আজ শুধু বৃষ্টি চাই।
বৃষ্টিহীন নগরীতে প্রেম নেই কোনো।
তাই যত নাগরিক দালান, সবুজ উদ্যান বলিতেছে শোনো-
বৃষ্টি চাই, ভীষণ রকম বৃষ্টি চাই।
হাজার রাতের অস্ফুট কষ্টের সাক্ষী ল্যাম্পপোস্টটিও বলছে- " বৃষ্টি দাও" ।
বৃষ্টির প্রেমে মজে যাবে বলে ঠাঁই বসে আছে আজ পার্কের জংধরা বেঞ্চিটাও।
রংচটা বিলবোর্ডের একদা লাস্যময়ী মেয়েটাও বলছে শুধু বৃষ্টির কথা,
দিন দিন প্রতিদিন, বৃষ্টিহীন সময় গুনে ক্ল...
নিয়তিকে শুতে দাও শীতরাতে ফুটপাতে
নদীভাঙ্গা মানুষের সাথে কাওরানবাজারটা
বিলাপ করতে করতে ঘুমোতে যাক।
বহুদিন হোটেল শেরাটন নদী দেখে নাই
এবার সে নদী দেখুক প্রতিটি নদীভাঙ্গা মানুষের ভেতর।
ওদের পিষ্ট করে এগিয়ে যাক শহরের যাবতীয় পাজেরো
উঁচু দালানের নিচে মালিকের জন্য প্রতীক্ষা
করতে করতে খানিক কাঁদুক বিদেশী সারমেয়গুলো।
খুব অযৌন দেখি তোমার চুলের সংসার,
ঘুমের শুদ্ধিপত্র।
বিছানায় অঙ্কিত ফুলগুলোর আলগা ছেড়ে
সহাস্যে মুদে আসে রাতের চোখ,
মশারীর ভিতর তোমার বুকের 'পরে সুতোর শিল্পায়ন
দেখি। পাশ ফিরে ঘুমাতে গেলে উচ্ছন্ন সৈনিকের
বুটের শব্দ নিয়ে ছিঁড়ে যায় বোতামের জমাট।
কাল আমাকে আবার সুঁই-সুতোর বিজন নিয়ে বসতে হবে-
অথচ বোতামফুলের রঙঘ্রাণ ভুলে গেছি!
শার্সিতে রোদের বিতরণ দেখে হয়তো
কাল সকালে
স্লেটে শিশু...
প্রক্ষেপণে বুঝে নিয়েছি
শব্দই সত্য ছিলো, শব্দই জানিয়েছে
এখন আর নেই সে দুপুর
এখন আর বাড়বেনা গোলাপের ঝাড়
প্রদীপেরা চিনে নেবে অন্য কোনো সিঁথি!
শব্দই সত্য ছিল
শব্দই ঢেকেছিল দুরত্যয় বোধের আধার।
অন্য কোনো শব্দ বুঝি পাওনি খুঁজে?
অন্য কোনো ভঙ্গিমা, অন্য কোনো ধারালো অস্ত্র
অন্য কোনো কাব্যিক দ্যোতনাও যদি উপেক্ষার প্রতিচিত্র হতো!
আহা! দুঃখ হয় কবি!
দুঃখ হয় শব্দবদ্ধ মানুষ!
দুঃখ হয় রাতজা...
আমার আকাশে তোমার প্রলয় মেঘ - খেলা করে, হারিয়ে যায়, কোন এক দূর্বোধ্য বিজলী চমকানো আলোর অন্তরালে। জনাকীর্ণ পানশালায় তুমি দিতে চেয়েছিলে রমণীসূলভ উষ্ণতা। কিন্তু হায়, সস্তার তিন অবস্থার মতো তোমার আদিম আগ্রহেরও পড়ে গেলো ভাটা। তুমি কি গান জানতে? নাকি আমি উইন্ড চাইমের স্বরলিপিকে তোমার করুণ কোন গুন-গুন ভেবেছিলাম স্বপ্ন ভাঙ্গা ভোরে?
যে রাস্তায় চলতে তুমি, তার প্রত্যেকটি বালুকণা আম...
এখনও কি জোয়ার আসে অক্টোবরে,
হরিণের চোখে কাজলেরা গাঢ় হয়, রাতের ছায়ার মত নৈঃশব্দ
তোমাকে গ্রাস করে, নারী।
লুটেরা জোৎস্নায় বিধ্বস্থ আমার ঘর, লন্ঠনের আলো,
বাইরের হাজারটা নিয়ন।
আমি জানি না এখন কী কাটালের কাল, কোন বছর, কী ঋতু
পৃথিবী কতবার প্রদক্ষিণ করল সূর্যকে
কতটা গলেছে উত্তর মেরু।
রাতের ছায়ায় তন্দ্রাবতী শালুকের দল কেন জলের দিকে
কিংবা সহস্র তারামন্ডিত আকাশ কেন মাটির দিকে
ধাবিত হয়
...
শুনেছি 'বজ্রে' অজস্র বিদ্যুৎ,
আঘাতে তার মৃত্যু অনিবার্য;
গতি ?
সেতো দুর্বার।
'অগ্নি' পোড়ানোই যার স্বধর্ম,
জীব-জড় যাই বল ভাই
এক নিমিষে করে দেবে ছাই।
'এটম' জানে ছোট্ট বাছা,
এ বোমার এমনি তরজমা
মাটি পুড়ে হয় যে তামা।
'ভূমিকম্পের' এমনতরো তীব্রতা,
নগর-প্রাসাদ ও জীবন হয় শ্মসান
স্থলে ফাটল আর জলে আনে বাণ।
'প্লাবণ' কিংবা 'ঝড়ের' কাছে,
মনুষ্য, গাছ কিংবা বসুমতির
সাধ্য আছে কি ম...
অসময়
দেহ থেকে কিছু পোড়া ছাই খসে পড়ে
পাঁজরের ফোঁকড় গলে একটা, দুটো
ছন্দ,শব্দ,প্যারা
কন্ঠনালী বেয়ে উঠে আসে।
জিহ্বার পিচ্ছিল ফসকে কিছু অনিবার্য
সুখ উচ্চারণ অবরুদ্ধ গহ্বরে পাক খেতে থাকে।
সন্ধ্যা ছড়ানো ছাদে
উদাসিনতার বুদবুদ ভাসে।
কষ্টের দস্তখত ছিল এক টুকরো মেঘে,
ফিরে দেখার গল্প ,
অসময়ের কষ্ট
অথবা
অসময় বলেই কষ্টের সারগাম।
ভাল ছেলেদের বখাটে রুমাল
সারাদিন অকারণ
বেপরোয়া র...
করতলে একটি কুয়াশা-মাখা ভোর ছিল
আঙ্গুলের ফাঁকে কখন যে ঝরে গেছে বুঝতে পারিনি।
কষ্ট পাই
বর্ণাঢ্য-জলসায় অচেনা মুখের ভীড়ে একা হয়ে গেলে
ক্রমশঃ কুঁকড়ে যাই নিজের ভেতরে।
হারতে চাইনা।বারবার হেরে যাই।
নিজের প্রলম্বিত ছায়াটুকু ক্রমাগত নিজেকে অতিক্রম করে যায়।
কষ্ট পাই।
বিস্মরণের আজন্ম-স্বভাবে ঠিকানা-বিভ্রাট;
এ গলি ও গলি খুঁজতে খুঁজতে
তোমার গলির একদম পাশ দিয়েই
আনমনে এক ভুল বাড়ীতে ...
একটা মানুষ
দাঁড়ায়ে আছে পাড়ে -
তুমি তারে - সাড়া দাও।
একটা মানুষ করতল মেলে দ্যাখে
আঙ্গুল গলে পড়ে গ্যাছে সব
ক্রোধ, দুঃখ, স্বেদ –
তুমি তারে - খানিকটা জল দাও।
একটা মানুষ খুঁড়ে আনে সব
যতখানি মায়া না পেলে
মানুষেরা ম্যালেনা প্রজাপতি-পাখা, ততখানি -
তুমি তারে - চোখ মুছে দাও।
একটা মানুষ সবটুকু হারায়ে আজ তার,
নতজানু হয়ে দাঁড়াতে এসেছে পাশে
পিছে ফেলে আজন্ম সংস্কার -
তুমি তারে - একটুকু ছায়া দা...