১.
ঘনিয়ে আসা ঝড়
৩
“পাঁচ ফুট আট ইঞ্চি”, কাঠের রুলার গুটাতে গুটাতে স্বস্তির সাথে বলেন মিঃ উইলসন, “তুমি আমার চেয়ে লম্বা, এটা সত্যিই উল্লেখযোগ্য।”
“সামান্য কিছু লম্বা।”
(ইগন্যাসিও র্যামোনেতের শত ঘণ্টা ব্যাপী নেওয়া ফিদেল কাস্ত্রোর সাক্ষাৎকারের সংকলন গ্রন্থ MY LIFE এর একটি অনুবাদ প্রচেষ্টা চালাচ্ছি, আপনাদের সকলের মতামত কাম্য। মূল বইয়ের লেখক এবং প্রকাশকের অনুমতি ছাড়া লেখাটি কোন রকম বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ, আর বাণিজ্যিক কারণ ছাড়া অনুবাদটি ব্যবহার করতে চাইলে অবশ্যই অনুবাদকের সম্মতি লাগবে। সত্যিকার অর্থে এই প্রথম অনুবাদ করছি, বানান ভুল ছাড়াও অন্য অনে
প্রথম পর্ব
বেড়ার কাণ বা ছিদ্র দিয়ে উঁকি মারাটা তার অভ্যাস থেকে এখন রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে, বন্ধুরা তাই তার নাম দিয়েছে কাণসিং। লোকজন এখন নিজের বাড়ীতে নিজের বউকে আদর করতে লজ্জা পায়, পূর্ণিমাপক্ষের রাত্রিগুলোতে একটু রোমান্টিক হবার সুযোগ নেই; কার দিকে চোখ রাখবে তারা, বউয়ের, না জানালার ফাঁকে, নাকি বেড়ার ছিদ্রে? বেড়াটেড়ার ছিদ্র নিয়ম করে কয়দিন আর বন্ধ করে রাখা যায়, মানুষটা বিন্দুর মতো ছিদ্র দিয়েও যখন গোটা দুনিয়া দেখতে পায়, আর না দেখার জিনিষগুলো তো দেখে আরো বেশি।
এপ্রিলের চমৎকার একটা সকাল। টোকিওর সবচেয়ে বড় সুপারমার্কেটের সামনে জনবহুল একটা রাস্তায় তাকে আমি প্রথম দেখি। আমার স্বপ্নের মেয়েটাকে। দুই মিনিট পরে সে আমাকে পাশ কাটিয়ে চলে যায়। আর আমি দেখতে থাকি পুরোপুরি একশো ভাগ মনের মতো, স্বপ্ন থেকে নেমে আসা সেই মেয়েটাকে।
২
“ও কোথায়?”, মিসেস উইলসন জিজ্ঞেস করেন গ্যারেজে নেমে এসে।
“উপরে ওর কামরায় গিয়েছে”, দ্বিগুণ জোশে সদ্য লাগানো পাঞ্চবলটির উপর প্রমাণ সাইজের একটা ঘুসি বসিয়ে বলেন মিঃ উইলসন, “তদারকি করেছিলে তো ঠিকঠাক? শক্ত করে ঠিকমতো লাগিয়েছে তো এটা?”
“দুপুরের খাবারের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে তো! ও এখন কামরায় কি করছে?”
(অজুহাত এক: স্প্যানিশ আমার জানা ভাষা নয়। ভাব প্রকাশ ও গ্রহণের দৌড় বাংলা আর টার্জান ইংরেজি পর্যন্ত। ও হ্যাঁ টেনিদার মতো তুম নেহি জানতা টাইপ হিন্দিও কিছুটা বুঝি সে আলাদা কথা। যা বলছিলাম, স্প্যানিশ থেকে সরাসরি অনুবাদ করা তাই আমার দ্বারা সম্ভব না। আবার কবিতা ইংরেজি ঘুরে বাংলায় আসলে সেটার আসল রস কতটা থাকে সেটাও একটা প্রশ্ন। কবিরা ভালো বুঝবেন এসব ব্যাপার, আমার মতো লোকেদের এইসব আলাপ না চালানোই ভালো।
বসন্তকাল, ১৬৪১। দুই পর্তুগীজ পাদ্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় লাহোরের এক চমকদার প্রাসাদের গ্র্যান্ড রিসেপশন রুমের লাগোয়া ব্যালকনিতে। প্রাসাদের মালিক মোগল সাম্রাজ্যের অন্যতম কুতুব আসফ খাঁ, আরজুমান্দ বানু বেগম ওরফে মুমতাজ মহলের পিতা।
ঐ সন্ধ্যায় আসফ খাঁ আর তার বউ মহান বাদশা শাজাহানকে চাট্টি ভাত খাওয়ার দাওয়াত দিয়েছিলেন। লুকিয়ে ব্যালকনি থেকে দুই পাদ্রী এই ব্যাপক খানাদানার আয়োজন দেখতে থাকেন হাঁ করে। ঝলমল করছে সিল্কি রূপালি সোনালি জরির কাজ করা কার্পেট, চতুর্দিকে মৌমৌ করছে সুগন্ধী আতরের বাস। রুমের ঠিক কেন্দ্রে মিহি মসলিনের কাজ করা টেবলক্লথ আর তার চারধারে নানবিধ কুশন। সোনামোতির হার গলায় ঝুলিয়ে রুমে ঢুকলেন মহান মোগল সম্রাট, আগেপিছে দাসীবান্দি সহকারে। কুশনে আরাম করে বসে সকলে হাত ধুয়ে নিলেন অত্যাধিক কচি ও ততোধিক সুন্দরী দাসীদের এগিয়ে দেওয়া পানিপাত্রে।