ঘরের চালের ছন বেয়ে ফোঁটা ফোঁটা ঝরছে বৃষ্টির পানি। মা রান্না চড়িয়েছেন। পিঁড়িতে বসে মাথায় উঁকুন খুঁজছে ছোট বোনটা। চুলার সামনে জলচকিতে বসে শীত শীত ভাবটা খুব মিষ্টি লাগে আমার। শুকনো খড়ির অভাবে মা চুলোয় দিয়েছে স্যাঁতস্যাতে নাড়া। তুষের ছিটায় আগুন জ্বলে মাঝে মাঝে। বাকী সময় কেবল কুয়াশার মতো ধোঁয়া। বৃষ্টির ফোঁটা, ছিটে ছিটে ঢেকে দিয়েছে আমনের সবুজ পাতা, কুমড়োর মাঁচা। গাব পাতার পাতলা মাথায় বাবা ঘাস ফড়িং ধরছে
স্মৃতির শহর কিন্তু থাকার জন্য দারুন। ওখানে না-গরম, না-ঠান্ডা, লোকজনের ব্যবহার মধুর, রিকশা ভাড়াও বেশ কম। কলে পানি পাওয়া যায় ঠিকমতই, ধূলাবালির প্রকোপ তেমন নেই, মশার উপদ্রব সহনীয়, অসুখ বিসুখের বালাই নেই, কাজকর্ম করলেও চলে, না করলেও অসুবিধা নেই। লোডশেডিং শুধু পূর্ণিমা রাতেই হয়, সাথে একটু উতল হাওয়াও থাকে। বিনা টিকেট, বিনা পাসপোর্টে সেখানে ঢোকা যায়, যতদিন খুশি থাকুন সেখানে কেউ কিছু বলবে ...
আমার ইদানিং হয়েছে শনির দশা। পেটের ব্যামো ছিল অনেকদিন ধরেই। সময় মত খাওয়া দাওয়া করে তাকে বাগে এনেছিলাম একরকম। জানুয়ারি মাসে পরিবারের একজনকে ব্যাংকক নিয়ে যেতে হল চিকিৎসার জন্যে। তারই অনুরোধে নিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ঢেকি গেলার কাজটি ঠিক হয় নি এখন বুঝি। ডাক্তার একগাদা স্বাস্থ্য পরীক্ষা লিখে দিল, আল্ট্রা-সোনো, এন্ডোসকপি আর কত কি! একে একে সব ...
কি খেয়েছো বাবু? কি রান্না করেছো আজকে? শরীরটা কেমন আছে? আজকে কি স্ন্যান করছো? পড়াশুনা কেমন হচ্ছে? কল্যান (আমার ছোট ভাই) তো পড়াশুনা করে না, ওকে একটু ফোন দিও...
আরো কত্তো কি যে কথা তার। আমার "মা"!!!
সেই জন্মের পর থেকেই তার শাসন, আদর, স্নেহ, ভালবাসা দিয়ে তিলতিল করে গড়ে তুলছে, তারই দেহের অবিচ্ছেদ্য একটা অংশকে। যার ফসল আজকের এই আমি। কতো স্মৃতি যে তার সাথে জুড়ে আছে তা এই দুই কলম দিয়ে লিখে শেষ করা যা...
ভূগোল বিষয়ক
ভূগোল শিখতে গিয়ে বৃত্তের ফাঁদে পড়ে জেনেছি--সব পথই ফিরে ফিরে ধাঁধাঁ। কুটিল-জটিল যা-ই লিখে ফেলি--
লিখে ফেলি--পথিক হতে গিয়ে যে পথ হারিয়েছি ক্রোধে-- আমি তার বিন্দুমাত্র ফিরে পেতে নতমস্তকে বারবার ফিরে আসি পথে।
রহস্যলতিকা
রহস্যলতিকা, আজ বসে আছো ভেবে
তোমার ঘূর্ণনরীতি কেন্দ্রাভিমুখে ছুটে আসছে বারবার
ফলত তোমার যাপনরীতি কিছুটা স্থূল--জটিলরৈখিক
তাতে ঝুলে আছে তৈলাক্ত ভ্র...
বাংলাদেশ আর আমি প্রায় সমবয়েসী। আমাদের জন্ম কাছাকাছি সময়ে, আমরা বেড়েও উঠেছি প্রায় একই সঙ্গে। আমি যেবার স্কুলে ভর্তি হই, তার কয়েকদিন আগেই বাংলাদেশকেও ভর্তি করা হয় সেনাবাহিনীর পাঠশালায়। আমি কলেজে ভর্তি হতে হতে বাংলাদেশে সামরিক শাসনেরও দশ বছর পূর্ণ হয়ে গেছে, আর আমি যখন কলেজ পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের খোলা জীবনে পা রাখলাম, বাংলাদেশও তখন সামরিক ভূত গা থেকে ছেড়ে গনতন্ত্রের দিকে পা বাড়ি...
শ্যাষের শুরু অ্যাশের গুরু
দমের দামে চুলবুলি
ব্যাসের পুরু দ্যাশের ঊরু
যমের নামে বুলবুলি,
দ্যাশের কথায় খেপলি ক্যান?
খেপলে পাবি ফোকলা ঝোঁপ
ব্যাসের কথাই শুনলি ম্যান !
ব্যাসের বাক্যে দোকলা কোপ,
কোপের বাক্যে শ্রুতিভ্রম!
ভ্রমেই ফলবে শুদ্ধভাম
তোপের ঝাঁক্কে ত্রুটিক্রম
ক্রমেই পাকবে ঋদ্ধকাম,
কামের কথায় শরম পাস!
শরম ভাগবে চান্দে
চামের উপর গরম চাস?
গরম ফেলবে ফান্দে,
ফান্দে ঘুমা...
তোমার ইচ্ছের কথা সঞ্চিত আছে গুহামুখে
তোমার জন্য অপেক্ষায় আছে রোদ
তোমাকে কেন্দ্র করে বেড়ে উঠছে
দিনের প্রথম কোলাহল
অথচ তোমাকে কাঁপাচ্ছে ঋতুমতী মেঘ
তোমাকে কাঁপাচ্ছে বর্ষাযাপনের কলা
কত আলোকবর্ষ দূর হতে
ধূপগন্ধ ছড়াচ্ছে সেইসব মৃত মুখ
--তাদের বায়বীয় ডানা
প্রস্তাবনা
সত্যিকার অর্থে ইতিহাসের কোনও মূল্যায়ন হয় না। ইতিহাস স্বকালের মূল্যায়ন। করতে পারলে ইতিহাস, নয়তো যেমন যাচ্ছে যাক। তাই, আমি খুব একটা মে ৬৮’র ফল কিংবা অফল কোনোটা নিয়েই ভাবি না। মে ৬৮ সফল না বিফল। ক্ষণস্থায়ী না দীর্ঘস্থায়ী। কিচ্ছু না। কোথায় কোন ফরাসি দেশে ছাত্রজনতার পাগলামি, বুনো কীর্তিকলাপ। বুনো বেড়ালপনাও বলতে পারেন, ওয়াইল্ড-ক্যাট প্রটেস্টের তর্জমায়।
১৯৬৮ সনের ছাত...
স্মৃতির শহর -২: ইচ্ছে হয় কান পেতে থাকি
ঝকঝকে একটা দিন, জ্বালা ধরানো নয় বরং বেশ শান্ত ও সুশীল টাইপের রোদ উঠেছে। উত্তাপহীন রৌদ্রকরোজ্জ্বল এই দিনে আকাশটাও বেশ ঘন নীল, খুঁজলে কিছু সাদা মেঘও পাওয়া যাবে। এই রকম দিন আপনি বাস্তবে বেশি না পেলেও স্মৃতির দিনগুলো হরহামেশাই এই ধরনের হয়। আমি মাঝে মাঝে এখনো দেখতে পাই এই রকম একটা দিনে আমাদের বাসার ছাদে দাঁড়িয়ে আমি আর তিথী মুগ্ধ চোখে রেলগাড়ি দেখ...