্মিত এন্তার ছবি দেখেও আমার তৃপ্তি মেটেনি। আলজেরিয়ার ছবিটা সেই অতৃপ্তিটা আবারো জানান দিতে শুরু করেছে। হুমায়
কাবেরী গায়েন
এক।
ক. প্রতীক কী? প্রতীকের নির্মাণ কীভাবে ঘটে?
- “আর তুই কিছু করলি না, তুই তাদের কেন পেটালি না?”
সালেক খোকন
যুদ্ধে যাওয়ার ইচ্ছার কথা শুনে মা হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন। ছেলেকে তিনি কিছুতেই ছাড়বেন না। যুদ্ধে গিয়ে কি কেউ জীবন নিয়ে ফিরবে! এই তার ভয়। মা আমাকে চোখে চোখে রাখলেন। যদি পালিয়ে যুদ্ধে চলে যাই। মাকে শান্ত করতে মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দেই। না, কখনোই মুক্তিযুদ্ধে যাব না।
সময়ের সাথে নাকি সবকিছু পাল্টায়—
কুমিরের ছানা বাড়ে ‘ঘোষকের’ খালটায়
কাঁঠাল-চাঁপার পাশে টেকা দায় গন্ধেই
কী করে পড়ায় কন কবি, আমি মন দেই!
...বীর এসে খুনিদের জীবনের দাম চায়
রাজাকার মুখ মোছে কাদেরের গামছায়!
মিলেমিশে একাকার ভীরু আর সৈনিক
পতিতের তালিকাটা বড় হয় দৈনিক!
বয়স বাড়লে যেন শুরু এই পর্বের—
মাটিতে মিশিয়ে দাও যা যা ছিল গর্বের
মুক্তিযুদ্ধ? সে তো আরো সোজা, সস্তাও