আজ সারা শহরে অবিরাম বৃষ্টি
শহুরে ভদ্র বৃষ্টি
চুপচাপ এসে চলে যায়
আমাদের জীবন থাকে বৃষ্টিহীন নিঃসঙ্গতায়...
আমাদের মধ্যবিত্ত প্রেম
কিছু সন্দেহ আর অবিশ্বাস
তবুও আমাদের ছোট সংসার,
বৃষ্টিও আজ কেমন যেন
আমাদের মাঝে হয় একাকার...
বৃষ্টি এবং আমরা মধ্যবিত্ত শহরে
ভীষণ একা আছি।
শিরোনাম:: 'হিরণ্ময়'
মনন:: আবহমান বাংলা।
লিখিত:: ১৭ মে ২০১১।
--- কবি মৃত্যুময়
সোনালি স্রোত রূপোলি আলোয় সোনাঝরা
বিকেলের রঙে হৃদয়ে রক্তসূর্য আঁকে- দেখি অপলক!
দীঘল জীবনজালে সুবর্ণ শরীরে এঁকেবেঁকে
স্বচ্ছ সলিলে মীণগণ অধরা অস্থির তবু আশা জাগে
জেলের মুমূর্ষু পালে বৈরাগী হাওয়া লাগে- দেখি সহাস্য তারে!
প্রাণহীন তরী সোনালি স্রোতে এলে অনন্ত যৌবনা, দিকহারা
ভেবেছি সেদিন, বড় বেশি দুখী আমি―
তুমি বলেছিলে, “এই শেষবার দেখা!”
তোমার দু’চোখে ছিল যতটুকু নীল
ছড়িয়ে দিয়েছি সুকেশী আঁধারে একা।
তোমার জন্যে আকুলতা একবুক
চোখের কিনারে বিধবা ব্যথার ছোপ
যতনে ভেবেছি এই বুঝি সব পাওয়া
মুক্তোর মতো বড় জ্বালাময়ী সুখ।
তোমার মুখোশে স্নিগ্ধতা সন্ধান―
করোটির রোদে ঘুঘু ডাকা নীরবতা
ধূসর মলিন মৃত তারাদের গান―
শব্দের স্নানে ভেসে যাওয়া খেরো খাতা।
বেজে ওঠে না-বলা গানের কলি, ছিঁড়ে যায় মননের তার
কংক্রিটে, পীচঢালা পথে পথে সারাক্ষণ আটকে থাকে পা
সমস্ত চরাচরে অদম্য কোলাহল অগণন সুর ভিন্নতার
ঘরপোড়া বাউল খোঁজে বসন, রুদ্রাক্ষের মালা, একতারা
মমতার চাদরে জড়িয়েছে সে সোনার অঙ্গ, সম্পর্ক সুর
জানে না পথের দিশা, মেঠোপথে নেচে চলে অজানা নূপুর।
পরিশ্রান্ত ভুলের উঠোনে ঢেউ খেলে সংসার সমুদ্র জল
দিকভ্রান্ত নাবিকের হাল কাঁপে বিরহের ঝড়ে অবেলায়
ভাষাহীন
_______________________
অমিতাভ দেব চৌধুরী
_______________________
________________________________
আমার নিজের কোনো ভাষা নেই,
আমি তাই প্রতিদিন তোমার ভাষার খোঁজে
রাতের আলখাল্লা আর দিনের পকেট চুরি করি ৷
চুরি করা পাপ ঠিক,কিন্তু ভাষাচুরি ?
ফুলচুরি চুরি নয় ,ভাষাচুরি তা-ই ৷
আমিও ডাকাত হই, কেননা আমার ভাষা নাই ৷
মাতৃভাষা ?তাকে যদি ভাষা বলে ধরি,
গতকাল রাতে যে হে মণিপুরী ছেলেটির
শিরোনাম:: 'সুরম্য'
মনন:: অবগত রাত্রি।
--- কবি মৃত্যুময়
রাত অবগত ছিল, সময়ে অসময়ে
নিরবতা এলে আঁধারে দেখেছিল
বিস্তীর্ণ সধবা জনপদ আর অঘুমন্ত পথ- ছুঁয়ে
নিরালা ল্যাম্পপোস্ট ছায়া খুঁজেছিল
পথিকের, পাশে অনভ্যস্ত সাধ-
ধুলোর মতো অদৃশ্য সব কিছু ফেলে;
আলেয়ার সমান্তরালে হেঁটে চলা সুদূর-
যে পথে দ্বিধাবৃক্ষ নিষ্ফলা আবেগহীন;
ঊষ্ণস্পর্শে তবু কোমল পালক মেলে
গাঢ় মাদকতা সাজায়ে নরম ঘাসে
বাতাস বদলে গেছে
এখন উড়ছি খুব
রঙিন পাতার মত শীতের শুষ্ক ত্বকে
মিশে যাবো, মাটি হবো বলে
কতটুকু আর
আদর রেখেছি রোমকূপে
জাগিয়েছি কত আর রাত
অনুশোচনায় পিঠ ফিরে
রোদে আর ঘামে একসাথে
কত আর
বানিয়েছি ভেজা বর্ষাকাল
জোয়ারে জেগেছে নদী
গৈরিক সম্পর্ক কাঁপে
তোমার গানে-
বুঝেছ বিস্মিত ঠোঁটে স্বাদ পুড়ে যায়।
হলুদ আসার আগে অর্ধেক রচিত দৃশ্যে
সহসা বানের জলে ভেসে যাবো, সাধ!
সোনার বেড়াল, তুমি
উৎসর্গ :
“এমন এক কবি যিনি সর্বোতভাবে কবি হ’তে চেয়েছিলেন। প্রতিদিন প্রতিমুহূর্তে কবি। দৈনন্দিন জীবনের অর্থহীনতম মুহূর্তেও। ভ্রমণে ও মননে, বাক্যে, ব্যবহারে, পত্ররচনায়। যখন কবিতা লিখছেন না বা লিখতে পারছেন না তখনও। যখন তিনি অসুস্থ, বা হতাশ, বা মনঃক্ষুণ্ণ, তখনও।”
কোকিল ডেকেই চলে মগডালে
কোকিলারা আসে না শিমুলতলে!
আজকাল কোকিলারা বড়োই সংসারী
ভাল্লাগে না কোকিলের বাউলেপনা স্বভাব
নির্মল বাতাসে বসন্তের গান পৌঁছে না হৃদয়কোণে
গাছে গাছে ওড়াওড়ি, দিনভর একটানা গান- আদিখ্যেতা
বরং কাকের কা কা ডাক অনেক মধুর, অনেক সুরেলা
ছিমছাম পরিপাটি বাসায় এলানো যায় ক্লান্ত দেহ
পরিশ্রান্ত দিনের শেষে আনন্দ প্রহর, পরিতৃপ্ত সঙ্গম
কোকিলের কি আছে সে মুরদ বানাতে বাসা!
শিরোনাম:: 'এক বিষাদ সন্ধ্যা নেমে আসুক বিষাদে'
মনন:: নাগরিক সন্ধ্যা যদি তার রূপ বদলায়।
এক বিষাদ সন্ধ্যা নেমে আসুক বিষাদে
ধূসর হবে না, হবে না ধূলিনির্ঝর;
অথচ পাতার মর্মর শব্দ থাকবে, শুকনো হলুদ
আভা বুনে গেঁথে যাবে শহর সরু পথ
ক্রিং ক্রিং আড়ষ্টে কুপোকাত হবে না বার্ধক্য
সোনালি মুখের শৈশব হাতে হেঁটে যাবে দিগন্তাবির ছুঁয়ে।
পাশে নদী থাকতে পারে, থাকতে পারে শীতল হাওয়াও!