নির্দিস্ট দিনের স্নিগ্ধ সকালে,
সাজানো শয্যায় এই হাস্পাতালে,
ভয়ে ভয়ে ইস্টনাম, হটাৎ নিঝুম,
ঔষধের সেই বোধহীন ক্লান্তির ঘুম।
আমার ভালোলাগে না এই বিপন্ন অস্থিরতা
আমার ভালোলাগে না এই বহুরূপী ভোরে গার্মেন্টস কর্মীদের কর্মমিছিল,
যে নারী দুধের শিশুকে খাবার না দিয়ে হাওয়ায় ধরেছে বাসের হাতল...
চক্রাকারে ঘুরে কেউ যদি ফিরে আসে
ধাঁধায়
তাকে বারণ করো না—
অন্তত বাস্তবতাটুকু বুঝে-ওঠার আগে
সেও নিয়ে আসতে পারে চায়ের পেয়ালায় ধরে
রাখা ফকফকা কিছু স্বপ্ন কিংবা শাদা-সমাধান
কেউ যদি না ফেরে, তাকে ফেরাতে যাবে না কারণ
দেহের প্রণোদনায় লুকিয়েছে অহংকার, ছায়াবাঁধা মন
খুব সহজেই হাসতে পারো
একটু সুখেই প্রাণ খোলে,
খুব সহজেই ভুলতে পারো
একটু নিজের স্বার্থ হলে।
তোমার কাছে ভালোবাসা
সাগর পারে বালুর ঘর,
ইচ্ছে হলেই সাজাও নিজে
ইচ্ছে হলেই অনাদর।
বিষণ্ণতার নামে আজ মামলা ঠুকে দেব
একাকীত্বের গলায় দড়ি পরিয়ে নগরীর প্রতিটি রাস্তায় ঘোরাবো
হতাশার মাথা ন্যাড়া করে তাতে আশার সিল মেরে দেব।
দুঃখের সাথে আজ আমার আড়ি,
সুখের সাথে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা বসব
কিভাবে সুখের চাহিদা ও যোগান সমান রাখা যায়,
কিভাবে সুখ আর দুঃখের ক্রসফায়ারে সুখ কালো পোশাকধারী হতে পারে।
[i]কবে যেন চলে গেছিস তুই, হিমঝরা শীতের শেষরাত্রি ভোর হয়ে গেছে। শুধু ফেলে রেখে গেছিস কিছু কমলা-গোলাপী নখরঞ্জনী, মরিচারঙের দাগলাগা ঘী-রঙের রুমাল, কোণাওঠা আয়না একটা আর আলতার একটা আধা-ফুরানো শিশি।
শিরোনাম:: 'অপঘাত'
মনন:: রেলে যত অপমৃত্যু।
লিখিত:: ৩১ অক্টোবর, ২০০৯।
জড় দেহ প্রাণহীন তবু বাহুভাজে
চোখে পড়ে বলিষ্ঠ পেশীময় রৌদ্রদগ্ধ ধ্রুবত্বকে
আধো কালোরং ঘর্মাক্ত পশমও
ঢেকে আছে লোহার পাথরে- ব্যথা কি সে পেল?
কত ঊর্ণনাভে মায়াবী আঁচলে মায়াবিনী মা
কোমল পনিরের মত গড়েছিল নরম শরীর,
একবারও কি স্মৃতির ট্রেনে সেই অমৃতস্বর ভেসে আসে নি!
অকস্মাৎ দেয়াল থেকে খসে পড়লো ছবি
ফ্রেম ভেঙে চারদিকে ছিটকে গেলো
টুকরো টুকরো কাঁচ এলোমেলো গন্তব্যে।
বর্শার ফলার মতো ইতস্তত:
আটকে থাকা কাঁচের বাঁধা পেরিয়ে,
সন্তর্পণে কিছু শো’পিসের চোখ এড়িয়ে
নামলো তিন যন্ত্রী―
একজন চিত্রকর আর দুজন কবি।
অবশ্য কিছুক্ষণ তাঁরা বিস্ময়ে নিঃশব্দ
জেল-মুক্ত কয়েদির মতো বুক ভরে
মুক্ত বাতাসের ঘ্রাণ শুষে নিলো
অনেক দিনের পরে!
নিপুণ বাদন ছেড়ে সোফায় এলিয়ে দেহ
গাছও কি স্বপ্ন দেখে ডালে বসে?
নাকি জিরিয়ে ছিল পাতায়—
জানতে চাও; জানতে দাও রসায়ন
দাঁড়ি-কমা শিখাও, নিঃসঙ্গতা... কোলন
আশাহত ব্যাকরণ
টুপটাপ শব্দ বাজে; বাজে না বৃষ্টি ও পাথর
লতাপাতা ছন্দে হাসে; হাসে হাওয়ার শহর
তুমি জড়তা তুলে নাও গাছে, প্ররোচনায়
জলের উষ্ণতা পাবে পাতায়, ভরা বর্ষায়
চেষ্টা করেও অনেকদিন কিছু লিখতে পারিনি আর আজ অনেকটা না চাইতেই পারলাম। কবিতা লেখা আমার কর্ম কিনা সে ব্যাপারে আমি বরাবরই সন্দিহান, তবু সুযোগমতো পেলে দুয়েকটা লিখতে ছাড়িনি। এটাও তেমনই একটা কবিতা, যেটা আদৌ কবিতা কিনা তাও আমি জানি না!