গোল টেবিলটা ঘিরে আছে ওরা। টেবিলের উপর নিজেদের দুই হাতের বুড়ো আঙ্গুলগুলো আর প্রান্তের কেনো আঙ্গুলগুলো স্পর্শ করে একটা বৃত্ত তৈরী করে ওরা মোমবাতিটা ঘিরে। মোমবাতির আলো সবার মুখের উপর পড়ে, অদ্ভুত অতিপ্রাকৃত দেখায় সবাইকে। ওরা পাঁচজন। ওরা সবাই চিন্তা করছে একজনের কথা।
সুমন বলছিল, প্ল্যানচেটের কথা। ওর মাথায় সবসময় আধিভৌতিক ব্যাপার স্যাপার ঘুরে। তন্ত্র মন্ত্রের কিছু বই পড়ে ইদানীং ...
ভদ্রলোক গালের আঁচিলটা একবার চুলকাইয়া আবারো ভাবনায় মন দিলেন। এ স্থানের নাম ‘ধামরাই’ না হইয়া ‘কামড়াই’ বা ‘চামড়াই’ হইলো না কেন? নিদেনপক্ষে ‘বিলাই’ও হইতে পারতো। এতসব থাকিতে ধামরাই কেন? ইত্যাদি সাতপাঁচ কষিয়া ভাবিয়া তিনি সিদ্ধান্তে পৌছিলেন, “ধুচ্ছাই, নামে কিবা আসে যায়?” অতঃপর ম্যারাথন ভাবনার পরবর্তী অংশে অগ্রসর হইলেন...
বহুক্ষণ ধরিয়া রাস্তার মোড়ে গাড়ী লইয়া বেকায়দায় আটকা পড়িয়াছেন...
ভালোবাসা একটি চক্রবৃদ্ধি ঋণের বোঝা- ভাবতে ভাবতে অপু হাঁটছে রাস্তার ধার ঘেঁষে। সোডিয়াম আলোর নিচে বসে থাকা সাদা্র উপর কালো স্ট্রাইপের জীর্ণ শার্ট পরা ভিখারী অন্যমনস্ক হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে, একই দিকে ইলেকট্রিক ঝুল ঝুল তারে বসে থাকা কিছু অন্যমনস্ক কাক তাকিয়ে আছে। অপুও ঐদিকে তাকায়। সবার হৃদয়ের কম্পাস যেদিকে সেদিকে আকাশের ব্ল্যাকবোর্ডে একটি আঁকিবুকি চাঁদ। (পরি)পূর্ণ জোছনা! অ...
ট্রেনে ফিরছিলাম নিজ শহরে। এক ভাইয়ার বাসায় গিয়েছিলাম। অনেক ঘোরাঘুরি, অনেক আড্ডা। ট্রেনে/বাসে উঠলেই আমার দু’চোখের পাতা ভারী হয়ে আসে। সঙ্গে যোগ হল ক্লান্তি। দিলাম ঘুম। হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে গেল। ট্রেন দেখি দাঁড়ানো। মনে মনে কষে একটা গালি দিলাম। এইসব প্রথম বিশ্বের দেশে তো এটা সহ্য করা যায় না। সহযাত্রী আবিদ ভাই দেখলাম একটু বিব্রত। আজ সকালেই উনি এই দেশের রেল ব্যবস্থার সময়জ্ঞান নিয়ে সেইরক...
আলমারির এই ড্রয়ারটা শুধু হাবিজাবি কাগজে ভরা। চিরুনি অভিযান চালানো দরকার। অভিযানের শেষ পর্যায়ে বিপত্তি ঘটল। হাতে ঠেকল বেশ কিছু পুরোনো ছবি ঠাসা এক অ্যালবাম। বিপত্তি বললাম এই কারণে যে এখন এইটার পিছনে আমার কিছু সময় নষ্ট হবে। পাতা উল্টালাম। জানতাম তোমার ছবি চোখে পড়বেই। হয়তবা তোমাকে দেখার জন্যই পাতা উল্টাচ্ছিলাম।
সেদিন তোমার কলেজের পুনর্মিলনী ছিল। দিন দশেক আগেই চিঠি লিখে জানি...
মোঃ মনির হোসেন। বয়স ২২। বাড়ি নরসিংদী। উচ্চতা ৫ ফুট ৪। শরীর পাতলা। গায়ের রঙ শ্যামলা থেকে কালোর দিকে। গাঞ্জা ছাড়া তেমন কোন বদভ্যাস নাই। পেশায় পকেট মার।
মনির হোসেনের ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট খেলার ঝোঁক ছিলো। কিন্তু বাপে শান্তিতে থাকতে দেয় নাই। স্কুল কামাই দিলেই ফাটানো মাইর। মাঝ খান থিকা মনির হোসেনের স্কুলও হয় নাই, পড়াশুনাও হয় নাই। ১৭ বছর বয়সেই সে পালিয়ে ঢাকায় আসে। কয়েকদিন রিক্সা চ...
"কি রে?? তোরা কথা কস না ক্যান?" বদরুল জিজ্ঞাসা করল আবার, বাংলার নেশায় তার নিজের কানেই কথাগুলো জড়ানো শোনে সে । এবারো কেউ জবাব দেয় না। ওরা মাটি কুপিয়ে চলছে তো চলছেই। ওরা বলতে চন্দন, নাসির আর ট্যাপা। মতলব মেম্বারের জন্য কাজ করে ওরা। মাথা ফাটানো, ভয় দেখানো.. খুন, সব কাজ।
বদরুল উঠে বসে। চারদিকে ঝিঁ ঝিঁ পোকা ডেকেই চলছে। এমনেই বাংলা গেলা, তার উপর এরকম ঝিঁঝিঁ..ঝিঁঝিঁ ডাক..। মাথায় যেন বাজতেই থাকে...
মফিজ প্রতিদিন লালদীঘির পাড়ে বসে থাকে আর উদাস চোখে দেখে কত কত লোক এসে দীঘিতে বর্শি ফেলে বড় বড় মাছ ধরে খুশিতে দাঁত কেলিয়ে বাড়ির দিকে ছুটে যায়। কত ধরণের মাছ যে তারা ধরে - রুই, কাতলা, বোয়াল, মৃগেল, চিতল, কোরাল, পাঙ্গাস, শোল - নামের আর শেষ নেই।
মফিজ উদাস হয়ে দুঃখি দুঃখি চোখ করে কেবল দেখেই যায়। কারণ তার বর্শি নেই, তাই মাছ ধরার মুরোদও নেই। তবে হঠাৎ করেই একদিন মফিজ একটা বর্শি পেয়ে যায়।
আসলে হয়...
ভদ্রলোক দুনিয়ার উপর মহাখাপ্পা।
ঘর থেকে বের হলেই হাজারটা জাহেরী বাতেনী গায়েবী সমস্যা দেখা দেয়। বাজারে আলুপেঁয়াজের সামনে দাঁড়ালে নিজেকে তার মনে হয় কমদামী চাইনিজ মাল। অপিসে বস'রে দেখলে ইচ্ছা হয় কইস্যা দুইডা থাপ্পড় লাগাইতে। আর রাস্তায় বের হলে ভাড়া নিয়ে কাইজ্যা ক্যাচাল তো আছেই...
ঘরে এসেও বেচারার শান্তি নাই। যদিও ঘরে তার চাঁদের মত বউ, তবে সেটা অমাবস্যার চাঁদ কিনা! আর আছে চার-চারট...
বিয়ের ঠিক তিনদিনের মাথায় পপি টের পেয়েছিল যে তার নব্য স্বামীটির একটি সমস্যা আছে। খুব মারাত্মক কোন সমস্যা না, তবে এটা একটা সমস্যা।
তার স্বামী সাইফ এমনিতে খুবই ভালো লোক। শান্ত এবং মার্জিত। শিক্ষিত এবং উদার। সভ্য এবং দয়ালু। শুধু তার ঘাড়ের একটা রগ একটু ত্যাড়া। সেই রগের অ্যান্টেনায় যদি একবার কোন কিছু ধরা পড়ে, তাহলেই হয়েছে। মুহুর্তের মধ্যে শান্ত, শিক্ষিত সভ্য এবং দয়ালু মানুষটি সম্পূ...