তিস্তার তীর, পা’দুটি ভেজানো জলে
কার কথা ভেবে দুপুরের রূপা রোদে
চোখে বুনেছিলি পলি মাখা মিহি সুখ!
জলে রেখেছিলি লাজরাঙা ছায়া ফেলে
সেই রেখা ধরে হেঁটেছে কে অবেলায়?
তোমাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ, এই কিংকর্তব্যবিমুঢ়তায়
আঁকড়ে ধরার চেষ্টায় আছি অবিরত, তোমাদের হাত।
প্রিয় বন্ধু ও সহোদরগন, ক্রমশ নিঃস্ব হতে হতে
নিঃস্বঙ্গতাকে করছি বরন। একাকিত্বের সহচার্য
অনন্ত শূন্যতায় ভর করে নিয়ে যাচ্ছে আমাকে
প্রতিনিয়ত নৈঃশব্দের এক দুপুরের কাছে।
চলমান কোলাহল থেকে হারাই হঠাৎ অজান্তে
ফিরে পাই নিজেকে আবার পুরোনো হাঁকডাকে।
অনিশ্চয়তার ধুধু ময়দানটায় দুপুরের জলন্ত রোদ
পুরোন টাইপমেশিন, লোহার হরফ, নাট-বল্টু, কল-কবজা,
ভাঙ্গা-দরজা, কাষ্ঠের টুকরো, চাল থেকে খসেপড়া টালি,
এককোণে পাতা দুটো জংধরা লোহার টেবিল
কিছু যেন বলবে,
বিলুপ্তির যোগসূত্রধরে?
মধ্যবর্তীদরজা-
বন্ধ-ঘোষণা করেছে ঘুণেখাওয়া গাদাকরা চেরাইকাঠ, টালি
আর ভেঙেপড়া দেয়ালের ভগ্নস'প। বাইরের দরজা দিয়ে অন্য
কয়েকটি কামরায় যাওয়া যায়। একটিতে, তীব্রকাচ ছিটিয়ে
খসেপড়ে আছে কয়েকজোড়া জানালা ;
হাজার কথার এক শক্ত বাঁধন
যাচ্ছে খুলে শত অজানা ঝড়ে
সূতোর ওপার থেকে মারো তুমি টান
স্বপ্ন-বাসর তাই বড়ো নড়বড়ে
ঐ দারুচিনি দ্বীপটা যাচ্ছে সরে।।
যাই না এখন আর রূপকথা দেশে
মেঘের ভেলায় চড়ে রাজার বেশে
জমাট আঁধার মেঘ দিগন্ত নীড়ে
আমি চেনাপথে অচেনা থাকছি পড়ে।।
অদেখা তোমার রূপ সন্দেহ ছবি
গড়ছে মনের ভুল হৃদয় কবি
বাসর রচনা যেন ধূ ধূ প্রান্তরে
তুমি নিশিদিন অধরা জনম ভরে।।
তুমি চলে গেলে
আরো খানিকটা নির্জন দিন পাবো
নিভৃত আঁধারে মসৃণ সুরে সত্ত্বাকে গড়ে নেব
কিসে যেন রেগে গেলে... তার মানে
হারানো কান্নাও হতে পারে গোপনে
আরো তিন-তিনটি বছর পর...
সবই বুঝি মৃদু ত্রুটি কাঁচা মাংশের ঘ্রাণে
ওই মুখ! ‘বর্ণিত হবার লোভে’ লাজুক বাগানে
মনে ও বনে
এসব ঘটনাপ্রবাহ কুড়ি বছর পর কবিকে চেনে
শেষ দিবসে আমি যখন কিছু কথা জমিয়ে রাখি
কাঁধেপিঠে ধূলির নগরে
কাঁপা হাতের আড়াল থেকে সর্বস্ব দাও
১.
ব্যাকরণ অস্বীকার করলাম আজ আবার! আজ
অস্বীকার করলাম মানুষের হাতে তৈরি হওয়া সকল অভিধান; আজ থেকে
-সকল ধরাবাঁধা উপপাদ্য, গণিত, জ্যামিতি, ত্রিকোণমিতি, নাম-ধাম, আচার-বিচার, ক্ষেত্রফল-রসকদম্ব- যোগ-বিয়োগ- গুণ-ভাগ, হরাইজন্টাল-মরাইজন্টাল, তত্ত্ব-তালাশ, কাঁটাতার-ব্যারিকেড;
এমনকি যাবতীয় রাক্ষস-খুক্ষস-দৈত্য-দানো-ভুত-পেত্নী-হুর-পরি, জহরত-মহরত, ইশারা-ইঙ্গিত, শান-শওকত;
(বরেষু ইশ্তিয়াক চৌধুরী সেলিম কে )
তুই কী জানিস দীপঙ্কর :
সেলিম আজকাল কোথায় থাকে?
নিঝুম পাড়ায় মতির সাথে,
আমাদের মাছ ধরতে যাবার কথা
ছিল। চদ্র-আসক্তির সেই দিনগুলো ;
সেই বিল, বিলের উপমা ;
বাবুল আর শিলার শহর-
তাদের বিচ্ছেদের ফরিদপুর, এখন
কেমন আছে? একসাথে দেখতে যাবার
কথা ছিল আমাদের।
জানালার পাশে বসে কল্পনার সুতোয় বেঁধে, রঙিনচিল উড়নোর
এক.
তারপর আর কোন কথা বাকি থাকবেনা কোনদিন, তারপর নীরবতা থেকে গেছে পনেরো-আনা --
এক আনা মানুষ বুঝেছো - যতখানি অনুবাদ করেছো- তার বেশী প্রশ্রয় দেবোনা!!
(২৭.০৮.২০১১)
দুই.
ধরে রাখতে শিখিনি, নাকি জোর করলেই হতো?
নাকি অধিকার আদায় করে নিতে হয় নিজের মত---
এই “নিজের মত” বলেই বলে দিতে পারি এখনি-