[justify]গান, অর্থাৎ সঙ্গীত। আহ! কী হৃদয়ব্যাঞ্জনাকর একটা বিষয়! কথা আর সুরের মায়াজালে আমাদের নিয়ে চলে সময় আর অনুভূতির সীমাহীন কল্পনার জগতে। এ নিয়ে আমার ছোটবেলা থেকেই ব্যাপক আগ্রহ। কিন্তু কেন জানি আমার কাছে সুরটাই বেশি ভালো লাগত। সেখানে গানের কথা কিংবা মর্ম বোঝাটা খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার ছিলনা। আর তাই, স্বতস্ফুর্ত আবেগে এই বাজখাঁই গলার টোন টিউন না করে, কিংবা পরিবেশের আশু শব্দদূষণের সম্ভাবনার তোয়াক্কা না করে কেবলমাত্র লা-লা-লা অথবা উম-উম-উউউ করেই আমার সঙ্গীত চর্চা চালিয়ে যেতাম সারাদিন। আর একারণে প্রাণপণ চেষ্টায় এখন আগের শোনা অনেক গানের সুর মনে করতে পারলেও কথা স্মরণ করতে পারিনা। আমাদের একান্নবর্তী পরিবারের বাসায় তখন শুধু একটা রেডিও আর একটা ১৭ ইঞ্চি ফিলিপস্ টিভি ছিল। সেখানে ঐ সময় কেবল শুক্রবারে বাংলা ছিনেমা দেখাত আর সম্ভবত সোমবারে ছায়াছন্দ হত। তাছাড়া হিন্দী ন্যাশনাল চ্যানেল ধরত টিভিতে ডিশ না থাকলেও, বর্ডার এলাকায় গ্রামের বাড়ি থাকার সুবাদে। সেখানে কিছু গানের প্রোগ্রাম হত আলিফ লাইলার পাশাপাশি।
এ গল্পটি বিদ্যানারায়নের। অথচ চাইলে এটি অন্য অনেক কিছুর গল্পই হতে পারতো। তা হয় নি কারণ আজ বিদ্যানারায়নের সামনে মেলে ধরা বইয়ের পাতার গুটি গুটি অক্ষরগুলো ঝাপসা হয়ে আসছে। সারি সারি সমীকরণের গোলকধাঁধায় দিশেহারা হচ্ছে বেচারা। নিশ্চিত ভাবেই আজ বিদ্যার্জনের জন্য প্রসন্ন দিন নয়। আজ ডিসক্রিট সিগন্যাল আর মাইক্রোপ্রসেসর ইন্টারফেসিং বইগুলো তাকে তুলে রাখার দিন । আজ বিদ্বান হবার দিন ন ...
শামীম।
আমরা ডাকতাম বড় আম্মা। আম্মা আব্বা ডাকতেন “নানীজী”। প্রথম দিকের স্মৃতি যা মনে পড়ে তা হলো সাদা শাড়ি পরা একজন বুড়ো মানুষ। সফেদ চোখ মুখ। বিড়ালের চোখের মতো ঘোলা চোখ। হাতে তসবি। জায়নামাজে বসা। আমার স্বল্প স্মৃতিতে বড় আম্মাকে কখনো জায়নামাজ ছাড়া অন্য কোথাও দেখিনি। তাকালেই মনে একটা শান্তি শান্তি ভাব চলে আসত।
বড় আম্মার ছেলে ছিলেন একজন। আম্মার মামা। আম্মা বলতেন মামুজী। চিটাগা ...
১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর ছিলো অবরোধ দিবস। সারা দেশ থেকে দলে দলে মানুষ এসে জড়ো হয়েছিলো ঢাকায়।মিছিলে মিছিলে উত্তাল হয়ে উঠেছিলো সেদিন ঢাকা নগরী।গুলিস্তান-বংগবন্ধু এভিনিউ-বায়তুল মোকারম এলাকায় জনতার ভিড়ে, সমস্ত জনতাকে ছাপিয়ে বারবার একটি মুখই উদয় হচ্ছিলো। আর সেটি নূর হোসেনের।খালি গা। জিন্সের ট্রাউজার পরনে।বুকে পিঠে স্লোগান লেখা—স্বৈরাচার নীপাত যাক/গণতন্ত্র মুক্তি পাক।সে ছুটছিল ...
বৃষ্টির রাতে রিক্সাটা যে পথ ধরে এগুচ্ছে, সে পথের শেষে কেবল একটা সিল্কের বোরকা দেখতে পাওয়াটা ভালো কথা নয়। বৃষ্টিস্নাত রাস্তা চকচক করছে। চকচক করছে সিল্কের বোরকা। পর্দায় মুখ ঢাকা। কিন্তু আমি আশংকা করতে পারছি এর আড়ালে কে আছেন।
রিক্সাটা এপথে আর না এগুলে পারে। বোরকা পরিহিত মহিলাটি আর দাঁড়িয়ে না থাকলে পারেন। রাস্তায় আরো চৌদ্দটা মানুষের ভিড়ে সেই মহিলা বা আমার মুখ আড়াল হয়ে যেতে পারে ...
তুমি নেই, তবু কিছু ছায়া জেগে আছে
তাতে বৃথা বৃষ্টিপাত--সমুদ্রঘুম
যে যাবার সে বহুদূর চলে গেছে--একা
এলোমেলো হাওয়ায় পায়ের কাছে উড়ে এলো কিছু ধুলো
এতোকাল ভুল বিশেষণে ইতি-উতি অপ্রস্তুত পড়ে থাকা
বলে গেল সুপ্রভাত; শিউলিভোর !
শুধু, মাঝে-মাঝে জলের সাথে ভাসতে-ভাসতে
কিংবা ছড়িয়ে যেতে-যেতে তার ছবি ভেসে আসে
মনে পড়ে
সেই কবে সে গানের সাথে ভেসে গেছে
কালস্রোতে !
[অ্যালেন গিন্সবার্গ এর ‘After Lalon’ এর অনুকরণে ]
এক.
বড় বেশি পার্থিব হয়ে গেছি। ছোট বেলায় পরিবার পরিজনেরা সবাই বলতো পার্থিব হতে, বড় হতে, গাড়ি ঘোড়া চড়তে। লালন বলতো ভিন্নকথা, বলতো তাঁর ভাষায়- “সর্ব সাধন সিদ্ধ হয় তাঁর...মানুষ গুরু নিষ্ঠা যার”, “পার্থিব মায়ায় আবদ্ধ হয়ো না”। বড় হওয়া কি জানি ...
বাংলাদেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ববিয়ালয়ের অমুসলিম ছাত্রদের জন্য আলাদা হলের ব্যবস্থা আছেঃ জগন্নাথ হল।এই হলে কয়েকটি ভবন আছেঃ উত্ত্র বাড়ি,দক্ষিণ বাড়ি ইত্যাদি।তবে একটি দুর্ঘটনার স্মৃতি নিয়ে তৈরি করা হয়েছে নতুন ভবনঃ অক্টোবর ভবন।
১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর রাতে জগন্নাথ হলের অডিটোরিয়ামে প্রায় ৪০০ ছাত্র সমবেত হয়েছিল একটি নাটক দেখবার জন্য।তখনকার অতি জনপ্রিয় সাপ্তাহিক নাটক ...
এক পেশার মানুষ আমি ব্যাপক ডরাই, নাম শুনলেই আত্মা ধুকপুক শুরু করে, গলা শুকায় আসে, হাত-পা ঘামতে থাকে, ঘনঘন ছোটঘরে যাতায়াত বাড়তে থাকে। তাহলে এতই যদি ডরাই, তাগো কাছে না গেলেই পারি, দূর দিয়ে হাটলেই পারি, কিন্তু তা হবার নয়। কপাল এমন খারাপ যে কি বলব, যাকে বলে এক্কেবারে ব্যাড লাকের ভাগ্য খারাপ। সবাই নিশ্চয় এতক্ষনে মুখ চাওয়াচাওয়ি করতেছেন যে, এই ব্যাটা কয় কি? কিছু খাইছে নাকি? আরে না ভাই, অনেকে অধ ...
-- অনন্ত আত্মা
জীবনে প্রথম গ্রামে এসেছি, উৎসাহ-উদ্দীপনায় তাই একদম ফেটে পড়ছি। খোলা আকাশ, দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠ, হাজামজা পুকুর – যাই দেখছি তাতেই মুগ্ধ হচ্ছি। এখন শীতকাল তাই সরষে ক্ষেতে সরষে ফুলের সমারোহ। মাটির রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেলে দু’পাশের সরষে ক্ষেত থেকে সরষে ফুলের মন কেমন করা গন্ধে মাতাল হতে হয়।
সারাদিন দৌড়-ঝাঁপ ছুটোছুটির পর রাতে যে মরার মতো ঘুমাবো এতো জানা কথা। রাত আটটা ব ...