[justify]
২৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৫।
দাসপার্টির খোঁজে আমাদের যাত্রা শুরুর আজ প্রথম দিন। আমি এবং নজরুল ইসলাম- সচলায়তনে আমার সহ ব্লগার, নাট্যনির্মাতা- আমরা দুজন এসেছি উত্তরার একটি বাসার খোঁজে। সকাল দশটা বেজে কয়েক মিনিট।
এই মানুষটার খোঁজ আমাকে দিয়েছেন সিলেটের সিনিয়র সাংবাদিক আল-আজাদ। আল-আজাদ নিজে ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কাজ করেন বহুবছর। ক্যাপ্টেন মুত্তালিব এর সাথে ঘনিষ্ঠ ছিলেন। মুত্তালিব এর শেষ সময়ে, যখন গুরুতর অসুস্থ তখন আল-আজাদ তার ভাষ্যে উত্তর-পূর্ব রণাঙ্গনের একটি বিস্তারিত বর্ণনা নিয়ে গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন। ছোট্ট কিন্তু গুরুত্বপুর্ণ একটি কাজ।
আমরা এসেছি সালেহ চৌধুরীর খোঁজে। ইনি ও সাংবাদিক। বাংলাদেশের সিনিয়র সাংবাদিকদের একজন। এপ্রিল ১৯৭১ পর্যন্ত দৈনিক পাকিস্তানের সাব-এডিটর ছিলেন। তারপর আবার বাহাত্তুর থেকে অবসর নেয়া পর্যন্ত দৈনিক বাংলায়। মাঝখানে মুক্তিযুদ্ধের মাসগুলো ছিলেন অস্ত্রহাতে যোদ্ধা। না, সালেহ চৌধুরীকে ঠিক অস্ত্র হাতে যোদ্ধা বললেই তার ভূমিকা শেষ হয়ে যায়না।
[আমি যে আজ সচলে কিছু একটা লিখতে যাচ্ছি এর কোনো দায়-দায়িত্বই আমার না, সকল দায়-দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নিবেন আয়নামতি এবং ষষ্ঠ পাণ্ডব। ওনাদের সাথে আমার পরিচয় গুডরিডস সূত্রে এবং কিছুদিন ধরে আমি ওনাদের ঝাড়ির উপরে আছি এবং ওনাদের ঝাড়ি খেয়ে আমার বোধোদয় ঘটায় (কারো কারো মতিভ্রম ও মনে হতে পারে) ব্লগে পোস্ট করছি। এটি একটি বুক রিভিউ। যা আমি গুডরিডসে লিখেছিলাম তার সামান্য পরিবর্তিত ভার্সন।]
(আঞ্চলিক ভাষা সংযুক্ত করে অশেষ কৃতজ্ঞতায় আবদ্ধ করেছেন টিউলিপ এবং নীল কমলিনী)
----------------
জয়তুন বেওয়া দুই হাতের ওপর ভর করে হেঁচড়ে হেঁচড়ে আবার মাটির ডিবির সামনে দাঁড়ায়। মাটির গায়ে হাত বুলাতে বুলাতে বলেন তুমার দুক্কু লাগতাসে গো চাষার ব্যাডা? হেয় নাকি মাফ চাইব। রাজার সোয়ামী রে বলে হে মারছিলো? রাজায় মাফ কইরবার কেডা?
জয়তুন বাড়ির পথ ধরে। আলী হোসেন ডেকে বলে ও হেসরি বেডি, বিচার শুইন্না খুশী হইছুনি?? হেঁচড়ে হেঁচড়ে চলে তাই গ্রামের লোকেরা বলে হেসড়ি বেটি।
[একটু ভূমিকা করি। এই সিরিজে আমি মূলতঃ চট্টগ্রাম অঞ্চলে সংগঠিত মুক্তিযুদ্ধের অপারেশান সমূহে ভূমিকা রাখা কিছু ব্যক্তিকে নিয়ে লিখতে শুরু করেছি। আমি অল্প কজন মানুষের আত্মবিসর্জনের কথা জানি। কিন্তু সারা দেশে এরকম আরো কত লক্ষ মানুষ তাদের জীবন দিয়েছেন। তাই আমি চাই এই সিরিজে আরো কেউ কেউ যুক্ত হোক। এই সিরিজে যে কেউ অংশগ্রহন করতে পারে, করলে ভালো হয়, করা দরকার। কেননা বাংলাদেশের আনাচে কানাচে মুক্তিযুদ্ধের ছোট
উগ্রতার জমানায় কে যে কদ্দিন বাঁচি-মরি ঠিক নেই।
অনেক চা খেয়েছি। সিরিজ বকেয়া রাখতে চাচ্ছি না।
স্বাধীনতা যুদ্ধ নিয়ে সব গবেষণা বা পরিসংখ্যানে বোধহয় সবচেয়ে উপেক্ষিত থাকে আমাদের যুদ্ধশিশুরা- যাদের জন্ম হয়েছিলো একাত্তরের বিভীষিকার মধ্যে। আমি জানি না কোন পরিসংখ্যান আছে কিনা একাত্তরে এবং পরবর্তীতে কতজন শিশু যুদ্ধের কারণে নিহত হয়েছিলো। স্বাভাবিক সময়ে একটা শিশুর জন্মের সময় এবং পরে কত যত্ন-আত্তি, হাসপাতাল-ক্লিনিকে ছুটোছুটি করা লাগে। ছয় বছর আগে আমার মেয়ের যখন জন্ম হলো, তার আগের দিন রাতে হাসপাতালে চলে
[ আমি দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা, কারও দানে পাওয়া নয়। দাম অবশ্য আমি দিইনি, বাকিতেই পেয়েছি পূর্বপুরুষের বদান্যতায়। সেই বাকির খাতা কখনও শুধতে পারব না, জানি। কিন্তু, বাকির খাতায় যে নাম তোলা আছে সেটুকু অন্তত যেন আমরা ভুলে না যাই। যাঁদের রক্তের ওপর গড়া এই দেশে (প্রায়) নির্বিবাদে বেঁচে আছি, তাঁদের রক্তপাত শুরু হয়েছিল এই দিনেই। জানা কিংবা অজানা সেই সকল অসীম সাহসীদের জন্য নিরন্তর শ্রদ্ধা। ]
[i][ওরা যুদ্ধ করেনি, ওদের সার্টিফিকেট নেই, ইতিহাসে ওদের কোন পদবী নেই। ওদের কেউ অন্ধকার রাতে টর্চলাইট হাতে মুক্তিযোদ্ধাদের পথ দেখিয়েছে, কেউ রাতে ঘরের দাওয়ায় আশ্রয় দিয়েছে, নিজের খাবার বাঁচিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের খাইয়েছে, তাঁদের অস্ত্র, তথ্য, সংবাদ পারাপার/পাচার করেছে দীর্ঘ নয়মাস ধরে। অতঃপর দেশ স্বাধীন হবার পর কৃতিত্ব দাবীদারের ডামাডোলে ওদের কথা ভুলে গেছি আমরা। সেই সব অনালোচিত, ভুলে যাওয়া অমুক্তিযোদ্ধা স
ধরা যাক প্রাপ্ত বয়স্ক একজন মানুষ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময়ের রাজনীতি, যুদ্ধের নেতৃত্ব, দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র কিংবা একাত্তর পরবর্তী চারটি বছর যে রক্তাত্ত ইতিহাসের মাঝ দিয়ে বেড়ে উঠেছিলো বাংলাদেশ, তার কিছুই জানে না। জানে না বঙ্গবন্ধু হত্যা তথা বাংলাদেশকে পিছিয়ে দিতে কে বা কারা কাজ করেছিলো প্রকাশ্য দিবালোকে আর একান্ত সঙ্গোপনে। জানে না একাত্তরের রণাঙ্গনের দেবদূত হয়ে ওঠা আদর্শের প্রবাদ পুরুষ একজন খালেদ