ভুমিকায় কবি বলছেন - এ কবিতাগুলো আমার বড়ো আদরের, ভালবাসার। খুবই নাজুক কবিতা, একটু বকাঝকা করলে কেঁদে ফেলবে, চড় মারলে তো বিপদ। চিৎকার চেঁচামেচি জুলুম আর ঝঞ্জাপীড়িত দুনিয়ায় এই নীরব আলুলায়িত কবিতার শরীর ভেতরে যে একটি প্রান্তিক বেদনার আত্মাকে ধারন করে আছে, সেইখানে নিমন্ত্রন।
সাধারন দুস্তবকের অক্ষরবৃত্তের হিসাব থেকে ইচ্ছে করেই দ্বিতীয় স্তবকে একটি লাইন কমালাম। চলনে একটি বিঘ্ন থাক...
হারিয়ে ফেলেছি কিছু মরীচিকা দিগন্তের কাছে
ঝড় রোদ ভেঙ্গে জানি পাব না ফেরার শব্দাবলী
তাই শূন্যের নিকট দু'হাত পাতিনি
আমরাও ফিরব না ভেবে এসে গেছি কতদূর
আজো তবু ছাইচাপা আগুনের কাছে
কিসের ছবক নিতে আসি
কাদের বুকের এ দহন হাহাকার
অন্তলোকের যদি না থাকে আরকের তৃষা!
তারপরে তো রাম রাজা হলেন, দেশে জয়জয়কার পড়ে গেলো, সীতা বেচারা যে মাটি খুঁড়ে ডুব দিলো তা নিয়ে কারো হেলদোল নেই। চোদ্দ বচ্ছর বনেজঙ্গলে থেকে রামের স্বভাব গেছে বিগড়ে, রাজভোগ আর রোচে না মুখে, গরীব প্রজাদের কুটিরে গিয়ে পান্তা খান আর দিনভর আড্ডা দেন। লক্ষ্মণ ভেবেছিলেন তিনি বকলমে রাজ্যপাট সামলাবেন, কিন্তু ঊর্মিলা চোদ্দ বছরের অবহেলার প্রতিশোধ নিতে বাপের বাড়ি চলে গিয়ে অবধি তিনি এ...
তুমি যখন জমাট হতে শিখলে তখন দেখলাম,
তোমার কনুই থেকে গড়িয়ে পড়ছে ক'ফোটা ঘাম
একটা নীল প্রজাপতি বসে আছে তোমার ঠিক
মুখোমুখি। একটা আলনায় জমাট হয়ে আছে
একাকী ,আমার খুব পরিচিত বন্ধনশিল্প।
তুমি যখন জমাট হতে শিখলে , মনে পড়ছে
এর দুদিন পর আমার সংগ্রহ থেকে গলে পড়লো
চারটুকরো বরফ। আমি মুঠোয় ধরে ,মাখতে
চাইলাম আমার বুকে-মুখে-ত্বকে। একটা শাদা
বক উড়িয়ে নিয়ে গেলো সেই ছায়াদৃশ্য। আমি
অবাক হয়ে শুধুই ...
১
মাঝ দুপুরে রাতের মতন চুপ
দু-একটা কাক আলসে গলায় ডাকে
রোদের তাপে পুড়িয়ে তোমার রূপ
হাজির হলে আমার গলির বাঁকে
২
চোখের কোণে জল
হারিয়ে যাবার আগে তোমার সেই পুরোনো ছল
শিশির গড়ায় আমার বৃক্ষশাখে
৩
যাই বলে না, আসি
বারান্দাতে ফুলের চারা, শুকনো শাড়ি মেলা
হালকা হাওয়ায় তোমার চেনা হাসি
নিত্যদিনের বিদায় বিদায় খেলা
ছবি: লেখক
১।
এই ঘাসে ঘাসে, এই মেঠো পথে
তোমার হাসির ঘ্রাণ আমি খুঁজে পাই।
নীলাভ রক্ত যেন নাড়া দিয়ে বলে যায়
সমস্ত দিনের শেষে রীক্তযৌবনা সূর্যের আলো
পরিশুদ্ধ কোন ভীষন মায়ার রুপ।
তুমি একবার এসে দেখে গিয়েছিলে তাকে
তারপর, তারপর? সেই ক্যানভাসে আমার
বাজে বেহালার সুর, দূর কোন দিন শেষে
সোনালী সন্ধ্যার পানে।
===============================================
২।
কে যেনো বলেছিলো হেসে, শরত - হেমন্তের
কোন এক আদিম দুপুরে এসে, তুম...
ট্রেনের চাকার সাথে সে পড়ছে।
এটাই সংবাদ ছিল। শিরোনাম ও সংবাদটি একটি লাইনেই বিবৃত। পরের কথাগুলো অজরুরি ও অনুপস্থিত। শুধু খবরটি জানা গেলো- সে পড়ছে।
ক্রমশ ঘূর্ণায়মান চাকার ভেতরের আঁকিবুকি মুছে গেছে গতিতে- আর সে পড়ছে, পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে পড়ে যাচ্ছে মাটিতে।
শব্দহীন।
যে ব্যথাগুলো আজীবন পতনের সাথে জড়িত, তারা জানেও না কবে প্রথম এই অযাচিত পতন, গহীনে বসবাস শুরু করেছে। কেবল প্রতিক্রিয়ার মত...
সাধুসঙ্গ
ফকির ইলিয়াস
-------------------
আমাকেও সঙ্গে নাও নিতাই। একটা ভোর খুঁজে পার হবো নদী।
বাদী রিপুর দেশ ছেড়ে যাবো নীলসীমান্তে। অন্তে রেখে যাবো
এই ছিন্ন ভাবের প্রদেশ। রেশ থেকে যাবে জানি,পথের দশম
প্রবাহে। সহে যে কাঁটার শাসন, সে ই জানে- কেমন ছিল শুরুর
সামন্ত। ভ্রান্ত চাঁদের নীচে এতোদিন শোয়েছিল যে জমিন , আজ
তাকেও নিয়ে যাবো সাথে। আমাকেও সঙ্গে নাও নিতাই। যাই
চলো , অন্য ভুমন্ডলে। এখানে পাপ ফ...
বড় হলে কেউ কথা রাখে না
ছিপিতে আতর রেখে মুখবন্ধ লেখে
কথার
আঁচে বেড়ে ওঠা অপেক্ষা
নানারকম চিন্তার জন্ম দেয়
এইসব প্রতিশ্রুতির ব্যাঙ্গমা-ব্যাঙ্গমী
সুস্বপ্ন আঁকে আশার
হাতছানি চাদরে
ফারেনহাইট জ্বালায়
অকূল ভাবনা
এইবুঝি বন্ধ হল প্যান্ডোরাস বক্স
অবুঝ মনে হোনকাইছ দিয়ে মাপি সোনার রতি
আশারতিতে এক মনস্বপ্ন ভাঙে
হতাশা অন্য মন ভাঙার হৃদয় ধরতে শেখায়
ভাবনার সারেগামা উথলে উঠে
...
(ঝরাপাতার 'বৃষ্টি বিলাস' পড়ে)
আকাশ জুড়ে মেঘের আনাগোনা,
মনের মধ্যে তা-তা-থৈ-থৈ।
মেঘ, আজ তুই ঝরে খুশী হ,
আজ তুই ঝরিস মন মতো,
যতো চায়, যেমন চায়, তেমনই
ঝরিস; বান থেকে ঝরে ঝরে
প্লাবন হো্স আজ, আর কোন
বাঁধা নেই; প্রবল, মৃদু, মাঝারী -
যেমন চায়, আজ তোর, তেমন
ইচ্ছের দিন; শুধু তুই ঝরে ঝরে যা,
ভাসা দু’কুল, যা কিছু সংরক্ষিত,
তার সব ভেসে যাক আজ।
পৃথিবীর যত গ্লানি, যত কালো
জমে আছে বুকে, আজ, তুই তারে
ভাসা; ঝর, ঝ...