অনেকটা নিযুত নক্ষত্রের মতো থেকে যাবো সুরমার
শাণিত আগুনে। ভ্রূণে লিখে যাবো অন্য কোনো নাম।
তামাম শোধ করে কালের হিসেব, কিছুটা ভোর আর
কিছুটা নুপুরের ন্যায্য ঘুঙুরে। ফিরে এই বাঁকে মিলিয়ে
নেবো সবকটা জলছবি। কবি হয়েই থেকে যেতে চাই।
আহা জীবন !
আহা আলোকের নিয়তি ঘূর্ণন !
এই মাটির মহাত্ম্যে যদি কোনোদিন পূনর্জনম পাই -----
ছবি- ওকসানা চেরকাস
নিজেকে শুদ্ধ রাখতে,
দিলে তোমার অতীতের বিষ উগলে আমার পাতে,
আর খাওয়া যাবে কি যাবে না ভেবে পিছপা হলাম।
ক্লেশের শেষ বিন্দু পর্যন্ত যেয়ে ফিরে আসা
অসফল মনে- তখন দগদ্গে জ্বালা,
অনিচ্ছাতেও ভেংচে যায় মুখ
তবু কান রাখি খাড়া
বাকিটা শোনার জন্যে।
মুহুর্তে ভেস্তে গেলো স্বপ্নবাজি,
বিষনাগ বাসা বাধে শ্বাসনালীতে
মগজের চিলে কোঠায় ঢিপ ঢিপ চিনচিনানী,
আমি আস্তে আস্তে ঢলে পড়ি আবারো
আবারো সেই একাক...
দুঃখিত : শেষ আলোরেখায়
দুঃখিত
বলাটা সহজ
অথচ তোমার দুঃখপ্রকাশের একটু আগেই
বিশাল বৃক্ষের খর্ব ছায়াকে দীর্ঘ হতে হতে
ঘন অন্ধকারে ডুবে যেতে দেখেছি।
দুঃখিত
বলাটা সহজ
কৈশোরে প্রেমের মত স্বাভাবিক
অথচ ওই একটিমাত্র শব্দের পেছনে
জগতের তাবত্ দুঃখ সারিবদ্ধ হয় বিলীন হয়ে যেতে
যাদুর লাঠি ছুঁয়ে দিলেই উধাও হবে যেন স্বপ্নের শিশু।
তুমি দুঃখিত হওয়ার পর সেই ছায়াকে আমি আর ফেরাতে পারিনি
সূর...
পাখি ওড়ে বেড়ায়
কখনো মেঘের সাথে
কখনোবা মুক্ত নীল আকাশে
আর যখন গাছের ডালে বসে থাকে!
মেঘ ভেসে বেড়ায়
কখনো স্থির কখনো অস্থির
খোলা চোখে আকাশ ঠায় দাঁড়িয়ে
আর যখন তার গভীর নিদ্রা ভাঙে!
আমি দেখি মেঘ গতিহীন
আর আকাশ ওড়ে বেড়ায় মেঘের 'পরে...
আনন্দ তার পথের সন্ধান দিয়ে গেছে:
অত্যন্ত নির্ভুলভাবে
সদা অস্থির মন আমার মুহূর্তেই ভুলেছে;
ভালো লাগে ভীষণ
মেঘলা আকাশ আর রোদের গোলক ধাঁধা
সবুজের ছায়ায় ডুবে ডুবে ভেসে ওঠা
হলুদ পাতার দীর্ঘশ্বাসের কাঙালপনা...
প্রকৃতির এ অস্থিরতায় বুঝি-
আনন্দ কখনো স্থির হয় না।।
নিঝুম নিশীথে নিরবে নিভৃতে নিরালায় নিজ নীড়ে,
ভ্রমেতে ভুলিয়া ভেসেছি ভীষণ ভাব-ভাবনার ভীড়ে!
চিন্তা চেতনা চেয়েছে চিনিতে, চির চঞ্চল চিত্তে,
বলেনি বেহুলা, বেদনা বিঁধেছে বাস্তবতার বৃত্তে!!
হায়রে হিয়া, হয়েছে হরণ, হৃদয় হয়েছে হত,
কামনা করেছে কতনা কিছুই, কয়েছিল কথা কত!
প্রণয় প্রলাপে, প্রেমের পুলকে, পাষাণে পায়নি প্রাণ,
আঁধার আসিয়া আবৃত আজি আলোকের আহ্বান!!
অবান্তর জন্মান্তরে 'প্রজাপতি'
প্রজাদের তো নয়ই,
কারও আমি পতি হইনি কখনও।
ক্ষণজীবী প্রজাপতি তবু হয়েছিলাম-
নান্দনিক এক নারী যখন
নীরব চেয়েছিল যুক্তিহীন মায়ামুগ্ধতায়,
ছুতোহীন ছুঁয়েছিল আঙুলের ডগা,
অন্য পুরুষের দখলে এখন
যার আটপ্রহরের সে।
হয় তো সে দখল আজ নির্ভরতার নিশ্চিন্ত নিশ্বাস,
হয় তো মেঘের ডানায় নিয়ম ক'রে উড়তে যাওয়া,
হয় তো বা আরো কিছু ফুরুত্ ফুরুত্-
গাঢ় সবুজ ঘাসের পিঠে
হালকা স...
মাঝে মাঝে আয়নায় চোখ রাখি; দেখি করুণার প্রতিবিম্ব
ভাবি, কতোদিন পাড় হলে আসল তোমাকে আমি চিনবো
নির্বাক প্রহর পালায় নিরবে, মিছে যতো ভালোবাসা বাসি
বার বার যার দূরে চলে যাই, বার বার তার কাছে আসি
শর্তের দড়ির ওপর সার্কাস, আমাদের দিন কেটে যায়
উজানের বৈঠা হয়ে ছুটে চলে অকূলের তীরে অবেলায়
মাঝে মাঝে আয়নায় চোখ রাখি; দেখি করুণার ছায়ারেখা
অন্ধের আঙুল ধরে আজীবন জীবনের পথ চলা শেখা
অসংকোচে ঠোঁট...
উত্-সব
বকরী ঈদে সবচেয়ে বেশি দরকার মদ
গরু ছাগল উট দুম্বা হরিণের সাথে
সবচেয়ে বেশি যায় ভদকা আর আগুন
শান দেয়া চকচকে রক্তাক্ত ছুরি হাতে
ভালোলাগে চুমুক দিতে বড় কাঁচের গ্লাসে ফেনা তোলা বিয়ার।
টুকরা মাংসে গুড়া মশলা আদা পেঁয়াজ তেল লবণের বাগারে
মানায় ঠোঁট-চাপা জ্বলন্ত সিগারেট।
যদিও শীত ও বসন্তে নানা রঙে ভরে উঠে ফুলদানি,
আসলে আমাদের দুটিমাত্র মহত্ লাল উত্সব-
একটি মোসলমানী আর...
হায় বেদনায়
নীল হয়ে বেঁচে রয়
জীবনের সাধ!
তবু আশা, ভালবাসা অশ্রুর ফোঁটায়
আকাঙ্ক্ষা অবাধ।
দু’বাহু বাড়ায় মন ঘন কুয়াশায়;
ঢেকে যায়, রয়ে যায় স্বপনের আভাস।
তবু করে বাস
আলোর জোনাকি, ঘোরে লুকোচরি রাত।
চন্দ্র হারায় আলো আসেনা প্রভাত!
তবু জেগে রয় –
তক্ষকের ডাকের মত পেঁচার ডানায়,
চাতকের ঠোঁটে করে ভর অনন্ত প্রহর –
আশার প্রহরায় জেগে রয়, বেঁচে রয়
এ জীবন অনন্ত, অগাধ!!