প্রলয়ের দিনে,
তেপনের চারপাশে মৌমাছি চরে
জেলে জোড়ে ঝকমকে জাল
সুখী তিমিকের দল লাফায় সায়রে
কিশোর চড়ুই খেলে ছাতের নালার কাছে
সাপগুলো সোনালিবরন, যেমন হওয়ার কথা।
প্রলয়ের দিনে,
ছাতা কাঁধে রমণীরা মাঠ ধরে হাঁটে
উঠোনের পাড়ে বসে ঝিমোয় মাতাল
সব্জিওয়ালা এসে চেঁচায় গলিতে
দ্বীপ ঘেঁষে আসে এক হলুদ পালের নাও
অফুরান বেহালার স্বরটা হাওয়ায়
নিয়ে যায় তারাভরা রাতে।
আর যাদের আশঙ্কা ছিলো বাজ-বিজুলির
অধিক কী বলি আর
পাখটিভিস্ট বন্ধু ওয়াছিম কাগমারির কথা।
হলে গেনু পরস্ত্রীক, 'হাওয়া' সিনামাটি অবলোকিনু
বাইর হইতে না হইতে কুথা হতে আসিয়া সে ঠাসিল কলার মম।
হুঙ্কারিয়া শুধাল কুশল, খেলায়েত কবি! শালিকের মাংস দিয়া ভাতভুত খেয়ে
খুব মুটাগাটা হয়েছস দেহি! তারপর সে দৃষ্টি হানে হাওয়াসাথী পরস্ত্রীর দিকে,
হাসে কিটিকিটি।
আমি পড়ি মহা মুশকিলে। শালিকের মাংস আমি কেন খাব? পাবই বা কুথা?
যখন ব্যস্ত ফুলের দল মুহূর্ত গুণে
চেনা রাস্তায় ঘরে ফিরে
তখন মেরুন সন্ধ্যালোকে
কোলাহলে আড়াল তোর আমার গুঞ্জন
নিয়ন অন্ধকারে মুখোশ খুলে
তোর সুরে চিৎকারে
দৃষ্টির কামনায় মমতার ছন্দ
বাধার অরণ্যে তোর ঘ্রান
একমাত্র নিশ্চিত স্থানাংক
ভাঙনের খবরে ঘুম ভাঙে
অচেনা ঘরে কম্পিত শব্দে
সতন্ত্র সাহসীর ভয়ার্ত চিৎকারে
হঠাৎ খুন হয়েছে
স্বপ্ন মোড়া আমার বিষণ্নতার একমাত্র ঠিকানা
কবিতাটার খোঁজ পেয়েছিলাম খোমাখাতায়, সচল দ্রোহীর একটি মন্তব্যে। কবিতাটা পড়ে মনের মধ্যে একটি অস্থিরতা শুরু হলো, বুকটা কোথায় যেন ধক করে উঠল। মন চাইছিল নিজের মতো করে, নিজের ভাষায় সেই গল্পটা ছড়িয়ে দেওয়ার। তাড়াহুড়ো করেই তাই অনুবাদের চেষ্টা করে ফেললাম। মূল কবিতাটা পাওয়া যাবে এখানে…
হৃদয়ের রক্তক্ষরণ বন্ধ হয় কখন?
কখন নিঃসঙ্গ পাখি ঘরে ফিরে আসে?
ভবঘুরের জন্য কেউ কি দরজা খোলা রাখে?
কেউ কি খুঁজে পায় স্বাধীনতা---
সেটা কোথায়, কখন, কোন ভূমিতে?
যেখানে এসে হৃদয় চাঞ্চল্য থেমে যায়,
অবসন্ন মন শান্তি খুঁজে পায়,
সব কোলাহল, আর্তনাদ,মুমূর্ষু ক্রন্দন
চিরকালের মতো স্থবির হয়ে পড়ে।
সেটা কোথায়, কখন, কোন চরাচরে?
হে স্বাধীনতার ফুল,
আলামিন ভাতের হোটেল পারে পানের দোকানে
চাবাইতেছিনু পান। তখন অকস্মাৎ
পাঠাও চাপিয়া এসে উপস্থিত হাউমাউ ক্রন্দনরত গেনী বন্ধু ইছহাক
চন্দ্র বিদ্যাসাগর। পাঠাওয়ের ইয়ামহা চালকটি পরম আদরে
মুছাইয়া দিল গেনী ইছহাকের অশ্রু একটি বাতিল রুমালে। আমা পানে
ইছহাককে আলিঙ্গন বাগাইয়া আগাইতে দেখিয়া সে করিল হুশিয়ার, ভাই এট্টু দেইহেন।
তারপর চলে গেল ভো ভো করে কুথা পানে যেন।
রাত্তিরে ইদানীং তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ি
নিমীলিত লেপ্টপ, বিস্ফারিত চক্ষু ও বিনিদ্র কান লয়ে
ঘন্টা দেড়দুই গুনি মশারির ছিদ্র আর শুনি বিবি ঘুমঘোরে কাকে যেন বকে।
মশা নয়, নয় কুন ফেসবুক-বান্ধবীর পালোয়ান খসমের ভয়
রক্তে খেলা করে আরও গুরুতর বিপন্ন বিস্ময়
ভয় করি রাত্রের রাজা ছিলিমোল্লা বাজাজকে।
আজ ওনার জন্মদিন। সব মানুষই নিজের জীবন দিয়ে যা বুঝতে পারে সেই বিষয়গুলো নিয়ে ৮৫ বছর বয়সে এই অসাধারণ কবিতাটি লিখেছিলেন লেখকদের লেখক খ্যাত হোর্হে লুইস বোর্হেস, ৮৬ বছরে তিনি মারা যান দুর্দান্ত এক জীবন শুষে নেওয়া জীবনের শেষে। কোন এক বৃষ্টি ভেজা দিনে আনমনে দুর্বল অনুবাদ করেছিলাম ইংরেজিতে থেকে (স্প্যানিশ ভালো পারি না বিধায়)- ( ছবিটা সাহারা মরুভূমিতে তোলা)
'যদি আরেকবার জীবন শুরু করতে পারি'
আশ্চর্য নয় কিছু,
নিতান্ত প্রাকৃতিক।
আমি উঠে প্রবল অবিশ্বাসে আমাদের চুল, বালিশ, পোশাক শুঁকে শুঁকে দেখি
একান্ত নীরবতায় আমার বিস্ময়, বিহ্বলতা কাটিয়ে
ঘ্রাণটা কিসের, তাই ভাবি!
জানালার গাছ, পাতার গন্ধ, ফুলের গন্ধ নয়
কী নাম দেব সেই ঘ্রাণ, কী হতে পারে বন
ঘুমের ভেতর এ কোন ঘ্রাণের স্বপ্ন আরণ্যক?
উর্বর মাটি? মাটিরই মতো- কিন্তু মাটিও না,
গাছের কটিতে ঘর বাঁধা কোনো পাখির কচি পালক?
নিষ্প্রাণ কোনো শরীর?