আমি ওদের দেখেছিলাম একেবারে
কাছ থেকে, হৃদয়ের অতি কাছ
হতে ছুয়ে দিয়েছিলাম ওদের গভীর কালো ভেজা চোখ ।
শীর্নকায় পাঠকাঠির মত হ্যাংলা আর নিষ্পাপ
প্রানময় শরীর গুলোর সাথে আমি অনেক খেলেছি হাডুডু আর কানামাছি ।
হুজুরের নিঃস্পৃহ চোখ
পেরিয়ে প্রয়াশই ধরতে গিয়েছি কতযে লাল নীল প্রজাপতি
ওরা জানত ঐশী ছোঁয়ায় ওরা আলোকময় হয় অহর্নিশ
আমিও অবাক চোখে দেখতাম __
তূর পাহাড়ের নুর ভর করেছে ওদের ছোট্ট শরীরময়
১. উৎসর্গ: মিশুক মুনীর, তারেক মাসুদ এবং তাদের মৃত তিন সঙ্গী
আজকাল মানুষের ভিড়ে মানুষ খুঁজিনা, নিজেকেই খুঁজি!
মানুষ এখন দ্রব্যগুণে মানুষ হয়ে গেছে, তাই বুঝি
মানুষ নগণ্য এখন, হয়ে গেছে নতজানু, পঙ্গু ক্রীতদাস -
এ-শুধু অক্ষম সময়ে টিকে থাকার সক্ষম প্রয়াস।
আজকাল মনুষ্যত্বের দাবি নিয়ে আসিনা মানুষের কাছে -
জেনে গেছি - ’মনু’ থেকে ’হুশ’ বিভাজিত হয়ে গেছে;
এ-কোন সারমর্ম নয়, নয় তর্কের খাতিরে আলোচনা,
একাকীত্ব, দূরে আছো বলেই কি উইশ করব না!
আমি আর মন এক জায়গায় স্থির থাকতে পারি না
কি আশ্চর্য, ঘুমে জাগি, ঘুমে হাসি ভালো লাগে না
প্রস্তুতি, যৌথইচ্ছেকে একা পেয়ে নালিশ করো না
তারচে’ গোপনে চেপে যাও, যা ধরে রাখা যায় না
আমি হাঁটছি, সে হাঁটার রোমাঞ্চ খেয়ে বলছো কথা
শরীরের ভার ধরে রাখছে খাড়ারোদ, পায়ের পাতা
ডালে ঝুলে ফুল হও, ফল হও, গাছে পরাও ভাবনা
যে মানুষ ব্যর্থতার স্বাদ কখনো পায় নি---সে এক অপূর্ণাঙ্গ মানুষ
পথ চলতে গিয়ে আছড়ে পড়েনি যে
সে কী করে বুঝবে ধুলো ঝেড়ে ফেলে আবার উঠে দাঁড়ানোর মাহাত্ম্য--
এই যে, তোমার দিকে না-তাকিয়ে কমে যাচ্ছে সলজ্জ
চোখের সহনক্ষমতা
তুমি কি চাও, লোকে আমাদের নিয়ে হাসাহাসি করুক
বলাবলি করুক, আলাদা থাকার মানে ঝগড়া হচ্ছে না
কিংবা আত্মসমর্পনের আগে-পিছে কোন সম্পর্ক ছিল না!
হতে পারে যে কোন ইচ্ছের আগে দীর্ঘশ্বাসের রঙটি একা
যদিও বিশ্বাসের আগে সাবধানতা ধরে রাখা সম্ভব হয় না!
এতদিন একা থাকা অসহ্য, ভালো থাকা সম্ভাব্য দরকার
১. (উৎসর্গ: সুমন তুরহান)
অভিমানী হতে পারি, প্রতারক নই -
আলো নেই, কি করে সালোক-সংশ্লেষিত হই?
যান্ত্রিক পৃথিবীতে একরত্তি পিদিমের কতটুকু ঠাই -
তবুওতো আধপোড়া সলতের সুখ, প্রাণপণ জ্বলে যাই।
চাহিদার উপসংহার নেই, নেই দাড়ি, কমা, যতিচিহ্ন
কতদূর দিতে পারি? সুবিশাল আকাংখায়, সামর্থ্য সামান্য;
সব ধুপ শেষ হয়ে যায়, মৃদু হয় সবটুকু শ্বাস -
ফিরিয়ে দিতে পারো শেষ সহজ হাসি, সর্বশেষ উচ্ছ্বাস?
বনভূমির শীতল ছায়ায়
বিশাল বৃক্ষের নিচে
সবুজ পাটির মতো
গোপনে থানকনি পাতার মিতালিতে
যে সতেজ গুল্মগুলো জন্মে,
ওরা আমাদের জানতো।
দেখা হলেই, একটু বসবে ?
আমরাও ওদের না বলে পারিনি,
সবুজ-শান্তি!
এ বনের প্রতিটি ফুল
প্রতিটি পাখি
বুনো-গন্ধ
কীট-পতঙ্গ
প্রজাপতি,
ঘাসের সঙ্গে আমার সম্পর্ক এক যুগেরও বেশী :
গুল্মগুলোকে গতকালও বলেছি, যাবে ?
ডিস্ক্লেইমারঃ দেশের বিদ্যুৎব্যবস্থার অতুলনীয় উন্নতির ঘর্মাক্ত সাক্ষী আর সেইসাথে মশককুলের মনোহারিণী সঙ্গীতসহকার ভালোবাসায় বিদ্ধ হতে হতে মনে মনে রচিত নিম্নোক্ত অতি আজাইরা পঙক্তিমালা। সুতরাং নিজের মূল্যবান সময় অপচয়ের ইচ্ছা না থাকলে এখানেই ক্ষ্যামা দ্যান।
ঘোরলাগা সন্ধ্যায়
একা বসে বারান্দায়
ঘরে ফেরে পাখি উড়ে, মানুষ রাস্তায়
এলোমেলো সোনারঙা মেঘেদের আনাগোনায়
সবুজ আলোয় ঢেউ তোলা তরল
পুকুরজুড়ে কেন্দ্রাতিগ বৃত্ত এঁকে গেল
আর নীল দ্রবণ একটু গা বাঁচিয়ে
জলের বালতিতে ছটফট করতে করতে
ঝাঁপ দিলো সবুজ বেড়ি ভেঙে নিজের দখল নিতে...
স্বর্গের ওপেনিং-ডে তে শয়তান এসে এমনই কিছু মন্ত্র পড়লেন
স্বর্গবাসীরা চুপ, শুধু সবার পকেটের টাকারা কথা বলে উঠলো
আনন্দময় করতালিতে ফেটে গেল চত্ত্বর
শয়তান আরও কিছু বললেন
নির্বাক মানুষের কাছ থেকে টাকাগুলো
হৈ-করে উড়ে গেল মঞ্চে
পাঁজরের কবিতা
যে পাঁজর মেখেছিলো জাফরান রোদ
সে পাঁজর এখনো কি বাজায় সরোদ?
কবিতা তোমার ঠোঁট মরমী আঙুল
কবিতা জলের ফোঁটা করোটির ফুল।