বাতাস বলে, আমি বইতে চাই
পাল বলে, বইতে দেবোনা, এই ফুলে দাঁড়ালাম
এ হেন দ্বন্দ্বে মাঝি বড়ই আহ্লাদিত!
পৃষ্ঠা ওল্টাচ্ছে, বাতাস বদলানোর দিনের নিরিখে
টের পাই বদলাচ্ছে লোডশেডিংয়ের রাত
জোয়ার-ভাটার প্রহর গণনা, বীজ-বোনা তিথির তারিখ
কাপড় পাল্টাই, চিরুনীর ফলা চাষ করে নতুন ফ্যাশন
কাঁপে বটের শেকড় কনকনে শীতের কুয়াশা
দ্রুত ধূলি ঝড়ে চাপা পড়ে যাচ্ছে সব দিনলিপি
আমাদের দাঁড়ভাঙা নাওয়ের পরিণতি, এদিকে
পাড়ার শিশুরা বড় হচ্ছে লাল নীল বেলুনের দিনে
অলি গলি তোলপাড় করে বখাটে হাওয়া, লক্ষ করি
একুশ আমার রক্তস্নাত বর্ণমালা
দু:সময়ে দু:সাহসী যোদ্ধা বানায়।
একুশ আসে সমর সাজে
ঘুণে ধরা সমাজটাকে বিদায় জানায়।
একুশ প্রাণে আশার আলো
অত্যাচারের প্রতিবাদে কঠিন ভাষা।
দেশের লাগি ভাষার লাগি
বজ্র কঠিন শপথ নিয়ে সর্বনাশা।
একুশ ফাগুন রাঙা হয়ে
জনগণের অধিকারে আস্থা জানায়।
একুশ জরা জীর্ণতাকে ছুড়ে ফেলে
তরুন প্রাণে দিন বদলের বার্তা শোনায়।
একুশ শেখায় বাঁচতে হলে
বাঁচার মতই বাঁচতে হবে।
দেশপ্রেম এর এক লেবাস পড়ে ছিলেন রাজা বেশ,
নতুন লেবাস দিতে হবে গায় এখন সময় শেষ।
এখনি সময়, পাল্টাতে হবে নাহলে যে আছে ভয়,
পাছে লোকে সব দেখে ফেলে, আর তুই রাজা(কার) কয়।
কোথায় পাব এমন পোশাক যা কিনা মানাবে গায়,
সবার গায়ে মলিন পোশাক, আমাকে কি শোভা পায়।
চেয়ে দেখি আজ আশে পাশে যারা পরে আছে সাধারণ,
দেশপ্রেমের এক পুরাতন পোশাক , যত আম জনগণ।
শাহবাগ
-শেখ ফেরদৌস শামস ভাস্কর
অ্যারিজোনা, যুক্তরাষ্ট্র
চলো চলো চলো যাই
শাহবাগ যে ডাকছে ভাই
তরুণ সমাজ
জেগেছে আজ
রাজাকারদের রক্ষা নাই।
তুমি হেঁটে গেছো রক্ত চাদরে মোড়া
রাজপথ ধরে। আর বেশি নেই যেতে।
টগবগ করে ছুটেছে কালের ঘোড়া,
অবিরাম ছোটা, কিসের হদিস পেতে?
ভুলে গিয়ে ভয় যত পরাজয় জীবনের ঢালা ছাঁচে,
বাঙালির দিন বদলে গিয়েছে ফেব্রুয়ারির পাঁচে!
ক্রুদ্ধ মানুষে ক্ষুব্ধ স্লোগানে শাহবাগ জুড়ে ঝড়...
আমাকে নতুন জন্ম দিয়েছে প্রজন্ম চত্বর!
বাঁধতে পারে নি সাধের চাকরি, ঘরে বিছানার সুখ,
আমাকে টেনেছে অচেনা অদেখা রোদে পোড়া কিছু মুখ!
বিদ্রোহী আমি, ছিলাম কদিন আগেও স্বার্থপর...
আমাকে নতুন জন্ম দিয়েছে প্রজন্ম চত্বর!
শিল্পী ফেলেছে রঙতুলি আর গায়ক ভুলেছে গান,
শাহবাগে জ্বলছে আগুন আকাশ ছোঁয়া
লক্ষ মানুষ লক্ষ প্রাণে মত্ত হাওয়া
রাজাকারের ফাঁসীর দাবি, মানতে হবে
ঝড় উঠেছে লক্ষ কণ্ঠে কলোরবে
গনগণে এই লাভার স্রোতে দেশটা ভাসে
আগুন দ্যাখো বসন্তের এই লাল পলাশে
আগুন দ্যাখো চতুর্দিকে বিশ্ব জোড়া
আসছে ধেয়ে মেঘের মতো বজ্র-ঘোড়া
মানতে হবে-রাজাকারের ফাঁসীর দাবি
আল-বদর আর আল-শামসরা কই পালাবি?
শুনতে কি পাস্ এই আগুনের পদধ্বনি?
রক্ত রাঙা মাটি তোদের পাপের খনি
ততক্ষণে জেগে ওঠে পাখি
অসমাপ্ত গান থেমে যায়
দুই চোখে রেশমের ঘুম
প্রতিচ্ছবি পেলব আয়নায়!
যখনি সে বখাটের মত
চায় খুব স্পষ্ট- ডাকে, দেখে,
তাহাদের আমাদের ঘুম
নির্ঘুম দূরত্ব দেখে শেখে!
উল্কার মত সেই আলো
দুইহাতে মেঘ ঠেলে চলে
তার হাতে সমস্ত সকাল
বিকেলের পাখি তার কোলে!
এই শীত রাতভর জাগে
দিগন্তে পূবালির আলো
তোমায় জানিনা এতটুকু
তোমার তো জানাশোনা ভালো!
ছুঁয়ে দেখ,- জল নই আমি
বিকেলের পথে
সবুজ গমের শীষে প্রায়বিলুপ্তরোদ, সাদাফুল ফুটে আছে পথে, কেউ
কাউকে কী পুরোপুরি বঞ্চিত করে ? বিপুল উৎসবে শূন্যের সাথে মাটি,
কথা বলে এখানে, ঝিঁঝিঁর নিস-ব্ধপংক্তি মনোবৈকল্য নাড়ে, পাখিরা বুনোগন্ধের
অর্চনা করে, কচি আপেলের গুটি আমাকে দেখে, কামড়িয়ে খায় ; টকস্বাদে
কামনা আমাদের চাঁদমুড়ি দিয়ে হাঁটে। বিকেলের পথে কেউ কাউকে কী