সাহিত্য রচনা বরাবরই আমার আয়ত্বের বাইরে ছিলো, আছে এবং থাকবে। হাসান মামুনের "এলান কোয়াটারমেইন ও আয়েশা" পোস্টে অনুবাদ, পরিভাষা হেন তেন নিয়ে বিরাট পণ্ডিতি দেখানোর পর মনে হলো, উনি তো তাও সাহস করেছেন একটা উপন্যাসের অনুবাদ শুরু করার। আর আমি শুধুই বুলি কপচাচ্ছি, কখনো তো এক লাইন লিখেও দেখলাম না। কি আছে জীবনে, আমিও শুরু করে দিলাম। ভুল অবশ্যই অজস্র আছে। আপনাদের চাঁছাছোলা মন্তব্য আশা করছি। ক্রমশঃ শুধরে নেব।
--------মধ্য প্রজন্ম
“মানুষ কীভাবে এই শহরে যেত যিকালী?”
“আমার মনে হয় সমুদ্র পথে, মাকুমাজন। তবে আমার ধারনা তোমার ঐ পথে না যাওয়াই ভালো। সমুদ্র পাঁড়ের জলাপথ এখন পার করা অসম্ভব। তোমার পায়ে হেঁটে যাওয়াই তোমার পক্ষে নিরাপদ”
“যিকালী তুমি কেন আমাকে এই অভিযানে পাঠাতে চাও? আমি জানি তুমি উদ্দেশ্য ছাড়া কিছু কর না।”
এখন শুধু অপেক্ষা করার পালা। জুৎসই মতো একটি জায়গায় ঘোড়াটিকে দাঁড় করিয়ে রেখে তার ছায়ায় বসে পড়ল মেষপালক। তার পাশেই আধ হাত মত দূরত্বে পেছনের পায়ের ওপর ভর দিয়ে বসেছে কুকুরটা। সামনের পা দুটোকে তীর্যক ভাবে টান টান করে চিরাচরিত কায়দায়। মুখের তুলনায় অস্বাভাবিক বড় জিবটাকে ঝুলিয়ে দিয়ে মাথাটাকে দোলাতে লাগল একটা ছন্দ বজায় রেখে। মেষপালক হাত বাড়িয়ে বার কয়েক কুকুরের মাথা ছুঁয়ে দিল আদর করার ভঙ্গিতে।
আল বিদাহ
ওর বিশ্বাস করতে ভীষন কষ্ট হচ্ছিল যে সব শেষ হয়ে গেছে। ও এই পেশায় এতই ভাল ছিল যে, সর্বোচ্চ চেষ্টা সত্ত্বেও ওর পক্ষে এখানে চিরটাকাল থাকা সম্ভব হল না। এখানে অনেককেই আসতে দেখেছে ও, যেতে দেখেছে, সামান্য কয়েকজনই শুধু থেকে গেছে। দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয়ে শেষবারের মত ও বিদায় জানাল।
আমার ধারনা প্রাচীন মিসর এর বাসিন্দারাই প্রথম বলেছিল প্রতিটি মানুষ ব্যাক্তি ৬ বা ৭ টি ভিন্ন ভিন্ন উপাদান দ্বারা তৈরি। যদিও বাইবেল তিনটি উপাদান এর কথা বলে, এক – শরীর , দুই – আত্মা আর তিন - অতি আত্মা বা বিদেহী আত্মা। এই প্রাচীন মিসরীয়রা আমাদের ধারনার চাইতে বেশী বুদ্ধিমান ছিলেন এবং এসব ভাবার মত যথেষ্ট সময় এদের ছিল। আমি এসব ব্যাপারে নির্বিকার হলেও তাদের ধারনা যা বুঝেছি তাতে এই মানব শরীর ভিন্ন ভিন্ন তত্তের একক মুল ধারক, আমাদের দেহ কেবল রক্ত মাংসের একটি আবরন। অথবা সহজ করে বলা যেতে পারে আমাদের এই দেহ একটি বাড়ি ,যেখানে এইসব তারা মাঝে মাঝে থাকে, কখনো কখনো একসাথে। কিন্তু একটি সব সময়ই থাকে যা এই বাড়ি আলোকিত আর কর্মক্ষম করে রাখে।
জীবনে কতকিছুই যে ইছা করত তার সীমা নেই। এই বুড়ো(!) বয়সে এসে একটা পূর্ণ করতে চেস্টা করছি তা হলো একটি ভালো মানের বই উপহার দেয়া।তাও অনুবাদ করে। এখন পাঠক খুজে পাই না । আপনাদের কাছেই আমার এই নিবেদন।
আমার প্রিয় একটা বই এর সম্পূর্ণ অনুবাদ করছি। যা আপনাদের পছন্দ হবে বলে আশা করছি। আপনাদের পরিচিত সলোমনের গুপ্তধন এর নায়ক এলান কোয়াটারমেইন এর আরো একটি বই। আপনাদের সমালোচনা আমাকে ভালো করতে উৎসাহ দিবে।
তিন পর্বের শেষ পর্বটি আজ দিলাম। মাথা থেকে একটি বোঝা নেমে গেল মনে হচ্ছে। অনুবাদ করা অনেক কষ্টকর আর সেটা যদি হয় এরকম টেকনিকাল সায়েন্টিফিক আর্টিকেল তাহলে তো কথাই নেই। তার উপরে আমার অনুবাদের আড়ষ্টতা ব্যাপারটাকে আরো কঠিন করে তুলেছিল আমার জন্য। আর কথা না বাড়াই।
প্রথম পর্ব: সমুদ্রবক্ষের মাটির উৎস : পর্ব ১
দ্বিতীয় পর্ব: সমুদ্রবক্ষের মাটির উৎস : পর্ব ২
আগের পর্ব হতে: মিড ওশান রিজের বিপুল পরিমাণ লাভা মাত্র পাঁচ কিলোমিটার প্রশস্ত একটি অংশ হতে সমুদ্রতলে উঠে আসে। ভূকম্পন সার্ভে, যা কঠিন ও গলিত পাথর আলাদাভাবে সনাক্ত করতে পারে, দ্বারা দেখা যায় যে মেল্ট প্রায় ১০০ কিলোমিটার গভীরতা ও কয়েকশত কিলোমিটার প্রশস্ত একটি এলাকা জুড়ে বিদ্যমান। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কিভাবে এই বিপুল পরিমাণ লাভা আগ্নেয়গিরির সরু নালা দিয়ে সমুদ্রতলে উঠে আসে?
ফিনানশিয়াল টাইমস-এ মুড়নো একটা প্যাকেট বগলদাবা করে মুখে একটা কাতর ভাব ধরে সাশা স্মিরনভ, মায়ের সবেধন নীলমণি একমাত্র পুত্র, ডাঃ কশেলকভের চেম্বারে ঢুকে পড়ে।
ডাক্তার সাহেব আন্তরিকভাবে বলে ওঠেন, “আরে বাছা, এখন আছো কেমন? খবরাখবর সব ভালো তো?”
(২২ জুলাই ২০১১, মৃত্যুময় ঈষৎ)
আজ তৃতীয় বাণী অনুবাদের চেষ্টারত। এই অনন্য কবিতাটি 'তের্জা রিমা' আর 'ইয়াম্বিক পেন্টামেটার' নামক চমৎকার সুরেলা ছন্দে রচিত। মূলকবিতায় তের্জা রিমার এই বিন্যাসটি (A-B-A, B-C-B, C-D-C, D-E-D, E-E) ব্যবহৃত হয়েছে। তদ্রূপে আমি তৃতীয় বাণীর ক্ষেত্রে (কে-নে-কে, নে-আদ-নে, আদ-রে-আধ, রে-নো-রে, নো-নো) এই বিন্যাসটি রেখেছি। তবে মূল কবিতা থেকে অর্থান্তর না করার আপ্রাণ চেষ্টা ছিল।
অতিবিখ্যাত রোমান্টিক ইংরেজ কবি 'পার্সি বিশ শেলি(১৭৯২-১৮২২)'র "Ode to the West Wind(১৮১৯)" ধ্রুপদি কবিতাটি অনুবাদের চেষ্টা করেছিলাম, প্রথম বাণীটি শেষে আজ দ্বিতীয় বাণী অনুবাদের চেষ্টা করেছি। এই অনন্য কবিতাটি 'তের্জা রিমা' আর 'ইয়াম্বিক পেন্টামেটার' নামের অসাধারণ সুরেলা ছন্দে রচিত। 'তের্জা রিমা' সম্পর্কে একটু আলোকপাত করছি, এটি অন্তঃমিল দেখে, ১৪ পঙ্ ক্তির প্রতিটির শেষে এই প্যাটার্ন (A-B-A, B-C-B, C-D-C, D-E-D, E-E) রাখতে হয়। আমি দ্বিতীয় বাণীটি অণুবাদের সময় (রে-তা-রে, তা-এর-তা, এর-কে-এর, কে-নো-কে, নো-নো) এই প্যাটার্নটি রেখেছি। তারপরও মূল কবিতা থেকে অর্থান্তর না করার আপ্রাণ চেষ্টা ছিল। কতটুকু সার্থক হয়েছি- তা আপনাদের বিচার্য ।