হঠাৎ ঝড়ে জাহাজ ভোলে দিক
আকাশ মোছে তারার হাতের ছাপ
সাগর ফোঁসে গোখরো সাপের ছাও
ঢেউয়ের মেয়ে খলখলিয়ে হাসে
নাবিক তুমি একলা কোথায় যাও?
স্বার্থের সমান পৃথিবীতে আর কিছু আছে?
বন্ধুর সংজ্ঞাতো সকলেই জানি
ঘুড়ির আকাশ কখনো অসীম নয়
বারবার বলা কথা তবুও বক্তব্য পাল্টায়
আড়ালে আবডালে
প্রাণ খুলে যে-কথা কোকিল বলে গেলো
কতজন কাক তার গূঢ়ার্থ বোঝে?
সৌজন্যবোধের শেকলে বাঁধা পড়ে থাকে ভদ্রসাধুজন
বাক্য-প্যাঁচ পিছলে বেরোয় বন্ধু-উকিলেরা
তোমার গলায় জড়ানো কী দারুণ ফাঁস!
তুমি বোঝো ব্যথা - দিকহারা সমস্ত কম্পাস।
কখন জানি জানালার পাশে বসে
কবিতার বই হাতে বিকেলের গন্ধমাতাল।
বুক ভরে বেখেয়ালি বাতাসের ঝড়,
আর চিবুকে তোমার কিছু এলোমেলো চুলের আলপনা।
বাহিরে বৃষ্টি, ভেজা পাতায় ভেজা পাখির ঘর;
উষ্ণ নিঃশ্বাসে ঝাপসা জানালার কাঁচ, অথবা ঝাপসা চোখ
অস্পষ্ট ধোঁয়াটে আকাশের টুকরো,
ঘরের বাহিরে আর এক ঘর। আর এদিকে-
আমরা, যুবক ও যুবতী, ছুয়ে দেবার সংকোচে বিলীন।
অনন্তকালের মুঠোয় কয়েকটি ভেজা মুহূর্ত!
তুমি দারাও এসে জানালার পাশে, সার্শীতে
তোমার গরম নিঃশ্বাসের ছাপ
আমার কবিতা লিখবার খাতা- গভীর রাত্রিতে
তারা জেগে উঠবে, বাড়বে নিলয়-অলিন্দের উত্তাপ।
কুয়াশা ফেরত শিশির কণায় লিখছে চোখের ভাষা-
ওভিদের প্রাচীন গ্রীক মনের বিশ্বাস,
আমার চিন্তায় ঘোর ট্র্যাজিক পরিণতি, আর সর্বনাশা
তোমার চোখে অগণিত কবির সর্বনাশ।
যে লিখছে সে তুমি, আমি নই, আমি নই এই পৃথিবীর,
আমি শুধুই রাতের অন্ধকার-
বার্তা আসে
আসে সংকেত প্রবাহ
আমিও কুঠার হাতে
অরণ্যের গহীন ধাঁধায়
সূর্যের আলো খুব সহজভাবে পৃথিবী ছুঁয়ে দিলে
ভিতরের অনুভূতির মতো দগ্ধ হ'তো শরীর
কিছুটা জটিল তার আগমন তাই-
আমাদের ভাগ্যে জুটলো একখণ্ড আকাশ- নীল।
আমার ভাগ্য লেখা নেই হাতে কিংবা কপালে
আছে চোখের নিচে কালো দাগে
একটু জটিল হ'লে তার মুক্ত লাল ফোঁটায়- আগমনী গান গেয়ে
প্রতীক্ষায় বসে থাকতাম তোমার দিকে চেয়ে।
আরো একটু জটিল হ'লে অদ্ভুত সুড়ঙ্গ পথে
যোগাযোগ হ'তো রাত গভীরে
কুৎসিত কৌতুক কিংবা কৃত্রিম কথোপকথন
ঘরের কোণে পড়ে আছে তারছেড়া টেলিফোন,
ছাইদানি পরিপূর্ণ শ্বেত ফিল্টারে
টেবিলের পরে মার্ক টোয়েন, গোরকি সাজানো থরে থরে।।
কথা ছিলো যাবো - যাইনি সেখানে
উড়ালের স্বপ্নে বিভোর বিস্তর ডানা
গুটিয়ে নিয়েছি দেহের ভেতর
পাখা ঝাপটানোর আকাশ থেকে
দিনান্তের অবশেষে...
তবুও তো পালকেরা উড়ে চলে
সূর্যের রশ্মি ঠোঁটে বয়ে
ঢলে পড়া কোন দিগন্তের খোঁজে
মেঘ..মেঘান্তরে..
স্বপ্ন-সে অদ্ভূত অক্লান্ত অসীম এক পাখি পৃথিবীর
নতুন চরের খোঁজে তবুও সে বসে থাকে
আকাশের কিনারে প্রতিদিন -
নতুন ভোরের খোঁজে, প্রতিরাতে, অন্ধকারে
মুহূর্তে সৃষ্টি হচ্ছে দেবতার গ্রাস,
মাথার ডান পাশে যেখানে স্তব্ধ বিকাশের পথ|
মনুষ্য জীবন বাঁচার পথ খুঁজে সামাজিক প্রতিক্রিয়ায়;
সৃষ্টি সুখের উল্লাস ক্ষত বিক্ষত হয়
মধ্যযুগের জানোয়ারের অশ্লীল থাবায়|
এক. প্রশ্নবোধক
সব কিছু বলে দিতে হয়!
বোঝ না?
এত চিৎকার এত প্রতিধ্বনি
কিছু কি শোন না?
রাজনীতি শিখে গ্যাছো, তাই না?