উইক পয়েন্ট
------------------
শুরুতে তুমি আপনিতেই ছিলে, আমি
স্রেফ তুমি দিয়েই শুরু করেছিলাম;
তারপর বাকি আট-দশটা সম্পর্কের মতো
প্রিয় গান, প্রিয় ফুল, টুকে নেয়া সেলফোন নাম্বার
আর বাড়িতে কটা মাথা তা গুনে নেয়া -
মানে স্বাভাবিক আলাপচারিতা ;
এরপর একদিন হঠাৎ করে তুমি জানতে চাইলেঃ
"আচ্ছা, তোমার ভালোলাগা গুলো কি কি?"
আমি ঠিক বুঝিনি, তাই তুমি বল্লে, ইয়ে.. মানে
তোমার উইক পয়েন্ট ..
পৌনপুনিক
--------------------- প্রখর-রোদ্দুর
যোগী হলে হয়তো অবিরাম শব্দটি যথার্থ হতো
তবু প্রায়; বিলক্ষণ,
রাতের নির্জনতায় বিশুদ্ধ কর্পূর জ্বলে
তপ্ত পাপের অনলে।
ঝিম ধরা কোন দুপুরে টুকরো মেঘ এলো মেলো ভাসে যেমন
একাকী চিলের দিকে তাকিয়ে -
বিলাসী অনুভব ভর করে চুলচেরা নাগরিক জীবনে।
কাকচক্ষু জলে ক্ষুদ্র পোকাদের চলাফেরায়
নিস্তরঙ্গ স্থিরতায় যৎ সামান্য ঢেউয়ের আলিঙ্গন হলেও
দেশ ছেড়ে যাবার সময় বাবা-মা'র পর যাদের জন্য সবচেয়ে বেশী খারাপ লেগেছিল তারা হল আমার আলমারি ভরা বিচিত্র সব বই আর খাতা। তাদের সাথে সম্পর্কটা আমার অপার্থিব।অশেষ ঋণী আমি তাদের কাছে। ঠুলি পড়ে যাওয়া আমার চোখ দুটো তারা একদিন জলের ঝাপ্টা দিয়ে খুলে দিয়েছিল। পৃথিবীটাকে অন্যরকমভাবে ভালবাসতে শেখার প্রেরণা দিয়েছিল চিত্র-বিচিত্র বইগুলো। কত বই। কত সহস্র চিত্রকল্প। ইতিহাস। তাদের সেই আলমারির অন্ধকার প্রকোষ্ঠে ফেলে
আমার কথাোগুলো আত্মহত্যা করেছে
মৃত কথাগুলোও ফাঁসিতে ঝুলাবে,
অমানিশা কেটে গেলে!
বোবা চোখ অনেক জানে
চোখের দৃষ্টি যে কতটুকু ধারালো হতে পারে
ধূসর কুহেলি দূর হলে প্রকাশ পাবে!
এই নখের ভেতর জমে আছে পুরাতন রোদ
সেই রোদের তীব্রতা, স্নেহ, ভালোবাসার থেকেও মূর্ত
এই নখও সময়ে হতে জানে ঘোড়ার খুর!
আজ যে ছেলেটি অরব ধাবমান রোদ্দুরে
বুকে মায়া, মৌনতা চেপে, গোপন বিন্যাস লুকিয়ে
কিছু বানানবিভ্রাট থেকে গেছে রাবারের বনে
তাহাদের দৌড়-ঝাঁপ-- তাহাদের গূঢ় সব কথা
খাটের কিনারে এসে থেমে গিয়ে চুপ বসে থাকে
আমার সময় গেল ভুল ব্যাকরণে-- মাকড়ের ফাঁদে
এখন গভীর রাত
নিদ্রাভ্রমণের কালে এসে ঠেকে গেছি
অপেক্ষা
-----------
জানালা দিয়ে যতটা দেখা যায় -
ড্রেসিং টেবিলের পাশে রাখা
একপাতা টিপের মতো
রাতের আকাশ জোড়া কিছু নক্ষত্র;
আর একটু দূরে তোমার জানালা আড়াল করে
মুঠি মুঠি শিমুল ফুল; তার ফাঁক গলে
জানালার পর্দায় নকশা করা প্রজাপতি -
অপেক্ষায় থাকি;
কখন দমকা হাওয়া এসে উড়িয়ে দেবে আড়াল, দেখা যাবে
তোমার কাঁধ বেয়ে কোমরে নামা
একটা পূর্নদৈঘ্যের রাত্রি;
ফাটল
-------------
"as the sky contained my garden,
I opened my door"
রোদ নেমে আসে; বিকেলের লিলির পাঁপড়িতে
বাতাস দোলে
ব্যালকনিতে বিয়ারের ক্যান,
ব্যালকনিতে রক্তের দাগ,
ক্যানের অগ্রভাগে ঢুকে যাওয়া আঙ্গুল টনটন করে ব্যাথায়
একটা মুখ ভাবি -
আমার শেভ করা গালে একটা হাত; গাল ঘসে ঘসে
চিবুকে এসে থামে
ক্যানভাসের বাড়িয়ে দেয়া হাতে ফুঁটে ওঠে মিলিত অবয়ব
স্তনের ভাঁজে তিল
এই শীতের দেশ থেকে সত্যি সত্যি একদিন পালাব আমি
আহা! শীত, অন্ধকার রাত্রি, তোকে একটু পাশেটাশে নিয়ে
বসি নিরিবিলি, তুই স্রোতানদীর পাড় ঘেঁশাএক পোড়াবাঁশি
তোর দেহানুভবের চক্রপথটি ধরে পালক ছড়াতে ছড়াতে
পাশ-বিরহের ঠোকাঠুকি দেখতে কেন যে দাঁড়াস ব্রত-মুখে?
তারচে’ ভালো নিভন্ত একটি দীর্ঘশ্বাস পাঠে জোনাক জ্বলুক
রাত্রিজাগা-রোগে...
অবিনাশী যে আগুনে পুড়েছে সভ্যতা
আমিতো চেয়েছি তাতে পুড়ে খাঁক হতে প্রথম,
চেয়েছি অনাবাদী সব বুকে
বুনে দিতে শেষ ফাগুনের ভালোবাসা সব
চেয়েছি নদী হয়ে বয়ে যেতে
যতসব ঊষর খরচোখে
চেয়েছি পূনর্বার ফিরে আসার আগে
চিনে যেতে কোন সে গন্তব্য আমাদের।
আমিতো ভেবেছি সূর্যমুখী সব বুকে গেঁথে নিলে
তোমার ফেরার পথে ভেসে ওঠে শিউলীর কার্পেট
ভেবেছি শেষ বিকেলের রেনুয় স্নান হলে
ধুঁয়ে যায় হৃদয়ে পালিত সহস্র বাসী পাপ,