চেম্বার থেকে আমি ফিরছি
তুমি ইমার্জেন্সী কল এ যাচ্ছ অপারেশন থিয়েটারে
আমাদের ক্রসিং হয় সিড়ির মাঝ পথে
তুমি বললে হ্যালো
আমার মূখে হতাশার মূচকি হাসি
গত চব্বিশ ঘন্টায় এই একটা 'হ্যালো'
তোমার কাছ থেকে আমার একমাত্র পাওয়া ।
আমাদের বাবুটার গৃহকর্মীটার সাথে সখ্যতা হয়েছে খুব
যাক বাবা বাচাঁ গেল, আমাদের মাঝেও হাফ ছাড়া ভাব
বাবুটার মূখে বেশ আঞ্চলিক টোন- 'আমি'কে বলে 'মুই'
কথা ছিলো সুবিনয়, ’আমাদের ধর্ম হবে ফসলের সুষম বন্টন’,
কথা ছিলো, আমি তুমি আর সে; রহিম, রাম আর রহিমার মেয়ে,
বিশুদ্ধ সবুজে সাজাব, মৃগ আর বাঘে, সুন্দরবন।
কিন্তু কী দুঃসহ বোধ! রহিমার মেয়ে কী দেবে প্রবোধ?
চেয়ে দেখ, রামচন্দ্র ঘোষ, আমাদের ধর্ম শুধু হয়ে যায় 'মদীনা সনদ'।
কী আর বলবো তোকে, প্রভু, ঝেড়ে ফেলা নিক্তি-
তুলোর হিসাব ডাকঘর-চিঠি রোমশ মেঘের দিন
এসমস্ত নিয়ে শুধু নিবিড় গল্প বাড়ে
গল্পের হিসেবের বিভেদের ঐক্য শুধু বাড়ে
নিশ্চল ঝিমোচ্ছি দেখে
হাজার অসুখ- তার
কাঁপানো গর্জন বাড়ে
আমায় দেখেছো প্রভু- নিরীহ সাইকেলে
ব্যর্থ ঠেঙিয়ে চলা জলা মাঠ ঘন জঙ্গল
ওপাশে পাহাড়ে বসে প্রভু তুমি এ কেমন
রাম-নাম বৈষ্ণবীর কেত্তন শোনাও
আমার তো প্রিয়বোধ অবশিষ্ট নেই
এখন জানি মানুষ কেন
মনের সাথে আপোষ করে
ভালবাসার রুমাল যখন
পড়ে থাকে , পাপোষ- ঘরে
অবাক হবার কিছু নেই-
আমি এখনো ঠিক সেই আমিটাই আছি।
আমার আমিত্ব বিসর্জনের কালে শুধু ঘূর্ণি, শুধু গহ্বর-
অন্ধকার, নীরব, নির্জন অর্ধরজনী-বিলাসী অবিশ্বাসী-মনন
আর
সজল প্রবণতা হারিয়ে আত্মঘাতী-উড়াল অভিসারী-শরীর;
অথচ,
কোষে কোষে কামাননিনাদ- চঞ্চল, অস্থির এক বিরলতা।
অতঃপর,
শৃঙ্খলাসৃষ্টির শেষ চেষ্টায় রচিত হয় শেকল বাঁধার গান
পরিত্যাগের নির্বাসনে ঘরে ফেরে চিরচেনা শুদ্ধ অভিমান।
সোনায় মোড়ানো ছাত্রলীগের যদি হইতা
দিনেদুপূরে চাপাতি দিয়া তামাম বিশ্বজিতরে টুকরা টুকরা কইরাও
প্রাইমিনিস্টারের হাত থিকা নিতা পারতা শ্রেষ্ঠ সাঁতারুর পুরস্কার;
যদি হইতা ছাত্রদলের কেউ, কাদের মোল্লারে সত্যায়ন দিয়া জিব্রাইলের ডানায়,
লাশের অপেক্ষায় ককটেল ফুটাইতে ফুটাইতে তুমি
পথে প্রান্তরে উড়াইয়া দিতা ম্যাডামের গোলাপী হরতাল
আর খোয়াবে দেখতা হাওয়া ভবনের ম্যাজিক রিয়ালিজম;
পহেলা এপ্রিল, ২০১৩: ভুলে-ভরা ফুল! ভুলে ধরা প্রজাপতি ভুল ছড়া শিখিয়েছে,
ভুল সংকল্পে শিখে ফেলা ব্যাকরণ, সমাস -- মানুষ পণ্যের প্রতিরূপ হয়ে গেছে,
বিক্রি হয়েছে সদা সবাই; শেকড়ে জ্বালানী পুড়াই প্রশাখা’তে জমে যায় দাহ,
শাঁখা সব বৈরাগ্য জেনেছে, পাতায় পাতায় উনুনে’র সনাতন জ্বলুনি প্রত্যহ;
প্রতিটি আলোর শীর্ষ ধরে রাখে বনানী’র উচ্চতর যে বৃক্ষ তার নাম থাকে কি কোন?
অশ্রু শিশির রাতে শেফালীর
কমলা রঙের স্নিগ্ধ বোঁটা
ধোঁয়ার অন্ধকার মানবিক ভুলগুলো
ঝরে পড়ে টুপটাপ--ক্ষমার আদলে
সন্ধ্যা কি ফিরে গেছে, ফিরে গেছে, ফিরে গেছে এসে?
একটি জোনাকি যদি ফুল বলে ভুল হয়
একটি আলোকবিন্দু-থাকবে তো
থাকবে তো, ফেলে আসা পথ- দুঃখ
যতখানি মনে হয়, অমসৃন হয়তো
ততখানি নয়- কতিপয় সমর্পণ
ততখানি জীবিতের বাসনার হুঁ হুঁ
দীর্ঘশ্বাস! ঢেকেছে সময়!
তোমার বাদামী চোখ, কিউপিড
আমি স্বদেশকে নিয়ে লিখতে বসেছিলাম
কঠিন পোড়ামাটি তখন আমার রন্ধ্রে রন্ধ্রে
তখন আমাদের ওলাওঠা দিন চলছিল
অতৃপ্ত ছায়াপথের জৌলুশে
ভুলপথে বিস্তর হেঁটে যেতে পারি,
ভুল ঠিকানাও হতে পারে ঘরবাড়ি,
ভুল করে ভুল হাতে দিতে পারি ফুল,
ভুল হাত ভালবেসে ভুলের মাশুল।
ভুল খামে এঁটে দিয়ে ভুলভাল চিঠি -
ঠিকানাও ভুল সেঁটে ভুল বাসে উঠি।
নদ-নদী কী বুঝে যে ভুল পথে ছোটে,
পাড়ি দিয়ে মহাদেশ, লোনাজল জোটে!
মগজে বিষাক্ত সংস্কার,
চেতনায় বিশ্বাসের বিষ,
কিছু অভ্যাস, প্রাত্যহিক অহংকার,