:: ১ ::
মনের ভিতর বাস করে তোর
অসভ্য আর ইতর গোছের কদাকার এক আদিম মানব।
মনের গুহার গুহাচিত্রে আঁকতে থাকে
বিশ্রী হাতে কুৎসিত সব দৈত্য দানব।
:: ২ ::
মাঝরাত্তির। অমাবস্যা।
কালো কালির রাত।
নিজেই নিজের টিপতে গলা
নিশপিশ করে হাত।
:: ৩ ::
ঠকিয়ে তোকে ভীষণ মজা!
ভাবতে গিয়ে একাই হাসি।
এতদিনেও বুঝলি না তুই
তোকে আমি ভালবাসিনা; খারাপ বাসি।
মায়ামৃগের সন্ধানে একদিন অভয়ারণ্যে গিয়েছিলাম
এক হাতে ছিলো উদ্যত ধনুক অন্য হাতে তীর
পাকা শিকারীর বেশে ঘুরেফিরে সারা বন
অবশেষে যখন কংসের তীরে পৌঁছলাম
সন্ধ্যার আবির রাঙালো আকাশ, নদীজলে ক্লান্ত ঢেউ
আরেকটি দিবসের অপেক্ষায় রইলো উদ্ভ্রান্ত মন
আমার দুচোখে স্মৃতি দগ্ধময় রাত্রির প্রহর।
তুমি বলেছিলে- এই হাতে সূর্যোদয় হবে একদিন
দিনের আলোয় দেখাবে ভালোবাসার যাতো পথ
অমিতাভ দেব চৌধুরী
শেষে ফিরে আসি নিজেরই ঘরের দ্বারে
পৃথিবী তখন ঘন মেঘে অচেতন
আমার ফেরার পথে জাগে অনাদরে
একটি কুকুর---দেবতার আয়োজন ?
দুর্গেশ্বরী জেনে গেছি
তোমার সেই সুরক্ষিত দুর্গ কপাট,
কোথায় আক্রান্ত হলে
বিনা যুদ্ধে হয়ে যায় হাট।
জেনে গেছি সব-ই গেছি জেনে,
কেনো যে বিব্রত দ্বার-রক্ষী
পথ ছাড়ে পরাভব মেনে।
দিদি, আপনার চোখের দিকে তাকালে স্থির হয়ে যাই
কিছু বলার আগে লুকিয়ে ফেলি চোখের নীরব ভাষা
চোখে চোখ না-রেখে ঠিক সামনে তাকাই, আর বলি—
আপনার দু’টি চোখ না-ঘুমোতে, না-ঘুমোতে এমন যে
চোখের নিচ আরো কালো হয়ে যাচ্ছে!
সাক্ষাতে, ফোনালাপে কতবার বলেছি নিয়মিত ঘুমান
দিদি, আমার কথা রাখেনি; বারবার বলছে : মাঝে-
মধ্যে ঘুমের সমস্যা দীর্ঘ দিনের, এই আর এমন কি…
সময়ে সব ঠিক হয়ে যাবে
মানুষটা পৃথিবীর সব দুঃখ ধারণ করে
নীলকন্ঠ হবে বলে কোথায় যে হারিয়ে গিয়েছিলো,
একদিন সে ফিরে এলো কবি হয়ে,
যদিও একটাও কবিতা সে ল্যাখে নাই,
তবুও লোকে তাকে কবি বলেই জানে।
আমাদের যতোরকম দুঃখ আছে
ছোট, বড়, মাঝারি,
আমরা তাকে জমা দিয়ে আসি,
সে তাতে ফোটায় ফুল,
জুঁই, জবা, শিউলী -
যেমন তার সাধ হয়।
তার সর্বাঙ্গে কাঁটা ফুটে আছে,
সে বিষে নীল হয়ে আছে,
সে একটাও ল্যাখে নাই কবিতা,
ধরো, আমার সাথে তোমার আজই শেষ দেখা?
- তাহলে জোছনার জল ভেঙ্গে বৃষ্টি নামবেনা পৃথিবীর কোনো বরষায়, মাটির শরীরে থাকবেনা আবাদের মাঠ অথবা বিপনী বিতানে কোনো চোখ জুড়ানো পন্য।
যদি ফিরিয়ে দিতে বলি ভবঘুরে বিকেল?
- বইবেনা যুগল নদী মনি-মালা। বাঁশি বাজবেনা চন্দ্রস্নাত এই শহরে।
মনে করো, এখানেই থেমে গেল আমাদের হেঁটে চলা?
- কবিতার স্বচ্ছ ডানা আমি ভেঙ্গে দেব খানখান, তাতে বিরক্ত হবেন স্বয়ং ঈশ্বর।
ঘুমের ভেতর স্বপ্নকে মধুকর মনে হয়
স্বপ্নের ভেতর কখনও হাসি, কখনও কাঁদি
মাঝরাতে গভীর ঘুম বিশ্রাম পায়!
ঘুম ভাঙলে সিগ্রেটের ধোঁয়া অন্ধকারকে
জিজ্ঞেস করে— কোল বালিশের পাশে
কেন দাঁড়িয়ে থাকে শেষ রাত্রির একাকীত্ব!...
স্বপ্ন জানে না, আমার চোখে জমা কত অজানা ভয়
একাকীত্ব জানে কী? চোখের গভীরতা কাকে তাড়ায়!
স্বপ্নগুলো আকাশছোঁয়া মেঘের ভিড়ে লুকায় কেন?
উড়ছে ধুলো, উড়ছে তুলো দূর দিগন্তে বাষ্প যেন
শৈশবেরই উঠোন থেকে কৈশোরেরই মেঠোপথে
গোত্তা-খাওয়া উড়ান ঘুড়ি জীবনযাপন উল্টোরথে
ভুলছে স্বনন, ভাঙছে মনন ঝর্ণা-পায়ের বহতা স্রোত
লক্ষ্যভেদী চলার আবেগ গড়তে অমোঘ সুখের তাবৎ।
লক্ষ্য যেন দূর আলেয়া আঁধার কালো বনের ধারে
পেয়ে তারে মুক্তাবাসে খুঁজি শুধুই কারাগারে
অমিতাভ দেব চৌধুরী
যে কোনো সৃষ্টির মূল আসলে বিচ্ছেদ ৷
তোমার সৃষ্টির দিকে চেয়ে চেয়ে দেখি আর ভাবি
জন্ম না হলে তো আমি তোমারই দেহের টুকরো থাকতাম হয়ে
যেভাবে নৌকোর আবিষ্কার হবার অনেক আগে
যেসব ভাবি নাবিক আর মাঝি জন্ম নিয়েছিল,
তাদের ইচ্ছারা ছিল জলেরই শরীরে উড়ো জল
আমার কবিতা,তাই,সেইসব শব্দের খেলা
যারা ,একদা আমার ছিল ৷ তোমার এখন ৷