এক বন্ধুই বলেছিল, ‘ একা লাগবেনা আর
কিনে ফেল একটা গীটার অথবা বেহালা
কিংবা নিদেনপক্ষে সস্তা দামের বাঁশের একটা বাঁশি।
গীটারের ছয়টা তারে আঙুল ছোঁয়ালেই দেখবি
অদৃশ্য এক জগত থেকে ছুটে এসেছে ছয়টা অপূর্ব ঋতু,
তাদের রূপ তোর অচেনা, তাদের গল্প তোর শোনা হয়নি কোনদিন,
দেয়ালজুড়ে দেখবি তখন ফুটে উঠেছে ফসলের ঊজ্জ্বল মাঠ
একটু আগের বিষন্ন ঘরে যেন হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়েছে
আজ আমার সব আছে
শুধু ভালোবাসা ছাড়া।
আমি আমার ভালোবাসা ফেলে এসেছি
রৌদ্রজ্জ্বোল করতলে
জীবনের বিন্যস্ত সজ্জা ছেড়ে
পলাতক কাপুরুষের মতো
আমি পালিয়ে এসেছি
জীবনের আলোকিতো চৌকাঠ পেরিয়ে।
মূলতঃ আমি একটা আকাশের কথা বলছি
--------------------------------------------
চকচকে মেঝেতে চৌকোনা রোদ্দুর;
মূলতঃ আমি একটা আকাশের কথা বলছি
যেটা জানালাপ্রসূত,
তার পাশে বাসি সর জমা চায়ের কাপে
কিছু মৃত পিঁপড়ে;
একটু দূরে বইয়ের তাক, কিছু গোছানো বই; আর
ধুলো জমা বিষাদমনস্ক শোপিসের কলোনী;
মূলতঃ আমি তোমর জন্মদিনের কথা বলছি;
অথবা তোমর ফিরে আসার সম্ভাবনার কথা ভেবে
‘মহুয়া-মিলন’ স্টেশনে পৌঁছুবো বলে
ঝোলাভর্তি চারুময় রোদের স্বপ্ন নিয়ে
আমরা আচ্ছন্ন সেতারের মতো
ট্রেনের কামরায় উঠে বসেছিলাম...
আমাদের চারদিকে সোনালি চিলের মতো
অমলকান্তি দিনের উড়াল...
বাতাসে ছড়ানো নির্মল আগুনের ফুলকি...
আমাদের বুকপকেটে আকাশভর্তি নক্ষত্রের মতো
জোনাকির ঝিকিমিকি আলো...
তাজা কৃষ্ণচূড়ার মতো
রক্তের বুদবুদে প্রেম মাখামাখি হয়ে আছে।
দিন আসে...দিন চলে যায়...
(অজুহাত এক: স্প্যানিশ আমার জানা ভাষা নয়। ভাব প্রকাশ ও গ্রহণের দৌড় বাংলা আর টার্জান ইংরেজি পর্যন্ত। ও হ্যাঁ টেনিদার মতো তুম নেহি জানতা টাইপ হিন্দিও কিছুটা বুঝি সে আলাদা কথা। যা বলছিলাম, স্প্যানিশ থেকে সরাসরি অনুবাদ করা তাই আমার দ্বারা সম্ভব না। আবার কবিতা ইংরেজি ঘুরে বাংলায় আসলে সেটার আসল রস কতটা থাকে সেটাও একটা প্রশ্ন। কবিরা ভালো বুঝবেন এসব ব্যাপার, আমার মতো লোকেদের এইসব আলাপ না চালানোই ভালো।
কোন ক্লাসে পড়েছিলাম এই কবিতা এখন তা আর মনে নেই। সিক্সে কি সেভেনে কি এইটে। তবে মনে আছে ইংরেজী বইটার পৃষ্ঠাগুলো হালকা লালরঙা ছিল। পাতাগুলো ওলটালেই নিউজপ্রিন্টের মিষ্টি গন্ধটা এসে নাকে টোকা দিত। মা খুব যত্ন করে সবগুলো বইয়ের মলাট করে দিত। তার উপর আমি সুন্দর করে লিখে রাখতাম বইটার নাম।
গ্রুপস্টাডি
অন্ধ ছিলাম আমরা;
প্রথমে বর্ণ পরিচয়,
অতঃপর শব্দ পরিচয়
অমনি অসতর্ক শব্দ গুলো উড়তে লাগল সাদা-কালো মেঘদের ছুয়ে ছুয়ে
সিমফুল ঠোট গুজে নেমে এল নতুন বউয়ের মত রোদ।
আমরা গন্ধ শিখলাম;
নিকষ কালো রাত্রির টাটকা গন্ধ
মিটিমিটি জ্বলা জোনাকি পোকার গন্ধ
আর উদাসীন, চিৎ হয়ে শুয়ে থাকা মৃতপ্রায় নদীটির গন্ধ ।
আমরা গন্ধ শিখলাম;
বেশ উন্মুল হয়ে আছি
সিক্ত পলিমাটি কখন যে ধুলোকণা হয়ে গ্যাছে, কে জানে।
এইরূপ একটা বিবর্তন বুঝি সংগত ছিলো,
উনিশশো উননব্বই কুড়ে খায় গোড়া থেকে
ভবিষ্যতও নির্বাক, স্বপ্ন-হীন-ঠিকানা-বিহীন – ভবঘুরে,
সময় ভারী সর্বনাশী, তান্ডব ঝড়ে আলুথালু,
শুধু এক অজানা বিবমিষা বেড়ে ওঠে -
আর আমাদের বাগান, শেকড় থেকে কেবলই দূরে সরে যায়।
আমি যে কবি হব সেটা আমি টের পেয়েছিলাম একেবারে ন্যাদাবেলায়। তখনও মুখের কথা ফুটেছে, কি ফোটেনি, তখন থেকেই নাকি আমার সব কিছুতে এক অদ্ভুত ছন্দ। একবার কান্নার সুর উঠলে, সেই সুরে শুধু বাড়ির মানুষ না, একেবারে পাড়া-প্রতিবেশী সহ সবাইকে মাতিয়ে তুলতাম। সে নাকি এক এলাহি কাণ্ড। এরকম কথা ছোট বেলা থেকেই শুনে শুনে বড় হওয়া। তাই যখন স্কুলেই ভর্তি হয়েছি কি হইনি, হলেও বড়জোর কেজি ক্লাস বা এক-ক্লাসে পড়ি, তখন এক
টাপুরটুপুর মন ভালো নেই
সকালটা আজ ভোরবেলাতেই
মেঘের সাথে ভাব করেছে, যাচ্ছে ঝরে, যাচ্ছে ঝরে...
জানালাটা পাতার ভিড়ে আনমনা মন
প্রাপক বিহীন পত্রগুলো জলের মতন
কোথায় কখন কার কাছে যায় কার কাছে যায়, এমন করে!
পাতায় পাতায় জলের ফোঁটা সূত্রবিহীন সুতোর টানে
কেবল ঝরে কেবল ঝরে --- আকাশ জানে
মেঘ জানেনা জলের খবর,
জল জানে কি!
খুব দেখেছি
গন্ধ-সোঁদা জলের বহর
মৃত্তিকাতে ঢেউ গুনে যায় সব-প্রহরে;