অনেক দিন পর যখন বৃষ্টি হলো তখন অনেক দিনের জমাট কালচে হয়ে আসা দাগ ধুয়ে গেল। কেউ টের পায়নি যদিও। কিন্তু আমি তো জানতাম! রাতের গাঢ় অন্ধকারেও আমি ঠিকই দেখতে পেতাম ঐখানে আস্তে আস্তে কালচে হয়ে আসতে থাকা দাগটা।
প্রতিদিন আমি বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করতাম। প্রতিদিন আকাশের দিকে তাকিয়ে মেঘ খুঁজতাম। গভীর, জলদ মেঘ, রাগী, গর্জনশীল মেঘ, পাগল, মাতাল মেঘ। কিন্তু বৃষ্টি হলো না। প্রতিদিন ঝাঁঝালো, উজ্জ্বল রোদে একটু একটু করে প্রকট হয়ে উঠছিল দাগটা। আর আমি বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করে যাচ্ছিলাম।
সিলভা
- সুমাদ্রি শেখর।
সিলভার মুখে সেই তেজ আমি আর দেখতে পাইনা। ওকে দেখলে এখন ঝড়ে ভেঙ্গে পড়া কোন কুটিরের কথা মনে পড়ে।
[justify]
'বেলজিয়াম গ্লাস'
মেহগনি রঙ ফ্রেমের বাঁ ধারে খোদাই করে লেখা। আয়নাটা ঝুলছে পশ্চিমের দেয়ালে, অনেকগুলো বছর ধরে.. শাহানা এ বাড়িতে আসা অবধিই তো দেখছেন। দিন গড়িয়ে দেয়ালের রঙ বদলেছে, বদল এসেছে বাসিন্দাদের অবয়বে, আচরণে। নিরেট পাথরের মতো একই রকম রয়ে গেছে ঐ আয়না কেবল।
আল বিদাহ
ওর বিশ্বাস করতে ভীষন কষ্ট হচ্ছিল যে সব শেষ হয়ে গেছে। ও এই পেশায় এতই ভাল ছিল যে, সর্বোচ্চ চেষ্টা সত্ত্বেও ওর পক্ষে এখানে চিরটাকাল থাকা সম্ভব হল না। এখানে অনেককেই আসতে দেখেছে ও, যেতে দেখেছে, সামান্য কয়েকজনই শুধু থেকে গেছে। দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয়ে শেষবারের মত ও বিদায় জানাল।
০৩. ভ্রোমর ও কলি
হলুদ রঙের ঝুটিওয়ালা একটি কালো ভ্রোমর যে কতোরকম পুলক নিয়ে আসতে পারে স্কুল পলাতক কোন কিশোরের মনে; তা আমার চেয়ে আর কে বেশী জানবে? শীতের সকালে সকল আলস্যকে উপেক্ষা করে ছুটতাম আমরা কিন্ডার গার্টেন স্কুলের ছাত্ররা। রাস্তার দুইধারে সাদা ভাটফুলের সুতীব্র গন্ধ ছুটতো আমাদের পিছু পিছু।
জানালা দিয়ে কালো অন্ধকারের দিকে চেয়ে দু’চোখ ভরে পানি আসে অমির। খুব ইচ্ছে করে আকাশকে সব কথা বলে দিতে। তার নিজের ভেতরের কথাগুলো,হাজার চেষ্টা করেও কাউকে কখনো বলতে পারেনি যেগুলো, কিংবা বলা যায়, কখন কেউ শুনতে চায়নি যেগুলো।হয়ত আকাশও শুনতে চাইবেনা,বিরক্ত হবে...একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সে, এসব ভেবেই কখনো বলা হয়নি কাউকে। হয়ত কোনদিন আর বাইরে বেরোবেনা কথাগুলো, ভেতরে থাকতে থাকতেই মরে যাবে একসময়।
আমার ২মাস বয়সের পিচ্চিটাকে প্রায়ই প্রতিদিন এই গল্পটা বলে ঘুম পাড়ানোর (ব্যর্থ) চেস্টা করি। সচলের পাঠকদের জন্য গল্পটা হুবহু তুলে দিলাম:
--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
০২. ফিঙে ও শঙ্খচিল
সূর্য উঠার আগেই ঘর্মাক্ত শরীরে বিছানা ছাড়ি প্রতিদিন। বসন্তকাল, নরোম বাতাস, মাঠে বিশাল সবুজের সমারোহ। কৃষকরা আগাছা নিড়ানীতে ব্যস্ত। খেতের আলে ছড়িয়ে থাকা খুঁটিগুলোতে পুচ্ছ দুলাচ্ছে ফিঙেরা। সজাগ দৃষ্টি; ঠোঁটে ঘাস ফড়িঙের লালসা।
[justify]আমার মৃত্যুটা কীভাবে হবে আপনাকে বলি।
১. পাতা ও ধূলি
একদিন বিপন্ন দুপুরবেলা আমাদের উঠানে ধূলিঝড়ের সে এক বিস্ময়কর অপরূপ খেলা। কতোরকম শুকনো পাতার বিচিত্র নাচন। তারা কাকে যেনো ঘিরিয়া ঘিরিয়া ঘুরিয়া ঘুরিয়া নাচে আর সুতীব্র বেগে দূরে চ’লে যায় অজানার পথে। আমরা তাদের পিছু পিছু ছুটে বেড়াই। এ বিচিত্র খেলার সঙ্গি হ’তে চাই। কিন্তু আমাদের হতবাক ক’রে তারা যেনো কোন সুদূরে মিলিয়ে যায়। বাতাসের সুতীব্র দাপট আমাদের ঠেলে নিয়ে যায় ঘরের চৌকাঠে দরোজার কোনে।