সমর কুমার চাকমা আমার কাছের কেউ নয়। বলা যায় পাশের বাড়ির মানুষ। পাশের বাড়ির মানুষেরা তো আমার নিজের বাড়ির মানুষদের মত আপন কেউ নয় আসলে। ওয়াইফাই আর ফোরজি সিগন্যালের কল্যাণে আমরা পুরো বিশ্বের সাথে নিজেদের সংযুক্ত করে ফেলেছি ঠিকই, কিন্তু একই সাথে শত ফুট উঁচু দেয়াল তুলে দিয়েছি নিজের চারপাশে। এই দেয়াল টপকানো সহজ কোন কাজ নয়।
৯। দু'দিন পর । ডক্টর আদিত্যদের হোটেলে আমাদের মিটিং । ডক্টর আদিত্যের ঘরেই। ঘরটা বেশ বড়ো, চমৎকার সাজানো । আমরা সবাই কেউ চেয়ারে, কেউ তেপায়ায়, কেউ টুলে, কেউ সোফাতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসেছি ।
৮। দীর্ঘ যাত্রার শেষপ্রান্তে পৌঁছলাম অবশেষে। এসে গেল আমাদের গন্তব্য। ট্রেন থামলে ধীরেসুস্থে সব গুছিয়ে যখন প্ল্যাটফর্মে নেমে এলাম, তখন চারিদিকে শেষ বিকেলের মায়াবী আলো।
৬।
আমরা ফিরে যাচ্ছি আদিত্যনগর থেকে। প্রায় শেষরাত্রে উঠে তৈরী হতে হয়েছে, তারপরে আবার ঐ অত ভোরেও ডক্টর আদিত্য আমাদের জন্য ব্রেকফাস্টের আয়োজন করেছিলেন, কিছুতেই না খাইয়ে ছাড়েন নি। আমি অবশ্য চা আর টোস্ট ছাড়া আর কিছু খাই নি। কাশ্মীরাও টোস্টও খায় নি, শুধু চা আর একটা বিস্কুট খেয়েছে।
৫।
"সবুজবীথি" থেকে বার হয়ে আবার একটা ছায়াশীতল রাস্তা, সেই রাস্তা দিয়ে গিয়ে পৌঁছলাম একটা বড়ো দিঘির কাছে, নির্জন ঘাটের কাছে ছায়া মেলে দাঁড়িয়ে আছে এক মস্ত ঝুরি নামানো বট। বটের ছায়ায় বসলাম সবাই।
৪। আমরা ঢুকতে মিউজিয়ামের প্রৌঢ় কিউরেটর নিজেই এসে অভ্যর্থনা করলেন। ডক্টর আদিত্য পরিচয় করিয়ে দিলেন ওঁর সঙ্গে। ওঁর নাম অসিতদেবল বসু, উনি ইতিহাসবিদ। ঐ মিউজিয়ামে কাজ করছেন প্রায় ত্রিশ বছর। তবে এই কাজ ওঁর আংশিক কাজ, উনি ইতিহাসের নানা বিষয় নিয়ে গবেষণা আর লেখালিখিও করেন। ওঁর বেশ কিছু ইতিহাসবিষয়ক বই প্রকাশিত হয়েছে গত বিশ বছরে। এ ছাড়া বিভিন্ন জার্নালে বেশ কিছু গবেষণাপত্রও বেরিয়েছে।
৩। ভোর ভোর গন্তব্যে পৌঁছল বাস। আমি শেষরাতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম আবার । হঠাৎ শুনি ঝাঁকুনি দিয়ে কে যেন ডাকছে, "আবীর, আবীর, ওঠো। পৌঁছে গিয়েছি আমরা।"
কুয়াশাজড়ানো স্বপ্নের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসি ঝাঁকুনি খেয়ে, কাশ্মীরা আমাকে ডাকছে। জেগে দেখি বাস পৌঁছে গিয়েছে। ঘুমভাঙা চোখে যাত্রীরা সব হাই তুলতে তুলতে চোখ ডলতে ডলতে জিনিসপত্র গুছিয়ে নামছিল। আমরাও।
এই গল্পটি আপনাদের জানার কথা ছিলো না। আমারও ছিলো না। এই গল্পটি যার জীবনের, সে কখনও এই কথা কাওকে বলে নি। কোনদিন কেউ জানুক, তা সে কখনও চায় নি। এই কথাগুলো সে রেখে দিয়েছিল, গহীনে, বুকের অতল অন্ধকারে, যেখানে বাইরের আলো কখনও পৌঁছায় না। তার ইচ্ছে ছিল, সে বুকের ভেতরে কথা জমিয়ে মুক্তো তৈরি করবে।আপনারা জানেন তো নিশ্চয়, কথারা জমে জমে মুক্তো দানা হয়। সে ঝিনুক হয়ে ভেবেছিল, অনেকগুলো মুক্তো জমা হলে তা দিয়ে এই পৃথ
[ধারাবাহিক উপন্যাস]
আকাশলীনা নিধি, নজরুল ইসলাম দেলগীর
১.
’আছে মুরগী, দেশি মুরগী, মুরগী নিবেন মুরগীইইইই’ বলে রাস্তায় ফেরিওয়ালা চেঁচাচ্ছে। সেই শব্দে জয়ার ঘুম ভেঙ্গে গেলো। মুরগীওয়ালা রাস্তা দিয়ে এখনো ন্যাকা স্বরে ’আছে মুরগী, মুরগী নিবেন মুরগীইইইই’ বলে চেঁচাচ্ছে। জয়া বিরক্ত হয়ে কম্বল মুড়ি দিয়ে আবার ঘুমুতে নেয় আর তক্ষুণি তার মনে পড়ে যায়, ইশকুল!