মাঝে মাঝে শিলং পাহাড়ে এসে ঘর বাঁধে
চেরাপুঞ্জির অভিমানী মেঘ ... বিচ্ছিন্ন চোখের
পাতায় পরায় ভরা কাজলের রেখা, শুরু হয়
ঝলমলে নংক্রেম উৎসব।
খোঁপার জন্য প্রজাপতি-রাতজোনাকি
রোদে আগুনলাগা দুপুরে এখানে এসে বসলে
এক ধরনের প্রজাপতি উড়ে এসে
বসতে চায় মাথায়। আমি তাদের
জায়গা করে দিয়েছি কবিতায়।
আমার কবিতা থেকে এখন
উৎসারিত হতে পারে ঝর্ণা।
উড়ে যেতে পারে প্রজাপতি,
তোমার খোঁপার উদ্দেশ্যে আর
রাতজোনাকির মৃদুঝিলমিল।
কিন্তু নিসর্গকে পড়তে, আয়ত্ব করতে
আমাকে বহুবার জন্মাতে হবে এই নিসর্গে ;
আরও উদ্দিষ্ট-অনুদ্দিষ্টকাল বনে জঙ্গলে-
বিহ্বল হয়ে আছে মনথর আষাঢ়ের দিন
--------------- প্রখর রোদ্দুর
মধ্য দুপুরের কিছু পরে-
সিঁধেল চোরের মতো যেদিন একটু আঁচ,
মাড়োয়ারি কোকিলের কুউউউ বাশির ফুউউক,
লোলুপ বেড়ালের মতো মোম শিখা টুকুর উত্তাপে,
প্রথম পরশ দিয়েই,
অনবরত ছড়িয়ে গেছো স্পর্শের শিকড় বাকড়-
সেদিন বুঝি....
দিনাতিপাত সূর্য গ্রহনের হরিপদ উপোষ,
অমাবস্যা থেকে পূর্ণিমার হিসেব কষে যাওয়া খড়ি রঙ্গে,
এক ভরদুপুরে, জনারণ্যে -
খুঁজে পেয়ে নির্জনতা
তোর হাতে আলতো ছুঁয়ে,
ঝিলিক চোখে চোখ লাগিয়ে,
বলেছিলাম একটু কথা।
আকাশে যুবতী চাঁদ
ছলাৎ ছলাৎ ভাসে নগর জীবন!
গহন ঘুমের ঘোরে বিবশ শরীর
পরীর মত ভেসে যায় জোৎস্না ধারায়;
আর বাস্তবতা স্বপ্নে মিলায়।
- sohailchowdhury
পত্রমুকুট
ত্রিকোণ আকৃতির কচি পাতায় পাতায়
মাথা ভরে আছে গাছটার।
পথের পার্শ্বেই দাঁড়িয়ে আছে
নিরিবিলি
ঝিরিঝিরি ...
বাতাসও যেন সারাক্ষণ
এক অনুষঙ্গ দিতে চায় তাকে।
আমি ভেবেছি বহুকাল এই মহান শিল্প
কী করে চুরি যায় ? আর
কাকেই বা- তা মানায় ?
স্বর্ণের মতো ঘোর রোদলাগা মুকুট
শুধু তোমাকেই মানায়। কথায় কথায়
সর্বোপরি দায় থেকে যায় -!!
তানিম এহসান
খড়-বিচালি-ঘাসে-গাছে আগুন জ্বলে, আগুন জ্বলে জলের তাপে,
আগুন জ্বলে বাঁশবাগানের মাথার উপর খুব পুরাতন একটা চাঁদে -
কাজলা দিদি একাত্তরে বীরাঙ্গনা খেতাব পরে হারিয়ে গেছে পাথর চাপায়,
সেইনা থেকে কন্যা-জায়া-জননীদের দিন কাটেতো রাত কাটেনা;
ঘুম আসেনা নুর হোসেনের বাবা মায়ের - চরকা কাটে মর্মজ্বালা,
আরো কত ছেলে-মেয়ে পাজর জুড়ে গর্ব নিয়ে ঘুমিয়ে গেছে,
কী শেখালে কাঁকন বালা
অমন করে,
চবিশ বছর পড়ল যেন
জ্বরের ঘোরে!
চোখে আঁধার, শরীর পোড়ে
মন উতালা
কেমন করে শুকনো চরে
ঝড় উঠালা?
নারীঃ
"অন্ধকার গুমট
গুমট বাস্তবতা
এরই নাম কি জীবন?
এর নাম ভালথাকা?"
বনফুলের নকশি-কাঁথা
এ যাবৎ কাল যত বনফুল
বনভূমি বাগিচায় নিসর্গে দেখেছি
তাদের তিনটি ঢেউয়ে ভাগ করে
আমি থামিয়ে রেখেছি, সবার দৃষ্টির অন্তরালে ...
দুধের মতো ধবল ফুলের হৃদয় এসে
লাল-নীল-কমলা ফুলের ঢেউগুলোকে
পুরোপুরি ঢেকে দিতে চাইলেও -
এক-একটি পৃথক ধারায়
তারা প্রকাশিতই থেকে গেল শেষপর্যন্ত :
যেন বা কোন আবরণ
সূচ সুতোয় সেলাই করে যাওয়া, জড়াবে ?
পৃথিবীর শীতের হাত, দুঃখ ছোঁবে না ;