মৃতদের প্রতি বিনীত অনুরোধ
মৃতরা কখনই জানে না জীবিতরা কেমন আছে
তারা জানে না এখানে এখন কত অশান্তি
কত মারপ্যাঁচ, কত হিসাব-নিকাশ, কত কৈফিয়ত-তলব
এসবের উর্ধ্বে থেকে মৃতরা যে প্রকৃতপক্ষে সুখেই আছে
সেটা তারা প্রায়শই: ভুলে যায়।
তাই প্রতিরাতে তারা আমাদের ঘুমে হানা দেয়
আমাদের মনে করিয়ে দিতে যায় তারা কত ভাগ্যহত।
বস্তুত: জীবিত থাকার দায় তাদের আর নেই বলে
মৃতদের উচিৎ নয় এভাবে জীবিতদের প...
১২ টার বেশি বছর গেল,
তুই হয়তো গেছিস তার চেয়ে দূরে,
আজও তোকে লিখি, তোর কথা আঁকি।
জানি না,
চিঠিটা কি পৌঁছবে?
মনে কি পড়বে তোর?
ওরা বলে তুই নাকি চলে গেছিস সময়ের পরে
কালো কোন এক শুন্যস্থানে, আমি বলি অন্তহীন গতকালেই ছিল
আমাদের কত অগণিত বসন্ত মেলা।
আচ্ছা তোর কি মনে পড়ে সেই শতবর্ষী বট গাছটা, সেই বেঞ্চটা,
আমি আজো ওখানে বসে, জোনাকির সাথে।
মেঘ-মন্দিরের আমগ্ন দেবতা, তারও ধ্যান যায় ছুটে
ঐ...
তুমি ঝাঁসির রানী
নাকি রাজিয়া সুলতানা,
সে কথা ভেবে ঝাঁপ দেইনি,
সেই ছিলো ভুল এক
তাই দিলে যাব্জ্জীবন -
সারাটা জন্ম কাটলো বিষাদে।
এর চেয়ে ফাঁসি ছিলো ভালো
না পাওয়া শেষ হতো একবারে -
কিছু নাইতো, বেশ নাই,
না পেলে কি আর করা -
দিতে পারো, কিন্তু দাওনা
নিতে পারো কাছে টেনে, কিন্তু নাওনা,
তার চেয়েতো কম হতো দহন।
আশা বড়ো সর্বনাশী
যতো তারে বুকে পুষি,
কেবলই ক্রমঘুর্নায়মান ধারে তার,
ততো সে কাটে স্বপ...
যতক্ষণ তুমি কাঁদতে পারো
ততক্ষণ মাধবী.. তুমি
কান্না থেমে গেলে অন্য কোন নারী।
যতক্ষণ তুমি ফুল হাতে রাখো
ততক্ষণ মাধবী তুমি
ফুল দেয়া শেষে অন্য কোন নারী।
যতক্ষণ দরজায় টোকা দিতে থাকো
ততক্ষণ মাধবী তুমি
কাছাকাছি এলো অন্য কোন নারী।
যতক্ষণ তুমি অবনতমুখী
ততক্ষণ মাধবী তুমি
মুখ তুললেই, অন্য কোন নারী।
যতক্ষণ বুক কেঁপে ওঠে
ততক্ষণ মাধবীর মতো তুমি
কাঁপা থেমে গেলে অন্য কোন নারী।
যতক্ষণ...
১.
দু'চোখের উত্তাপে পুড়ি,
ছুঁতে চাই যত,
মৌনতা ভেঙ্গে হেসে ওঠো তুমি
জলপ্রপাতের মতো।
২.
অনেকটা পথ হেঁটে এসে দেখি
দাঁড়িয়ে আছি পথের শুরুতে,
একি বিভ্রম!
তরুছায়া খুঁজে বেড়ানো শূন্য মরুতে?
৩.
তোমাদের শহরে
পরাজিত স্বপ্নদের আজ নিষিদ্ধ বসতি,
একটি বুনোফুল
ফোটে যদি প্রাসাদ প্রাচীরে, বলো কি ক্ষতি?
৪.
ও মন, কেন্ তুমি পক্ষী হইবার চাও?
দিবানিশি কেন্ তুমি দু:খের গান গাও?
যাইবা বুঝি এই অবেলা...
বাজার থেকে কিনেআনা মাছে কিছু মাছি ছিলো
মাছের সাথে তারা ক্রেতার বাড়ী পর্যন্ত এসেছিলো।
এক ধরণের ভালোবাসা তেমনি মাছির মতো;
যারা মৃতদেহ থেকে চুষে নেয় অচেনা আস্বাদ।
মানুষ যখন মানুষের আড়ালে বিনোগিত হয়
মাছিরা তখন প্রার্থিত দূর্গন্ধই ভালোবাসে।
মৃতের বন্ধু কেউ নেই; আছে শুধু মাছি
পঁচনের প্রিয় শরীর তার আনন্দে অবগাহন
এক যুগ নয় নয় অনন্তকাল- সামান্য সামান্য
আর যাই হোক ঘৃণার বিপরীতে ...
[হঠাৎ বৈরাগ্য কোন রোগ কিনা কে জানে। তবে এটা কোন ভালো লক্ষণ নয়। এন্টিবায়োটিক হিসেবে পুরনো ডায়েরিটা খুঁজছি, যেখানে সেই ছাত্রকাল থেকে প্রিয়তম কবিতাগুলো ঝিনুকের মতো সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করেছি। কোথাও খুঁজে পেলাম না এবং রক্ত চড়ে গেলো মাথায়। ২০০৪ সালে একালের নুহের প্লাবনে সুনামগঞ্জ শহরটার সাথে আমাদের উঁচুভিটের বাসাটাও বুক সমান পানিতে তলিয়ে গেলো আমার স...
ক.
প্রতিটি ভ্রমণ শেষে অজ্ঞতা তীব্রতর হয়--দেখি, ভ্রমণস্পৃহা আরো তীব্রতর হয়ে ঘিরে ফেলছে জানালার গ্রিল
আর এই ব্যকরণহীন ভোরে আমার হাত ও পা তীব্রতর হয়ে বারবার ছুটে যাচ্ছে জানালার গ্রিলের দিকে।
খ.
যখন ঝড়ের পর ঝড় এসে ছড়িয়ে দিচ্ছে ভয়--আর আমরা স্বপ্নের ভেতর দিয়ে ডুবতে-ডুবতে পেরিয়ে যাচ্ছি মাঠের পর মাঠ--ঠিক তখন
এই বৃত্তাকার পরিক্রমায় এক-একটি ঝড় বারবার বদলে দিয়ে যাচ্ছে আমাদের ক্রিয়াবো...
তুমি রুটিন বেঁধে দিয়েছো। স্কুলের ধর্ম শিক্ষা ক্লাশের মতো।
সপ্তাহের ঠিক একটা দিন, আমরা একটা ক্লাশে ইচ্ছেমতো
হৈ হৈ করতে পারতাম, নিজেদের মতো গল্প হতো। তুমিও
ঠিক সপ্তাহান্তের এক কোমল ক্লাশরুম, যেমন ইচ্ছে তেমন।
এইসব নিয়ম, কথার মারপ্যাঁচে ফেলে গিলিয়ে দেয়া সময়
আমারে বিষণ্ণ করে, এ বিরহ বড়ো বেশি বুকে বাজে
আমাকে উদভ্রান্ত করে। মগ্ন কিশোরের মতো আমি রুটিনের
দিকে তাকিয়ে থাকি, হিসেব করি, ...
সন্ধ্যের আকাশটা আজ বেশ শ্যাওলা ; ঘনীভূত হয়ে থাকা বায়বীয় ফ্রাইপ্যানে লাল টুকটুকে আগুন
আর
পোড়া পোড়া গন্ধে নিম নিম ডিম - দূরের আকাশ যতটা না কছে তার চেয়ে
বেশি নমনীয় হয়ে আছে উড়তে থাকা ছেড়া ব্যানার -
তবুও একজন রিক্সা আরোহী আর অন্যজন মধ্য বয়সী শাদা আঁচল
আজলে তুলে নেয়া নরম পানির মতো দুজনে বেশ ভাবাতুর হতে পারে অথচ আনমনে অস্বীকার করে গেল যে কোন একজন গতকাল যে ছিল ভিন্ন - ভিন্ন বাসরীয়,
আজকাল ...