সরসিজ আলীম_এর কবিতা
গান ওড়ো স্বপ্ন ভাসো
তোমার সাথে তাহার গান হয়েছিলো
তোমার সাথে যেদিন গান হয়েছিলো
দেবদারু পাতার তল হ’তে ছায়ারা সব উড়তে শুরু করেছিলো;
দেবদারু ছায়ারা তোমার কপালে লাল টিপ এঁকেছিলো,
আর লাল জামা পরিয়ে দিতে পেরেছিলো,
আর কালো ওড়নায় প্রজাপতির ডানা বেঁধে দিয়েছিলো।
তুমি এখন চাইলেই পাহাড়ের গায়ে একথোকা বুনোফুল হতে পারো,
আর হতে পারো ঝরণার জলের উপর দিয়ে ...
ক্ষরণের স্রোতে জোয়ারের চাপ,
উন্মুক্ত রাক্ষস দাঁতে শান দেয়,
মুখে উন্মত্ত হায়নার হাসি।
সারা বন জুড়ে ঢিঁঢিঁ-
রাক্ষস তার থোরাই পরোয়া করে!
নিঝুম অরণ্যে আজ পিশাচেরা ঘুরে বেড়ায়-
ছোবল ছোবলে শুষে নেয়
সবুজের তিব্রতা।
রাক্ষসেরা ভাগ পায়; ভোগ পায়-
তাদের উল্লাস ধ্বনি ছুটে যায় দূর থেকে দূরে...
বাঘের গর্জন চাপা পড়ে যায়
বারবার
পাথরের দেয়ালে ধাক্কা খেয়ে- যেন পেছনেই ফিরে আসে।
এসো... একসাথে বু...
একটি গোলাপ খুঁজছি সারাদিন
বুদ্ধিদীপ্ত মেধাবী একটি সন্ত-গোলাপ
অসাম্প্রদায়িক কোন সিঁড়ির পাশে
যে আজও ফুটেছে নিজস্ব নিয়মে!
কোন মন্ত্রকের সরকারী বাগানে নয়
নয় কোন নেতার চিত্তের তত্ত্বাবধানে
কোন বিচারকের বাগানবাড়িতেও নয়
নয় কোন জাত অভিনেত্রীর আদর-যত্নে।
একটি গোলাপ খুঁজছি সারাদিন
টকটকে রক্তলাল তাজা একটি গোলাপ
যে সারাদিন তাকিয়েছিলো সূর্যের দিকে
পাঁপড়িতে জড়িয়েছে বিজয়ের আবাহ...
কবিরা নামতা পড়ে শূন্য এক কালের ভেতরে। কবিতার
গ্রীবা ছুঁয়ে দেখে মুখ রাতের মরমে। কলতান প্রিয় মাঠে
শস্যও সুধায় কুশল। মানুষের ঘরজুড়ে ছবিগুলো ঝুলে
অনিবার। কার মুখ , কার হস্ত - ছাপের কর্তৃত্ব বাড়ায় !
কে এসে এই ঘরে রেখে যায় সলতের আলো। তাহাকেও
চিনে কবি, আর চিনে দীঘির যৌবন। টলমল জল নিয়ে
কতসুখে কাটায় দুপুর। যেভাবে মানুষও পারে ঢেকে যেতে
বনের আড়ালে। ভোগবাদী দিনগুলো ছেড়ে দিয়ে জলের
গভীরে। ক...
তুমি এই জানালার নির্বিকল্প ছায়া
উঠানে যে বিকেল নামায়,
জড়িমা উড়ালে তুমি একমাত্র স্বপ্নের গৈরিক
আমার সন্ন্যাসে যার গৃহীর আবাদ।
অনাবাদী জমিনের ফাটল ভরানো প্রীত জল
নৌকারে তুলে আনো উজানের অমানিশা হ'তে।
তোমার আঘাতে সুখ, মধু জমে নীল বিষ পাপে,
নীল্ ব্যাধ তূণ ছাড়ে জলে নামা মানবী ছায়ায়...।
তুমি সেই উল্কা যার আগুনের ফলা ভালোলাগে
শবরী প্রতীক্ষা শেষে বান শুনি শরীরের কোনায় কোনায়
কুয়াশা র...
নিমগ্ন রাত চুপচাপ ছিল
তুমি আসবে তাই,
জোস্নার পরত নেমে এল
মুছে মুছে মখমলি আধার ,
হাস্নাহেনার সুগন্ধি ধার এনেছিল হাওয়া
অথচ আমাকে বলেনি কেউ কিছু ।
সপ্নলোকের অজবিথী বেয়ে
নেমে এল সেই ক্ষন
আমার দোরে তোমার মৃদু পদার্পন ।
কল্পনার তেপান্তরে তোমার সাথেই ছিলাম
মেঘের পংখিরাজে ,
চুপি চুপি কখন তাই হয়নি জানা, এসেছ ।
অধরে স্পর্শের উষ্ণ স্রোতে
টেনে নিলে সপ্ন জীবি আমাকে
বাস্তবতার শক্ত বুক...
কোপেনহেগেন-২০০৯
জল এবং বায়ুর হিস্যা , আমাদের কোনো দিনই প্রয়োজন ছিল না।
আমরা চেয়েছিলাম একবাটি ভাতের ফেন, একটা মলিন কম্বল আর
একটা মাটির কলস। বিশুদ্ধ জলপানের মুগ্ধ নেশা পরিত্যাগ করে
আমরা কাদাজলে ভাসাতে চেয়েছিলাম আমাদের ভাঙা নৌকো।
রক্তের অনাদি অস্থি দিয়ে তাই এঁকেছিলাম প্রিয়তমা স্বদেশের ছবি।
গণিকা ভোরের মায়া ভুলে কনুই পুঁতে দিয়েছিলাম এই মাটিতে,অস্ত্র
লুকিয়ে রেখে মায়ের ছেঁড়া...
ঠোঁট আর কাপ মিলিত হয়েছে ভাষায়-ভাঙনে বহুবার
চারপাশ থেকে উচ্চারিত হয়েছে শব্দ-চুকচুক, চাক-চাক
আবেনময়ী চাঁদবাঁকা সেই ঠোঁট আর কাপের দূরত্ব দেখি
দেখি তাদের- শীর্ণতায়, শুষ্কতায়- করিডর ও পাঠশালায়
খুববেশি হলে ঠোঁটের ছাপচিত্র মাখে কিছু রঞ্জিত পেলব
আর কাপের ধনাঢ্য শরীরে ফিরেআসা ঠোঁটের ধূম্রজাল।
ঠোঁট আর কাপ মিলিত হয়েছে দিনে-রাতে, ঝড়ে-বন্যায়
ঠোঁট আর কাপ বৃক্ষের বাঁকলের মতো করে...
বেশ বাসী লেখা, বলতে গেলে প্রাচীন, এতদিন সাহস পাই নাই, আজ খাসা সব পোমো এন্ট্রি দেখে মনে হলো, দেখিনা কি হয়? সবই স্বতন্ত্র, আর এরা কিন্তু কবিতা ।
শিরোনামহীন
বউ ঠাকুরানীর হাঁটে আউলা এক বাউলা আইলো। প্রলাপে-আলাপে খালি মোক্ষের কথা কয়; মোক্ষ, মোক্ষ বইলা ফ্যানা তুইলা ফ্যালে। শালায় শ্রোতা পায়না কেউ, শুধু এক প্যাঁচা আর ইঁদুর নাকি ভক্ত তার, আর বাকী সব ফালতু। তাই দেইখা হা হা হাসে খ্যাঁকশিয়াল। ...
ওরা আমার চেয়ে জানে বেশী , প্রবাহিত হতে হতে
রেখে যায় পলির প্রতীক আর মানুষের জন্য উর্বর
ভালোবাসা , জীবনের জৈব রসদ। ওরা আমাকেও
শেখায় , কীভাবে বুকের স্রোতে নিরন্তর সুর্যেরা আলো
ফেলে জাগায় চরের সবুজ , কীভাবে মাঝিমন্ত্র শিখে
নায়ের গলুই ছুটে চলে উত্তরের সন্ধানে , একান্ত দক্ষিণ থেকে
নিরক্ষর নদীগুলো
আমার চেয়ে জানে অনেক কিছু বেশী
এবং আগাম বুঝতেও পারে
কখন আসবে ঝড় , তুফানের তৃতীয় বাহুতে
...