কতোটা পথ তার হেঁটে যেতে হবে
মানুষকে তুমি মানুষ বলার আগে
কতোটা সাগর বলো পাড়ি দিতে হবে
গাঙচিল তার বাসা গড়তে বেলাতে
কতোটা কামান গোলা ছুঁড়তে হবে
চিরতরে তাকে বন্ধ করতে
বাতাসে ভাসছে ঐ প্রশ্ন শোনো
উত্তর সব আজ হবে দিয়ে যেতে।।
কতোটা বছর আর থাকবে পাহাড়
আসবে সময় তার সাগরে ফেরার
কতোটা বছর আর বাঁচবে মানুষ
শৃঙ্খল খুলে হতে মুক্ত ফানুস
কতোটা বার তুমি ফেরাবে মুখ
পুরনো ভবন, বিশদ বিবরণে প্রাগযুগ
হাত পাতলেই কাচের তৃষ্ণা জমে জানালায়
এই তো কাছাকাছি; তবুও প্রস্তুত নকশাকারী
সযত্নের রেখা মাড়িয়ে হিসেবের শেষসপ্তাহ
অভিশপ্ত আয়ুরেখায় পিংককালারের নাচন
মিশে আছে, মিশে থাকে রচনাশৈলী...
মধ্যরাতের গভীরতা ফালি ফালি
নিবৃত্ত নয়ন, তার পাশ ঘিরে
__________________
হামিদা আখতার
প্রতিটি দিন-ই হোক, একটি সুন্দর দিন
চাই বা না চাই তেমন করে, তুমি আছ; আর
তুমি থাকা মানেই রোদ্দুর হাত বোলাচ্ছে
উঠান ভর্তি শীতে, বাসা বাঁধছে মাকড়শা-
পাঁজরে দড়ি বিঁধছে শক্ত হয়ে
দড়ি খুলে যাচ্ছে!
তুমি আছ বলে ক্ষুধা হচ্ছে, তৃষ্ণা পাচ্ছে
বোতল ভেঙে উড়তে চাচ্ছে পাখি-
অকেজো তালা খোলার জন্যে
তৈরি হচ্ছে কেজো নকল চাবি।
তুমি আছ বলেই মাঝারাত্রে
শীত কাতুরে গাছের ছায়ায়
হাঁটতে পারে অনাহারী চাঁদ
গানের খাতায় ঢুকে যাওয়া যাচ্ছে
বৃত্তের বাইরে যেতে নেই
সেখানে ওৎ পেতে রয় বিপদ,
রাবণের মতো ছলে বলে প্রলোভনে
সেও নিতে চায় দখল।
তবু কিছু নাগরিক বনসাই
বনবাসে গিয়ে বনকেই ভালোবেসে ফেলে
নগরের নিরাপদ ওম ভুলে গিয়ে
বনস্পতি জীবনের লোভে
সেখানেই গড়ে তোলে
কবিতার মোহময় কুটিরশিল্প সব।
আমার শহরে বসন্ত মাস
আকাশে আজ হলুদ পাখি
আমার এখানে রোদের নদীতে
ফাল্গুনী মেয়ের শলমা সখী
আকাশ চূড়ায় উড়ছে কারো রঙ্গীন বেলুন ইচ্ছে ঘুড়ি
এই বিকেলে তোমায় দিলাম তোমার প্রিয়ার কাঁচের চুড়ি
তোমার সকাল আমার সাঁঝে নাক ছাবিটার মুক্তো খাঁজে
জরির মতো সবুজ মতি তারার চোখে তোমার ছবি
শীতার্ত হৃদয়
(কাপুরুষ)
শীতের কাঁপনে ঝড়ছে পাতা, নেই তো ফুলের তাজ,
রুগ্ন বলে করছ হেলা, চাওনা ফিরে আজ।
বসন্ত যখন আসবে ফিরে, ভরবে পাতায় ডাল,
আসবে নিতে ফুলের সুবাস, ভুলতে মনের কাল ।
দুই চোখ দেখে যাকে অনুভবে রাখে তাকে
অথবা চোখের আড়ালেই মনের আড়াল
এ রকম সত্যের মুখোমুখি যখন কাটছে রাত
স্বপ্নেরা উড়ায় ঘুড়ি ঐ দূরের নীলাকাশে
যাপিত দিন কখনো যায় বাড়ি মুক্ত ডানা মেলে।
যাদের ফোন করার কথা ছিলো
তারা ভুলে গেছে নম্বর অথবা হারিয়েছে
যদের ফোন করেছি বারবার
তারাও ভাবেনি ফিরতি কল করার
তাই জমানো কথারা কাঁদে একাকীত্বের আঁধারে
স্মৃতিরা ঘুমায় ক্লান্ত বালিশে মাথা পেতে।
অবশেষে তোর চোখের আদর খুঁজতে আসা
রহস্যফল একাকী খুলে যায় রাত্রির ভেতর!
সোজাসুজি মার্জনা করলে শব্দদেহে শতভাগ
নিশ্চয়তা পাবে, বাকিটুকু ভীত, স্বার্থপর
অপ্রস্তুত দৃষ্টি কিছু লিখছেন? এই হল ম্যাপ
চোখে খুঁজে দেখুন, পুরো পৃথিবীর পথ পাবেন
এইপথ বৃষ্টিবর্ষা কিছুই খুঁজে না, খুঁজে কেবল
মর্মবেদনা
দীর্ঘশ্বাস স্বপ্নে-গন্ধে অন্ধকারের গল্প বুনে যায়!
মুরতাজা তারিন
অনেক দুঃখের নদী পাড়ি দিয়ে তারপরে কবি
তারপর স্মৃতিতে শঙ্খচিল--একলা উড়াল
ঘরে ফেরা ছোট ছোট পায়ে
কেউ নেই, কেউ অপেক্ষা করে না--তারপরও ঘরে ফেরা
একটা রূপের বাক্সে বন্দী নির্জন রূপোলী প্রেম
কতকাল কেউ বলে না:
তোমারই অপেক্ষায় ছিলাম সারাটা জীবন
তোমাকেই ভালোবাসি সবচেয়ে বেশী
ঘরে ফিরি, তারপর স্মৃতির জানালা দিয়ে
দুর্গম পথ ধরে হেঁটে আসা স্বপ্নগুলো, কষ্টগুলোকে আঁকড়ে ধরে পৌছাতে চায়
ঘরের ঐ ছোট্ট বিছানায়, যেখানে অবিন্যস্তভাবে ছড়ানো তোমার এলোকেশী চুল;
সন্ত্রস্তভাবে তারা গুটি গুটি পায়ে আগানোর অব্যর্থ চেষ্টা চালায়, কিন্তু ব্যর্থ হয়।
ব্যর্থ তো হবেই, কারণ এখানে জড়িয়ে রয়েছে কত শত সহস্র ব্যথাতুর সব ভুল।
বৃষ্টিস্নাত চোখের পলকে ঝাপসা দৃষ্টিতে দেখেছিলাম আমাদের ভবিষ্যত, আকাশের