শেষবারের মত ঘুরে আসা যাক ধূলিময় প্রিয় প্রান্তর
যেখানে আমার গতিময় পদচ্ছাপ
চাপা পড়েছে বিকট কংক্রিটের নিচে
সেই এক জলমগ্ন নৌকার খোলে আমার সর্পভীতি
রূপান্তরিত হয় জলাবদ্ধতায় অদৃশ্য ম্যানহোলের অন্ধকারে
শেষবারের মত আমি সেই গা-ছমছম দৃশ্যটি ছুঁতে চাই।
এখনো আমি খুব বিমর্ষতায় ভোরের ঘুম-ভাঙা মাঠের
শিশির জড়ানো আলোতে
আঁকড়ে ধরি গোলপোস্ট, কর্নার কিক, রেফারির বাঁশি
কবিতা পড়তে তেমন ইচ্ছে করত না সেসময় । একদিন এক সিনিয়র বললেন, “আবুল হাসান” পড়ে দেখ। কবির নামটা অতি সাধারণ মনে হল-এরকম কত নাম ঘুরে আমাদের চারপাশে। তাই পড়া হয়ে উঠলনা তখন।
বনফুলের প্রেমিক ছিলাম। নীল নাকফুলকে রেখে
কখনো সখনো গিয়েছি
হলুদ লাল কমলা ফুলের কাছে,
আবার ফিরে এসেছি।
তুমি আমার প্রাণ, প্রাণবায়ু।
তুমি আমার প্রেম, স্বপ্ন, অমর একুশে। তুমি স্বাধীনতা।
তুমি হাজার বছরের পুরাতন চর্যার ঝাণ্ডা। তুমি অগ্নিবীণা
সোনার তরী, তুমি আমার রূপসী বাংলা।
একটি সরল মুখ
আর একটি জটিল হৃদয়ের মধ্যে
আমি খুঁজেছি জীবন,
পৃথিবীর
রাস্তার ও-পাশ ধরে হাঁটলেই মনে হয় আমার ইচ্ছেটা ঐশ্বর্যময়
রোদের প্রখর দৃষ্টি যেন গহননদী! নাড়ছে-চুষছে রীতিহীন খেলায়
কিছু ছায়াহীন ধূলিপথ গিলে ফেলছে কেউ জলগন্ধ পিপাসায়
আলতা-সিঁদুর পরা পায়ের ঘুঙুর… বেণীচুলের ঘ্রাণে সেও প্রিয়
দুশ্চিন্তা, অমন করে কেউ কি ধরে রাখতে পারে ছড়ানো ছাতায়
বৃষ্টি আসলেই পুরনো বছরের প্রতীক্ষায় ‘দিনানুদিনের’ ঝঞ্ঝায়
কুয়াকাটা: মূহুর্তের জল!
.... তানিম এহসান
১.
আমার মা আমার মায়ের মতন,
কারন আমি তার ছেলে এবং যেহেতু
তিনি আমার মা এখানে তুলনার প্রশ্নটি অবান্তর।
আমার মা শুধুমাত্র আমার মায়ের মতন বলে
আমাদের সব জন্মেই আমার মা আমার মা,
আর আমি তার জলপুত্র!!
৩০. ০৭. ২০১১
২.
পৃথিবীর তিনভাগ জল, পৃথিবীর তিনভাগে স্নাত এ জীবন!
মানুষ হিসেবে তিনভাগ বেড়ে ওঠা, একভাগে বিলাস নেই;
তুমি ভুলে যাবে - জানি,
গেলেই বা,
আমি যেন না ভুলি,
এই একটুকরো সন্ধ্যা,
এই অচেনা গোধুলি;
এই অপ্রশস্ত ফুটপাত,
এই হিরন্ময় নীরবতা,
এই চলাচল,
আমাদের এই শেষ হাঁটা -
এ-ক-সা-থে,
আমাদের সিক্ত মন,
তার দোলাচল,
তুমি ভুলে যাবে জানি,
গেলেই বা,
আমি যেন না ভুলি,
এই এক একটুকরো সন্ধ্যা,
ভালোলাগার শেষ মুহুর্তগুলি।
আঁধার ছুয়েছে কার্ণিশ -
কার্জনের;
পাখিরা ফিরছে ঘরে,
১.
সুধীর আরতি। বেদীতে আসীন হলে দেবী। অর্চণা-
রচিছে তোমাকে ঘিরে বনদীপ, দূরের নক্ষত্ররাজি।
আঙুলে তোমার ফুলোঙ্গুরীয়, আমার হৃদয়ের শেষচিহ্ন,
এ নয় এক জনমের প্রেম, এ নয় এক জনমের হৃদয়!
তোমার কণ্ঠে পুষ্প-জড়োয়া, কর্ণে দুলছে ঝুম্কো,
কোমরে জড়ানো লতার বিছাহার।
সাবধানে পরালাম বনবালা,
কেননা সে তো সূর্যের-আগুন!-
আমার হৃদয় থেকে স্খলিত। সিঁথির শিখরে
ধরো, এই আমি— ওই নদীটির কথা ভাবতে ভাবতে
ঘামছি… অতঃপর অপারগ হয়ে যাচ্ছি, আর কবে যেন
সে-ও বলছিল জেনে রাখো, ওই নদী, ওই জল অন্যত্রাসে
তৃষ্ণার টানটান জলে কামড়াতে জানে… অহেতুক বাঁধনে
পেঁচিয়ে যেও না, পুড়ে যাবে
জল কি জানে? অনাদর পেতে-পেতে কীভাবে খুলে পড়ছে
বোবাকথা, গায়ে লেগে থাকা পলাতক ইচ্ছাসহ দেহপূর্ণতা
আমি মূলত আমার আত্মাকে ফেরি করি, তাই জন্মের পর
মৃত্যুই আমাকে পাহারায় রাখছে একা
ঝড়ের শুরুতে বাহুর বাঁধনে অগ্নিদগ্ধ ডানা
তোমার ওষ্ঠে আমার অধর, চুপ করে থাকা মানা
আদ্রর্ চঞ্চু অনূদিত হয় এ কোন প্রাচীন ভাষায়
ভাসতে ভাসতে আমরা ভিড়েছি প্রখর কীর্তিনাশায়।
পৃথিবী মত্ত নয়,পৃথিবী নিমজ্জিত–ভালোবাসার সুগন্ধী প্লাবনে।
পালাবার পথ সবখানেই থাকে।
অনুভূতির মিছিল হামলে পড়ে ক্রমশ নুয়ে পড়া সুড়ঙ্গের জালে।
অভিজ্ঞ সোনালি পাখি তীক্ষ্ণ চোখে খোঁজে অচেনা আঁধার বৃক্ষ।
কখনো ফোটেনি তাতে অধীরতম ফুল ।
ভালোবাসা ছাড়েনা একজোড়া ডানা বসিয়ে দেয় মানুষের ঘাড়ে ।
আলো এবং ফুল সংক্রান্ত স্থবিরতায় আক্রান্ত মানুষকে পৌঁছে দেয়
কোন না কোন সুড়ঙ্গের প্রবেশদ্বারে।
তুকমুবিল