অরণ্যে কমছে শ্বাপদ, বাড়ছে জনপদে
রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে খুন, আছে হিংসা প্রতিপদে।
নিজেদের কেউ কখনও পড়লে বিপদে
তেড়ে আসে পশুরাও তার প্রতিরোধে
আসে না মানুষ শুধু বাঁচাতে স্বজাতে!
কাক কোনোদিন খায় না কাকের মাংশ
মানুষেরা মানুষের খায়
গ্রেনেড গুলি, বুকেতে ছুরি, শিরচ্ছেদে
কতো আদমের প্রাণ যায়!
দ্যাখো বিশ্ব চরাচরে মানুষে বিদ্বেষ
বাড়ছে নিষ্ঠুর নৃশংসতা
কাঁদছে নীরবে মানবতা একা ঘরে
কবিতা, তুমি দিনে-দিনে অনেকদূরে চলে যাচ্ছো!
স্পাইন অপারেশনের পর থেকে আমাদের মেলামেশা
কমে গেছে, টেবিলে বসতে পারি না পিঠে ব্যথা করে
বুকে বালিশ চেপে লিখতে পারি না কাঁধের শিরাগুলো
ফুলে-ফেঁপে ওঠে... শুয়েও পারি না, ঘুমে চোখ টলে
জানি না, রণজিৎ দাশের ‘আমাদের লাজুক করিতা’র
মত তোমাকে কোথায় শোতে দেব? এই পরবাসে—
এই শীতের দেশে ফুটপাতেও তোমার জায়গা নেই
এখানে ফেরিওলাও পাবে না, যে আদরে বানাবে
'আশি'র পরে তিতির চোখে আর জ্যোতি ছিলো না।
অথচ, আমরা সেখান থেকেই আলো নিয়ে,
আলো নিয়ে বানিয়েছি সোনার বালিয়াড়ি।
সেখান থেকেই স্বপ্ন নিয়েছি-কেমন দ্যুতিময় ছিল শৈশব!
কাঁপত ভবিষ্যত, তিতির চোখের মত তিরতির-
আর আমরা অবেলায় সানাইয়ে চমকিত
আমপাতার শিরায় লুকিয়ে ফেলতাম গোপন অভিজ্ঞতার সমস্ত আয়না!
মাঝে মধ্যে দুটি একটি অবুঝ মুখ দেখা দিয়ে মেলাত সাবধানে
আমরা ফিরে গিয়ে চৈত্রের ধূলার মাঝে
একটি ধারালো চাকু নিয়ত আমায় কাঁটে,
স্মৃতির নরম শিরা ছোপ ছোপ লাল।
কী এক অন্ধ দ্যুতির দেখা পাই নরম ব্যাথায়।
সে এক মজার অসুখ.......................
ঢেউ হয়ে জ্বলে আর নিভে
মাতাল রাত্রির ফুল লুটে নেবে- নিতে পার ভোরে।
মৃত্যুর মতো কিছু টুকটাক আলো,
তোমার দুটি চোখ মেলে যদি ধরো
সেখানে বরফ দেশ বেদনা পাথর হয়ে যায়।
হৃদয় অভয়মুদ্রা রহস্যরাত্তির পায়ে পায়ে
নদী ও জ্যোস্না পাশাপাশি;
আজ দখিনের জানলা খুলেই দেখা গেলো
জোর বাতাসের পেখম ছুঁয়ে যাচ্ছে উড়ে
একটা চিরল গাছের পাতা সহজ সরল;
আজ দখিনের জানলা খুলেই মনে হলো
আজ সারাদিন বায়স্কোপের বাক্স খুলে
আসবে যাবে নিত্যনতুন ‘কি চমৎকার দেখা গেলো’!
আজ দখিনের জানলা খুলেই জেনে গেলাম
সূত্রধরের সুতো যত ধীরে ধীরে যাচ্ছে ভেসে
হরেক রঙের আটপৌরে এক রঙের ডানায়;
আজ দখিনের আকাশ এবং মেঘের সাথে
সকালবেলা ভাব-বিনিময় হতে হতে
আয়না নিজের সৌন্দর্য যাচাই করতে শেখায়
আয়না নিজেকে জানতে, জানাতে শুদ্ধির পথ দেখায়
এ-বিশ্বাসে সংকোচ ছাড়াই আলোড়িত! বিলোড়িত কল্পনা
মর্মগ্রহণতা তোমার চোখে... চোখ রেখে যদি বলি—
চোখ মনের আয়না
লুকোচুরিতে হারাতে চাই না বলে এতটা নৈকট্য
এতটা সৌহার্দ্য ছুঁতে পারা গেল; কিন্তু প্রতিসত্য
প্রতিদিন আয়নার মুখ দেখার কথা মনেই থাকে না
বন্ধু যারা দুঃখ পেয়েছো রূপাদের কথায়
দুঃখকে করুণা কর না, হাড়ের ভাষায়
মিশে যাচ্ছো সম্পর্কে তৎক্ষণাত...
অল্পই তফাৎ
এই যা পান করা তামাকপাতা; শুশ্রূষা আহা!
সুখের ভেতর দুঃখকে শেখানো হচ্ছে চোখের প্রণয়
ওভাবে আমরা ভাবলে দেখতো কেমন হয়?
গাছের ছায়াগুলো হাসে পাখির ডানায়
রূপাদের ছায়া মিশে যাচ্ছে ঘাসের পাতায়
বন্ধু যারা দুঃখ পেয়েছো সমবেদনা তোমাদের
এক.
বহুদূর হেটে গেলে টের পাই বহুদূর পথ
ধরে পড়ে থাকে ফেলে আসা পথের ধুলোরা সব;
প্রতিটি ধুলোর কাছে স্মৃতি জমা থাকে;
আমরা অজস্র সাঁকো বাধা পথ ধরে যেতে যেতে
অযুত নিযুত যত ঝিঁঝিঁ-ধুলোদের ভিড়ে মিশে
গড়ে তুলি আমাদের এক - স্মৃতিময় কাঠগড়া!
(বরিশাল, ০১. ১০. ২০১১)
(কবিতা লিখছি না অনেক দিন। খোমাখাতায় এক বন্ধুর শেয়ার দেওয়া তিন লাইন দেখে বেশ ভালো লাগলো। খুঁজে দেখলাম সেটা রবার্ট ফ্রস্টের একটি কবিতা। মূল কবিতাটি পড়ে ভালো লাগায় অনুবাদ করার চেষ্টা করলাম। নীড়পাতায় কবিতা টবিতা নাই, কেমন খালি খালি লাগছে... তাই সাহস করে দিয়ে দিলাম। ভালো লাগলে হাততালি আর না লাগলে ঠুয়া দিয়ে কবিতাটি নীড়পাতা থেকে সরিয়ে দিবেন।)
কথা বলার ভেতর যে আনন্দভাব থাকে
কথা বলার শেষে তাও কি ধরে রাখা যায়?
সারাক্ষণ জীবন-জিজ্ঞাসা, ফোটে কি ফোটে না
এই প্রাবল্যে কাটছে সময়, বহু দিনের ইচ্ছা
আর ক’টা দিন পর সব কথা পরবে মুখোশ
-হারাবে অঙ্গের সচলতা
চোখ খুললেই দেখি জটিল রূপ রেখার ভেতর
হাঁটতে হাঁটতে তুমি তুলে আনছো রোদক্লান্তবুক
পাতার ছায়া!
পপকর্ন, সে-তো ভালোই জানে—